বাঙ্গালীর মুক্তির ইতিহাস ঐতিহ্যের ওপর জঙ্গি হামলা এবং বিএনপি-জামায়াতের হিংস্র থাবা

বাআ ॥ ২০০৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারির সংবাদে দেখা যায়, মহান একুশে পালনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে তান্ডব চালিয়েছে বিএনপি-জামায়াত ক্যাডাররা। কোথাও কোথাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তার অজুহাতে সাধারণ মানুষদের শহিদ মিনারে যেতে দেয়নি। নীলফামারীতে শহিদ মিনার গুড়িয়ে দিয়েছে জিয়া পরিষদেন নেতাকর্মীরা। নোয়াখালীতে মাইক কেড়ে নিয়ে উগ্রবাদী বক্তব্য দেয় সন্ত্রাসীরা। গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় প্রশাসনের প্রভাতফেরিতেও বাধা দেয় বিএনপির ক্যাডাররা। খুলনায় পুলিশি বাধার মুখে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।

২০০৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারির খবরে জানা যায়, ফরিদপুর জেলার নগরকান্দায় ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে এলাকাবাসীর তৈরি করা অস্থায়ী শহিদ মিনার ভেঙ্গে ফেলেছে জামায়াত নেতারা। ফলে ২০০৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারেনি এলাকাবাসী। একুশের প্রভাতে শিক্ষার্থীরা ও এলাকাবাসী ফুল দেওয়ার জন্য গিয়ে দেখে যে শহিদ মিনারটি নেই। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে নস্যাৎ করার জন্য জামায়াতের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তখন সহযোগিতা করেছে বিএনপি নেতারা। এমনকি রাষ্ট্রীয়ভাবেও বিএনপি সরকার এসব করার জন্য মদত দিয়েছে জামায়াতকে।

২০০৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারির খবরে আরো জানা যায়, জামায়াতকে খুশি করার জন্য নাটোরে ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে ভাষা শহিদদের স্মরণে কোন অনুষ্ঠান আয়োজন করতে দেয়নি বিএনপি। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ফজলুল হক পটলের এলাকা নাটোরের লালপুরে বিএনপি নিজেও অমর একুশে পালন করেনি, এমনকি বিএনপির অফিসেও ওড়েনি অর্ধনমিত জাতীয় পতাকা।

২০০৬ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির খবরে জানা যায়, কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে একুশের সঙ্গীতের পরিবর্তে সমবেতভাবে শিবিরের দলীয় গান গেয়ে ২১শে ফেব্রুয়ারি উদযাপন করেছে ছাত্রশিবির। অমর একুশে পালনের নামে তারা জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং রাজাকার প্রধান গোলাম আযমকে একুশে পদক দেওয়ার দাবিতে ক্যাম্পাসে শোভাযাত্রা ও হৈহুল্লোড় করে গণউৎপাত সৃষ্টি করে। লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে বহিরাগতদের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে শো-ডাউন দেয় ছাত্রশিবির, ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকেরা ভয়ে আতঙ্কিত হয় এবং মহান একুশের ভাবগাম্ভীর্য ভূলুণ্ঠিত হয়।

২০০৫ সালের ২৩ আগস্টের পত্রিকায় গোয়েন্দাদের বরাতে জানা যায়, ২০০৪ সালে দেশের চার জেলায় বাংলা ভাইয়ের ক্যাডারদের হাতে আওয়ামী লীগ ও সমমনা প্রায় ১৭ ব্যক্তি খুন ও শত শত মানুষ নির্যাতনের শিকার হলে দেশের গণমাধ্যমে এসব নৃশংস তথ্য উঠে আসে। এরপর জামায়াত আমির নিজামী বলে যে, বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি। খুনি ও জঙ্গি বাংলা ভাইকে বাঁচানোর জন্য ৭১-এর খুনি ও জাাময়াত আমির নিজামীর এরকম অপচেষ্টার কারণ হলো- সাবেক শিবির ক্যাডার বাংলা ভাইকে আলাদা সংগঠনের ব্যানারে সন্ত্রাস করার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল জামায়াতের সর্বোচ্চ মহলের সংঘবদ্ধ সিদ্ধান্তে। বাংলা ভাইকে দিয়ে জঙ্গিবাদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী এবং প্রগতিশীল শিক্ষক-বিচারক-সাংবাদিক-সংস্কৃতি কর্মীদের হত্যার পরিকল্পনাটি ছিল নিজামী-মুজাহিদদেরই।

Leave a Reply

Your email address will not be published.