প্রথমবারের মতো পর্দা উঠলো সামিট ও এক্সপোর

প্রশান্তি ডেক্স ॥ দেশে প্রথমবারের মতো পর্দা উঠলো জেসিআই বাংলাদেশ আয়োজিত স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট ও এক্সপোর। রাজধানীর কুড়িলের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় গত শুক্রবার (৯ জুন) সকালে দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনটির উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রা ও স্মার্ট যুগের অপার সম্ভাবনাকে সুদৃঢ় করার প্রচেষ্টায় বিশ্বব্যাপী তরুণদের নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জেসিআই বাংলাদেশের আয়োজনে ও এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআইয়ের সহযোগিতায় গত শুক্রবার ও আজ শনিবার চলবে ‘জেসিআই স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট, এক্সপো ও সিওয়াইই অ্যাওয়ার্ড ২০২৩’ আয়োজন।

সকাল সাড়ে ৯টায় নিবন্ধনের মাধ্যমে শুরু হয় দর্শনার্থীদের প্রবেশ। তারপর উদ্বোধন করা হয় সামিট ও এক্সপোর। অনুষ্ঠানে ইভেন্টের পরিচালক ও জেসিআই বাংলাদেশের ডেপুটি ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ইমরান কাদির বলেন, দেশে ২২ লাখ তরুণ চাকরির বাজারে প্রবেশ করার জন্য তৈরি হচ্ছে। তরুণদের সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে জেসিআই তাদের নিয়েই কাজ করছে। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশের যে লক্ষ্য নিয়ে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে, জেসিআই তার সহযোগী হতে চায়।

এটুআই প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী জানান, যেখানে ২০০৮ সালে সরকারের ডিজিটাল সেবা ছিল প্রায় শূন্য, ২০২৩ সালে এসে এখন ২ হাজারের বেশি সেবা দেওয়া হচ্ছে ডিজিটাল মাধ্যমে। ২০২৩ সালে ইন্টারনেট পেনিট্রেশনের হার খুবই উচ্চমাত্রায়।

ডিজিটাল বাংলাদেশের চারটি মূল বিষয় স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট সোসাইটি ও স্মার্ট ইকোনমি তুলে ধরে তিনি বলেন, এগুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান দিচ্ছেন তরুণরা। আর সেগুলো পাওয়া যাচ্ছে সবই হাতের মুঠোয়। ভবিষ্যতের চাকরির বাজার পরিবর্তন হচ্ছে। সেটির জন্য নতুন নতুন দক্ষতা তৈরির ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

প্রধান অতিথি সালমান এফ রহমান বলেন, প্রযুক্তি খুবই দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সেটার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন। এখন যেমন বিশ্বে একটা বড় চ্যালেঞ্জ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স। এটি এখন এমন সব কাজ করছে, যা বিশ্বকে একটা চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে। এসব নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। টেকনোলজির আরেকটা বড় ধরনের অগ্রগতি হবে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং। যেটা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন কাজ করছে। এখন বাংলাদেশ সামনের দিনের প্রযুক্তি নিয়ে কী, কীভাবে কাজ করতে পারে, সেটা নিয়ে সরকার একটা নীতিমালা করে দিতে পারে। বেসরকারি বিভিন্ন খাতকে এসব নিয়ে কাজ করতে সুযোগ করে দিতে পারে।

তিনি বলেন, বেসিস প্রেসিডেন্ট বাজেটে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যে ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপের বিষয়টি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন, তাতে আমিও একমত। বাজেটে যেটা হয়েছে সেটা ভুল-বোঝাবুঝি। এটা চূড়ান্ত বাজেটে থাকবে না। হয়তো সেটা শতভাগ করতে পারবো না। তবে আমি এতটুকু বলতে পারি, বাজেটে যেসব সমস্যার কথা উঠে এসেছে, সেগুলো আমরা সলভ করবো।

প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন ঘোষণা করার পর স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে প্রথম সামিট করছে জেসিআই। তিনি বলেন, ব্যবসা করবেন শুধু মুনাফার জন্য নয়, সমস্যার সমাধান নিতে আসতে হবে। এটি করতে পারলে করবেন দেখবেন সারা বিশ্বে আপনি মর্যাদা পাবেন। আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশ এমন ১০টা স্টার্টআপ পাবে, যারা কয়েক মিলিয়ন ডলারের স্টার্টআপ হবে। মিলিয়ন ডলারের স্টার্টআপ হতে বিকাশের লেগেছে ১২ বছর, নগদের ৩ বছর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হলে মেধাবী সাহসী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে এসে সমস্যার সমাধান করতে হবে। তবেই দেশ থেকে নেতৃত্বদানকারী স্টার্টআপ উঠে আসবে।

এ ছাড়া এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন, এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ব্যারিস্টার সামির সাত্তার, ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার, জেসিআই বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেল নিয়াজ মোর্শেদ এলিট, জেসিআই বাংলাদেশের ২০২৩-এর ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক ভূঁইয়া, বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহিদুল্লাহ আজীম, এসিআই লজিস্টিকস লিমিটেডের (স্বপ্ন) বিজনেস ডিরেক্টর সোহেল তানভীর খান বক্তব্য দেন।

আয়োজনে সহযোগিতায় রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠন বেসিস, পোশাকশিল্পের সংগঠন বিজিএমইএ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ডেইলি স্টার, এটুআই, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং ইউএনডিপি।

জেসিআই স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট, এক্সপো ও সিওয়াইই অ্যাওয়ার্ড ২০২৩-এর সব আপডেট জানা যাবে www.jcisummit.com এই ঠিকানায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.