আমু ভাই কথার ছলে সংলাপের কথা বলেছেন: ওবায়দুল কাদের

প্রশান্তি ডেক্স ॥ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেছিলেন, বিএনপির সঙ্গে মুখোমুখি বসে আলোচনা করে দেখতে চাই। প্রয়োজনে অতীতের মতো জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের মধ্যস্থতায়ও সেই আলোচনা হতে পারে। কথার ছলে তিনি কথাগুলো বলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আপাতত সংলাপ নিয়ে ভাবছে না আওয়ামী লীগ।

গত বৃহস্পতিবার (৮ জুন) ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, কথার ছলে আমু ভাই সংলাপের কথা বলেছেন। এই নিয়ে বিএনপির জিহ্বায় জল এসেছে। আপাতত এ নিয়ে আওয়ামী লীগ ভাবছে না।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব ভাবছেন, আমরা তাদের সংলাপে ডাকবো। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য নিরপেক্ষ লোক খুজে বের করুন, তারপর দেখা যাবে। এ তত্ত্বাবধায়ক মরে গেছে। মরা কিছুকে জীবিত করার চেষ্টা করবেন না। আমরা মারিনি। আদালতের রায়ে মরে গেছে। ফখরুল সাহেব, আপনি কেন বারবার আমাদের অপবাদ দেন? আমি আপনাকে সতর্ক করে দিচ্ছি।

সংলাপ নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপাতত আমরা ভাবছি না। ভাববো কিনা পরে দেখা যাবে। আপাতত আপনাদের সংলাপের মুলা ঝুলিয়ে টেবিলে বসাবো! গতবারের কথা আমাদের মনে আছে। একবার না, দুইবার বসেছি। রেজাল্ট কী? জগাখিচুড়ি।

তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) নালিশ করে নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে কী পেয়েছে? ভিসানীতি। এতে আওয়ামী লীগের ভীত হওয়ার কিছু নেই। কে কাকে ভিসা দেবে, এটা তাদের ব্যাপার। আমরা আমাদের দেশে কাকে ভিসা দেবো, কাকে দেবো না, সেটা আমাদের ব্যাপার।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা করবে, বাধা দেবে, তাদের বিরুদ্ধে ভিসানীতি আরোপ করা হবে। এখন (বিএনপির) নেতাদের গলা শুকিয়ে গেছে। বিদেশিরা চায় ফ্রি ফেয়ার নির্বাচন। বিএনপি চায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এটি পৃথিবীর কোন দেশে আছে?

বিএনপি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘তিন জায়গা থেকে নমিনেশন বিক্রি করেছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, গতবারের মতো এবারও কি নমিনেশন বাণিজ্য করার জন্যই এত খেলা শুরু করেছে? আবারও কি সেদিন আসবে?

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র গিলে খেয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা গিলে খেয়েছে। এরা মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ গিলে খেয়েছে। এদের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। এরা যদি ক্ষমতা ফিরে পায়, বিএনপি নামের বিষধর সাপ গোটা দেশ গিলে খাবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনারা নিয়মের মধ্যে থাকুন, আমাদের শপথে থাকুন। আমাদের আবারও ৭ মার্চের শপথ নিতে হবে।

বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা জনগণকে বলেছি, আপনারা সময় দিন। ১০-১৫টা দিন সময় দিন। সব ঠিক হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যার ওপর ভরসা রাখুন।

নতুন ভোটারদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের তরুণ সমাজ, এবার তোমরা যারা প্রথমবার ভোট দেবে, তোমরা স্মার্ট বাংলাদেশের পক্ষে ভোটটা দেবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

এদিকে, সমাবেশে বিশৃঙ্খলার মধ্যে নেতাকর্মীদের মধ্যে দুই দফা চেয়ার ছোড়াছুড়ি করতে দেখা যায়। পরে কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.