এনআইডি সংশোধন প্রক্রিয়া সহজ হচ্ছে

প্রশান্তি ডেক্স ॥ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন প্রক্রিয়া সহজ হচ্ছে। এনআইডির তথ্য সংশোধনের ধরন অনুযায়ী কী কী দলিলাদি দিতে হবে, তা সুনির্দিষ্ট করা হচ্ছে। এনআইডির তথ্য সংশোধনে নির্বাচন কমিশনের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ইসির কেন্দ্রীয় ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা কোন পর্যায়ের তথ্য সংশোধন অনুমোদন দিতে পারবেন, তা সুনির্দিষ্ট করা হচ্ছে। তবে কত দিনের মধ্যে আবেদন নিষ্পত্তি করা হবে, সে বিষয়ে বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি।

জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরের (এসওপি) খসড়া চূড়ান্ত করেছে। গত বৃহস্পতিবার (৮ জুন) নির্বাচন কমিশনের এক সভায় তা উপস্থাপন করা হয়। এ ছাড়া সভায় সদ্য শূন্য হওয়া চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হয়। প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করার বিষয়টিও সভায় তোলা হয়েছে।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খানের নেতৃত্বে ‘জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ’ কমিটির সভায় এসওপি চূড়ান্ত করা হয়।

এনআইডি অনুবিভাগ সূত্র জানায়, প্রতি মাসে সারা দেশে গড়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনে এক লক্ষাধিক আবেদন পড়ে। এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার আবেদন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল। বর্তমানে এ সংখ্যা আরও বেড়েছে।

তথ্য সংশোধনে যে ধরনের দলিলাদি লাগবে:  এসওপি সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্রধারীর নিজের নাম, বাবার নাম ও মায়ের নামের মূল অংশ ঠিক রেখে আংশিক পরিবর্তন, তিন বছর পর্যন্ত বয়স সংশোধন, জন্মস্থান, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশাসহ ১৭ ধরনের তথ্য সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করতে পারবেন উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা। এ ধরনের তথ্য সংশোধনকে ‘ক’ ক্যাটাগরি বলে আখ্যায়িত করা হবে। আঙ্গুলের ছাপ যুক্ত করা, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন, ধর্ম ও লিঙ্গ পরিবর্তনও ‘ক’ ক্যাটাগরিতে পড়বে।

এসওপিতে বাবা বা মায়ের নামের আংশিক বা আমূল পরিবর্তনের ক্ষমতা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের দেওয়া হচ্ছে। আগে এ ক্ষমতা ছিল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের। এ ধরনের সংশোধনকে বিদ্যমান ‘গ’ ক্যাটাগরি থেকে নামিয়ে ‘খ’ ক্যাটাগরি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ সাত বছর ও অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাঁচ বছর বয়স সংশোধনের ক্ষমতা পাচ্ছেন। এত দিন অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের কোনও এখতিয়ার ছিল না। স্থায়ী ঠিকানা সংশোধন, ছবি ও আঙ্গুলের ছাপ পরিবর্তনের অনুমোদন দেওয়ার ক্ষমতা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে দেওয়া হচ্ছে।

জাতীয় পরিচয়পত্রধারীর পুরো নাম পরিবর্তনের বিষয়টি আরও সহজ করা হয়েছে। এ ধরনের সংশোধন ‘গ’ ক্যাটাগরি হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। এখন এটি রয়েছে ‘ঘ’ ক্যাটাগরিতে। এ ধরনের সংশোধনের ক্ষমতা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে দেওয়া হচ্ছে।

প্রবাসী ভোটার: প্রবাসীদের ভোটার করার পদ্ধতি-সংক্রান্ত এসওপি সভায় তোলা হচ্ছে। প্রবাসীদের ভোটার করার ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্বাচন কমিশনের সহযোগী হিসেবে রাখা হয়েছে। অপর দিকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি ও দুবাইয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস-কনস্যুলেটের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করার কার্যক্রম চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.