প্রশান্তি ডেক্স॥ রাজধানীতে একই দিনে আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী ও ভ্রাত্রিপ্রতিম সংগঠন এবং বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে গণপরিবহন চলচল নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে। গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) দুই দলের সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও একদিন পিছিয়ে তা গত শুক্রবার (২৮ জুলাই) করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস গত বৃহস্পতিবার ঢাকার রাস্তায় গাড়ির চাপ কম দেখা গেছে। গত শুক্রবার ছুটির দিনে বড় দুটি সমাবেশ থাকায় যানবাহন কেমন চলবে, তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন অনেকেই। তবে বাস মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, এদিন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করবে গণপরিবহন।
গত শুক্রবার নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ এবং বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের শান্তি সমাবেশ হবে। এই কর্মসূচিকে ঘিরে সহিংসতার আশঙ্কা উড়িয়ে দিলেও বাস চলাচল করবে কিনা, তা নিয়ে যাত্রী-সাধারণের শঙ্কা কাটছে না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকার প্রবেশ পথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তল্লাশির কারণে অতীতে যানজট তৈরি হতে দেখা গেছে। গত শুক্রবারের সমাবেশকে ঘিরেও একই পরিস্থিতি হতে পারে। এর আগে রাজধানীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপির পাল্টা-পাল্টি সমাবেশের দিনেও গণপরিবহন তুলনামূলক কম চলেছে। গত শুক্রবারও হয়তো তার ব্যতিক্রম হয়নি।
পল্টন থেকে উত্তরা যাওয়ার জন্য গাড়ির জন্য প্রেসক্লাবের সামনে অপেক্ষা করা আতাউর রহমান বলেন, ‘অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ রাস্তায় বাস চলাচল কম ছিল। সেজন্য গাড়িতে উঠতে ভোগান্তিতে পড়েছেন আমার মতো অনেকে। গত শুক্রবার বাস আরও কম চলে কিনা, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। কারণ, আমার তো সেই উত্তরা থেকে পল্টনে আসতে হবে। এখানেই আমার অফিস।’
আতাউরের মতো আরও কয়েকজন একই ধরনের শঙ্কার কথা জানিয়ে বলেছেন, দেশের বড় দুই দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ একই দিনে হওয়ায় সবাই আতঙ্কে আছেন। এও বলেছেন, তারা কেউই সংঘাত চান না। কিন্তু সাধারণ মানুষ তো ভোগান্তির শিকার হয়।
জানা গেছে, এরইমধ্যে কিশোরগঞ্জসহ দুই-একটি জেলা থেকে রাজধানীতে চলাচল করা বাস বন্ধ রয়েছে। তবে বাস মালিক সমিতি নেতাদের দাবি, বাস বন্ধ রাখার কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তারপরও ভাংচুরের আশঙ্কায় ঢাকায় বাস কম চলতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গত বুধবার রাতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব ও ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘সমাবেশকে কেন্দ্র করে বাস বন্ধ রাখার কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলবে। যদি বিএনপি গাড়ি ভাংচুর করে, তাহলে তো মালিকরা ভয়ে বন্ধ রাখবেন।’
গত বৃহস্পতিবার রাতেও একই ধরনের কথা বলেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ ও ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহম্মেদ সবুর। তবে তিনি এও বলেছেন, ‘নির্দেশনা না থাকলেও ভাংচুর বা পোড়ানোর আশঙ্কায় বাস বন্ধ রাখতে পারেন কোনও কোনও মালিক। এটা মালিকের সিদ্ধান্তের বিষয়, আমাদের কিছু করার নেই। অতীতে এই ধরনের কর্মসূচির সময় এমন ঘটনা ঘটেছে।’