সিভিল সার্জনকে ওএসডি; করোনা পরীক্ষার আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ: দুদকের চার্জশিট

প্রশান্তি ডেক্স॥করোনা পরীক্ষার দুই কোটি ৬১ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ ও সাবেক সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে দুদক। চার্জশিট দাখিলের পর খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদকে স্বাস্থ্য অধিদফতরে ওএসডি করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আলমগীর কবীর স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে তাকে ওএসডি করা হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই সিভিল সার্জনসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে করোনা পরীক্ষার ফির দুই কোটি ৬১ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক খন্দকার কামরুজ্জামান এ চার্জশিট দাখিল করেন।

প্রজ্ঞাপনে সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদকে স্বাস্থ্য অধিদফতরে ওএসডি এবং আইএইচটি’র অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়নের জন্য তার চাকরি স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে ন্যস্ত করার আদেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। অন্যথায় ষষ্ঠ কর্মদিবসে বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিক অব্যাহতি বা স্ট্যান্ড রিলিজ মর্মে গণ্য হবেন। একই প্রজ্ঞাপনে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. মো. সবিজুর রহমানকে খুলনার নতুন সিভিল সার্জন হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

মামলার চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন খুলনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. এস এম মুরাদ হোসেন, সাময়িক বরখাস্ত থাকা মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) প্রকাশ কুমার দাস, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) মো. রওশন আলী এবং ক্যাশিয়ার তপতী সরকার। এ ছাড়া ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বর্তমানে গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

দুদক জানায়, খুলনা জেনারেল হাসপাতালে বিদেশগামী যাত্রী ও সাধারণ কোভিড-১৯ রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে পাঠানো হতো। তবে ল্যাবে যে পরিমাণ নমুনা পাঠানো হতো, তার থেকে রোগীর সংখ্যা কম দেখিয়ে টেস্টের ফির টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হতো। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত মোট ফি আদায় করা হয়েছিল চার কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার ১০০ টাকা। তবে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছিল এক কোটি ৬৮ লাখ ৪৬ হাজার ৭০০ টাকা। বাকি দুই কোটি ৬১ লাখ ৪৪ হাজার ৪০০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা।

এ ঘটনায় দুদকের খুলনা বিভাগীয় কার্যালযয়ের উপ-সহকারী পরিচালক খন্দকার কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন কামরুজ্জামান।

Leave a Reply

Your email address will not be published.