ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ভরা বর্ষা মৌসুম সত্ত্বেও খরার কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা রোপা আমন চাষ ভীষণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আষাঢ় মাসে সামান্য বৃষ্টির পর শ্রাবণ মাসে তেমন বৃষ্টি হয়নি। মাঝেমধ্যে রোদ আর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হলেও তা চাষাবাদের জন্য যথেষ্ট নয়। এই বৃষ্টি কৃষকের খুব একটা কাজে আসছে না। বৃষ্টির অভাবে কৃষকরা আমনের চারা লাগাতে পারছেন না। অনাবৃষ্টি ও তাপদাহে বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে এসেও বৃষ্টির জন্য হাহাকার চাষীদের আবাদ করা আমনের জমিতে পানি না থাকায় দুশ্চিন্তয় দিন কাটছে কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১০ ইউনিয়ন একটি পৌরসভায় ১১ হাজার ৮৮২ অ্যাক্টরের বেশি জমিতে রুপা আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৮ অ্যাক্টর হাইব্রিড,৮২৫ এক্টর উপশী, স্থানীয় জাতের ২২০ অ্যাক্টর জমিতে রুপা আমনের বীজতলা প্রস্তুত করা হযেছে। কৃষকরা জানান, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে আমন ধান আবাদ করা হয়। কেননা এই সময়ে বৃষ্টির পানি থাকে। কিন্তু এবছর একেবারে ভিন্ন চিত্র। অনাবৃষ্টির কারণে পানি সংকট দেখা দিয়েছে কৃষিজমিতে। কেউ কেউ পাওয়ার পাম্প দিয়ে পানি সেচ করে রোপা আমন ধান লাগানোর চেষ্টা করছেন।
উপজেলার বিনা ওটি ইউনিয়নের অনন্তপুর এলাকার কৃষক আরিফ ভূঁইয়া বলেন, এই বছর বৃষ্টি না হওয়ায় এখনো ধানের চারা রোপন করতে পারিনি। চিন্তা করছি সেচের পানি দিয়ে ধানের চারা রোপন করব। এতে অবশ্য খরচ বেড়ে যাবে। একই ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ গ্রামের কৃষক ফায়জ খান জানান, এই বছর বৃষ্টি না হওয়াতে উঁচু জমি তো দূরের কথা, নিচু জমিও এখন পর্যন্ত রোপন করতে পারিনি।
বাদৈর ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের কৃষক জামাল হোসেন বলেন, সাধারণত বীচতলায় তৈরি করা ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে জমিতে লাগানো হয়। কিন্তু এবছর সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায় চারা বয়স ৪০ থেকে ৪৫ দিন হয়ে গেছে কিন্তু রোপণ করতে পারছি না। কসবা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাজেরা বেগম জানান জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তিন সপ্তাহ ধরে এ উপজেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ও তাপদাহ বিরাজ করছে। ফলে বর্ষার ভরা মৌসুমে ও তেমন বৃষ্টিপাত নেই বললেই চলে। তবে সঠিক সময়ে কৃষকরা যেন রোপা আমন চাষ করতে পারে এ ব্যাপারে আমরা স্কিম ম্যানেজারদের সঙ্গে কথা বলছি বোরো আবাদের মত সেচের ব্যবস্থা করে রোপা আমন চাষ করা হবে।