১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট যে কালো অধ্যায় সুচিত হয়েছিল বাংলার কিছু কোলাঙ্গার এবং আন্তর্জাতিক কিছু শয়তানের প্রতিমূর্তীর গভীর চক্রান্তের ফলে তা আজো বাংলা ও বাঙ্গালীকে এবং মানব জাতিকে কাঁদায়। ঐ করুন বেদনাময় পরিবেশ ও পরিস্থিতিকে উতড়ে জাতি এক মহা জাগরণে মনোনিবেশ করেছে। গত ৪৮টি বছর পাড়ি দিয়ে এসে এখন কঠিন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে বলতে চাই আমরা শোক কাটিয়ে উঠেছি এবং শোক-কে শক্তিতে পরিণত করেছি এমনকি ঐ নরপিচাসদের আইনের আওতায় এনে সাজা কার্যকর করেছি আরো সাজা কায্যকর করার প্রক্রিয়ায় রয়েছি। আজ আবারো সেই ঘৃণিত শক্তির নরপিচাসদের প্রেতাত্মারা মাথাচারা দিয়ে উঠেছে। বার বার আগষ্ট কেন্দ্রীক বিভিন্ন নেতিবাচক পরিকল্পনা আটে কিন্তু মহান খোদার মহানুভবতা তাদের চক্রান্তকে সফল হতে দেয়নি এবং অদূর ভবিষ্যতেও দেবে না। কারণ বেদনার ক্ষত থেকে মহা জাগরণ শুরু হয়েছে। বেদনার ক্ষত শুকিয়েছে এবং সারা বাংলার আকাশে ও বাতাসে মহা জাগরণের মহাধ্বনী বাজছে এবং প্রকম্পিত হচ্ছে বাংলার আকাশ ও বাতাস। বাংলা ও বাঙ্গালী এখন যেখানেই থাকুক না কেন আজ মহা জাগরণের প্রলয়ধ্বণী উচ্ছাকাসে এবং উদ্ধ্বাকাশে গতিময়তা নিয়ে বেজে যাচ্ছে। আমরা আজ সেই ’৭৫এর ১৫ই আগষ্টকে স্মৃতিতে স্মরণ করছি এবং মহা জাগরণের তোরে পরাজিত শক্তি, অপশক্তি এবং বাংলা ও বাংলার আকাশ বিনাশী শক্তিকে ভাসিয়ে দিয়ে নতুন সংস্কৃতি ও নতুন পরিচিতি বাঁচতে ও বাচাতে বদ্ধ পরিকর হয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি।
বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে এখন সেই ১৫ই আগষ্টের মহা জাগরণ শিখরিত হয়ে প্রলয়ধ্বনী দিয়ে যাচ্ছে। দোয়া ও মোনাজাত এবং মিলাদ ও তাবারুক বিতরণ এর সাথে সাধারণ মানুষের মহা জাগরণের উদ্মাদনা এমনিক তেজদিপ্ত কন্ঠের বাহারি ব্যবহারে গর্জে উঠেছে আকাশ ও বাতাস এবং বাংলা ও বাংলা মায়ের হৃদয়স্পন্দন। আগষ্ট বেদনার ছিল কিন্তু এখন আর সেই বেদনায় কাতর নয়। আগষ্টকে স্মরণ করে জাতি এখন শক্তিতে, সাহসে, সম্পদে, জ্ঞানে পরিপূর্ণতা নিয়ে মহা জাগরণের তরে এগিয়ে যাচ্ছে। মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মহা জাগরণের প্রলয় ধ্বনী উচ্চারিত হচ্ছে এবং বেজে যাচ্ছে বেদনার করুণ সুরের সঙ্গে বজ্রকন্ঠ সেই মহাধ্বনী এবং আহবান; যার উপর ভর করেই আজ আমাদের প্রীয় মার্তৃভুমি বাংলাদেশ স্বর্ণযুগে পদার্পন করে এগিয়ে যাচ্ছে স্মার্টযুগে। যে যুগে ডায়মন্ড খচিত হয়ে এদেশের জনতা ভোগ করবে শান্তি, নিশ্চয়তা, নিরাপত্তা এবং বসবাসের অভয়ারন্য। যারজন্য আরো একটি কঠিন সংগ্রাম অত্যাসন্ন। আমরা আজকের মহা জাগরণ থেকে এই আহবানই জানাব যে, আপনার সজাগ থাকুন, সতর্ক হউন। ঘরে বসে থেকে সংগ্রাম হয়না এবং ঘরে বসে থেকে জয়ের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা যায় না। সুতরাং কবুতরের মত সরল হউন এবং সাপের মত সতর্ক হউন। নতুবা জয়ের ধারাবাহিকতায় ছেদ গঠতে পারে।
সমর্থন ও সাপোর্ট প্রকাশ করতে হলে ঘর থেকে বের হয়ে আসতে হবে। ঐক্যে সামিল হয়ে প্রতিবন্ধকতায় বাধাস্বরূপ দেয়াল তৈরী করতে হবে। জ্ঞান, বাস্তবতা, ইতিহসা, সংস্কৃতি, অর্থ ও বাস্তবতার নীরিখে প্রয়োজনীয় যোগানে সহযোগীতা, ক্ষমা ও ভলাবাসা প্রকাশ অব্যাহত রেখে সকলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। নতুবা সমর্থন ও সাপোর্ট কোন কাজে লাগবে না। ভোট, আন্দোলন এবং জনসম্পৃক্ততা এমনকি সমাবেশে উপস্থিত থাকতে হবে। দলের সকল সিদ্ধান্তে একমত থেকে বাস্তবায়নে চিন্তা + কথা + কাজের সমন্বয় সাধন করে এগিয়ে যেতে হবে। কোনভাবেই দলীয় সিদ্ধান্তের সঙ্গে অমত প্রকাশ করা যাবে না। দলীয় আদর্শ এবং চিন্তা ও সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাতে হবে। শত বাধা-বিপত্তি এবং কষ্টেও দলের সঙ্গে থেকে দলকে এগিয়ে নিতে হবে। আর এই সিদ্ধান্ত শপথ হউক আজকের দিনে; মহা জাগরণের দিনে।
বঙ্গবন্ধু দেশের সম্পদ, জাতির জাতীয় সম্পদ। এই সম্পদকে রক্ষায় সকলের প্রাণপণ চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। দেশ ও বঙ্গবন্ধু এক সুতরাং এই ঐক্যে ফাটল ধরানো যাবে না। এই ঐক্যের সুনাম অব্যাহত রাখতে সকলের অব্যাহত প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিতে হবে তবে এর মধ্যে যারা চির ধরায় এবং ধরাতে চেষ্টা করে যাচ্ছে তাদেরকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তাদের অপচেষ্টাকে চিরতরে ধ্বংস করে দিতে হবে। আসুন আজকের দিনে এই প্রতিজ্ঞায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে দেশ মার্তৃকার তরে আবারো নিজেদেরকে নিয়োজিত করি এবং সকল অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করি। জয় হউক মহা জাগরণের এবং জয় হউক বাংলা ও বাঙ্গালীর।
আমরা আজকের দিনের বদৌলতে জানতে, বুঝতে, শিখতে এবং করণীয় ঠিক করে সামনে এগিয়ে যেতে এমনকি আগামীর করণীয় ঠিক করতে দিক নির্দেশনা পেয়েছি। আজকের দিনটি স্মরণ করিয়ে দেয় আমাদের আগামীর করণীয় কি। সেই করণীয়তে মনোনিবেশ করতে এই আজকের দিনটি, ইতিহাস, সংস্কৃতি, কৃষ্টি-কালচার এবং বাস্তবতা আর নতুন স্বরযন্ত্রের প্রকাশমান ধারাবাহিকতার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চেনতায় উদ্ভুদ্ধ করে করনীয় ঠিক করতে পথ প্রসস্থ্য করে যাচ্ছে। আগামীর ভাবনায় আজকের মহা জাগরণ জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে চেতনায় উদ্ভুদ্ধ করতে আর আগামীর সকল ষঢ়যন্ত্র মোকাবিলা করে কাংখিত লক্ষ্যের শেষ সীমায় পৌঁছতে সাহায্য করবে। আজকের দিনের শোকের বেদনার মহা জাগরণই আগামীর দিশারী হিসেবে সু প্রতিষ্ঠিত হউক\ এই কামনা করেই কৃতজ্ঞতা এবং বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় সকলের সঙ্গে নিজেকে শরীক করে গর্বের অংশীদ্বার হওয়ার আশা, আকাঙ্খায় অবিরত অবিচল থাকছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবি হউক।
লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, সাপ্তাহিক প্রশান্তি; পরিচালক অপারেশনস্ বেঙ্গল ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লি:; প্রেসিডেন্ট, সাপামা; ষ্ট্যান্ডিং মেম্বার, বেসিস; কনসালটেন্ট, আন্তর্জাতিক ৬টি সংস্থার; অরো অনেক সংগঠনের উপদেষ্টা ও সহ-সভাপতি এবং প্রতিষ্ঠাতা দিশা গ্রুপ অব কোম্পানীজ।