প্রশান্তি ডেক্স ॥ চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য সরকার সাড়ে ৭ শতাংশের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও এ বছর বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কিছুটা কমিয়ে এনেছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে। বিশ্বব্যাংকের মতে, অর্থনীতিতে এখন বিভিন্ন ধরনের বাধা কাজ করছে। ফলে ঝুঁকিও ক্রমশ বাড়ছে।

গত মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট প্রতিবেদনে জিডিপির এই পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ঢাকা অফিস থেকে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অর্থনীতির অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। আগামী দিনেও উচ্চ মূল্যস্ফীতির ধারা অব্যাহত থাকতে পারে বলে মনে করছে তারা।
পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বিনিময় হারকে ধরাবাঁধার বাইরে রাখা, মুদ্রানীতি আধুনিক করা এবং রাজস্ব খাতের সংস্কারসহ এসবের মাধ্যমে অর্থনীতিতে সংস্কারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, মূল্যস্ফীতির পরিস্থিতি নির্ভর করবে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্য কেমন থাকে, তার ওপর।
বিশ্বব্যাংক আরও জানায়, মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে পারলে এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক করা সম্ভব হলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে হতে পারে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ ও ভুটানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুল্লায়ে সেক প্রতিবেদনের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং টাকার অবমূল্যায়নের কারণে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ছে। মানুষের ভোগও চাপের মুখে পড়েছে। এ ছাড়া মজুরি বৃদ্ধির তুলনায় খাবারের দাম বেড়েছে।’ মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে মুদ্রানীতির কার্যকর ব্যবহারের ওপর জোর দেন তিনি।
বিশ্বব্যাংকের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে সুদ হারের সীমা পর্যায়ক্রমে তুলে দিতে হবে। এ ছাড়া ব্যাংক খাতের কার্যকর তদারকির মাধ্যমে আর্থিক খাতের ঝুঁকি কমানোর উদ্যোগ নেওয়া উচিত।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে ২০২৫ সালে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারতে ৬ দশমিক ৩ এবং মালদ্বীপে ৫ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। ২০২৩ সালে শ্রীলঙ্কায় প্রবৃদ্ধি ছিল নেতিবাচক, মাইনাস ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০২৪ সালে দেশটি ঘুরে দাঁড়াবে এবং প্রবৃদ্ধি হবে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এর আগে বাংলাদেশের ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭ দশমিক ১ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক।