শাস্তির বিধান রেখে গ্যাস বিপণন বিধিমালা সংশোধন

প্রশান্তি ডেক্স ॥ গ্যাস বিপণন বিধিমালায় অবৈধ গ্যাস বাণিজ্যে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শাস্তির বিধান সংযুক্ত করা হচ্ছে। জ্বালানি বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে পেট্রোবাংলাকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর আগে এ ধরনের কাজে সম্পৃক্তদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টিকে এখন স্থায়ীভাবে গ্যাস বিপণন বিধিমালাতে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

‘গ্যাস বিপণন বিধিমালা-২০১৯’ এর ৬৪ ধারায় বলা হয়েছে, ‘অবৈধ বা অননুমোদিত বা বিধিবহির্ভূত বা নিয়ম বহির্ভূত কার্যকলাপ’ অর্থ সাধারণভাবে বিদ্যমান প্রাকৃতিক গ্যাস বিতরণ নেটওয়ার্ক বা স্থাপনা হতে গ্যাস সংযোগ ব্যবহারের জন্য অনুসৃত বিধান বা নিয়মাবলি অনুসরণ ব্যতিরেকে বা ব্যত্যয় ঘটিয়ে গ্যাস সংযোগ গ্রহণ, প্রদান বা গ্যাস ব্যবহারসহ সমজাতীয় অন্যান্য কার্যকলাপ; একই সঙ্গে ৬৫ ধারায় বলা হয়েছে ‘গ্যাস কারচুপি’ অর্থ কৌশলে গ্যাস চুরি এবং অবৈধ, অননুমোদিত বা বিধিবহির্ভূত কার্যকলাপের মাধ্যমে রেকর্ডবিহীন বা বিলিং বহির্ভূতভাবে গ্যাস ব্যবহারকে বোঝাবে। কিন্তু এখানের সব দায় গ্রাহকের ওপর চাপানো হয়েছে। কোথাও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্নীতি করলে কী হবে, তার উল্লেখ নেই।

এই দুই ধরার কোথাও বিতরণ কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যদি এসব কাজে সম্পৃক্ত থাকে তাহলে কী করতে হবে, সে বিষয়ে কোনোকিছুর উল্লেখ নেই।

‘গ্যাস বিপণন বিধিমালা-২০১৯’ এ ঠিকাদারদের কারচুপির বিষয়ে ৫৭ ধারায় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, এই ধরায় বলা হয়েছে, গ্যাস কারচুপির সঙ্গে ঠিকাদারের সম্পৃক্ততা। অবৈধ, অননুমোদিত, নিয়মবহির্ভূতভাবে বিতরণ, সার্ভিস, রাইজার, আরএমএস বা অভ্যন্তরীণ গ্যাস লাইন স্থাপন, স্থানান্তর বা সরঞ্জামাদি স্থাপন, স্থানান্তর বা পরিবর্তন বা গ্যাস কারচুপির সঙ্গে কোনও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে কোম্পানি হতে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তি বাতিল এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিকে স্বীয় কার্য-সম্পাদনে অযোগ্য ঘোষণা করে তাৎক্ষণিকভাবে পেট্রেবাংলার আওতাধীন অন্যান্য বিতরণ কোম্পানিকে জানাতে হবে এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।‘

সম্প্রতি মন্ত্রণালয় থেকে কমিটি গঠন করে অবৈধ গ্যাস বাণিজ্য বন্ধের উদ্যোগ নেওয়ার পর দেখা গেছে, যেখানে লাইন কাটা হচ্ছে সেখানে আবারও সংযুক্ত করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে, এই বাণিজ্যের সঙ্গে বিতরণ কোম্পানির এক শ্রেণির কর্মকর্তা কর্মচারী জড়িত। সাধারণ আইনে তাদের বিচারের ব্যবস্থা থাকলেও তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে গ্যাস বিপণন বিধিমালা কোনও কাজে আসছে না।

জানতে চাইলে জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, বিতরণ কোম্পানির প্রতিনিধিরা এ ধরনের অসাধু কাজের সঙ্গে জড়িত থাকলে কী শাস্তি পাবে, সে বিষয়ে গ্যাস বিপণন বিধিমালায় থাকা উচিত। বিষয়ে পেট্রোবাংলাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জ্বালানি সচিব নুরুল আলম স্বাক্ষরিত একটি বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, এক মাসের মধ্যে গ্যাস বিপণন বিধি সংশোধন করে পেট্রোবাংলাকে মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.