প্রশান্তি ডেক্স ॥ চীনকে আটকানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানকে টাকাপয়সা খরচ করার পরামর্শ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, অন্য দেশগুলোকেও একথা বলেছেন বলেও জানান তিনি।
গত বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াশিংটনে গত ২৭ সেপ্টেম্বর জ্যাক সুলিভ্যানের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, ‘আমি তাকে বললাম আপনাদের খালি উপদেশ আর হুকুম এবং ভয়-এগুলো দিয়ে চীনকে আটকানো যাবে না। এটি করতে হলে টাকাপয়সা নিয়ে আসেন।’
মোমেন বলেন, ‘উনি (জ্যাক সুলিভ্যান) আমাকে বললেন যে তিনি চেষ্টা করছেন। তারা বিষয়টি অনুধাবন করেন। তিনি বললেন, আপনি বিষয়টি মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে তুলে ধরেছিলেন এবং আমি বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছি। আমি এজন্য উদ্যোগ নিয়েছি। আমেরিকা ২০০ বিলিয়ন ডলারের একটি তহবিল তৈরি করতে চায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দেবে বলে।’
অন্যান্য দেশকেও একই কথা বলেছেন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বড়লোক দেশগুলোকে বলেছি তোমরা যদি চীনকে আটকে রাখতে চাও, তবে শুধু আদেশ এবং সতর্কতা দিয়ে লাভ হবে না। আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না বা উপদেশ দিয়ে লাভ হবে না। তোমরা যদি চীনকে আটকাতে চাও তবে সঙ্গে কিছু টাকাপয়সা নিয়ে আসবে।’
বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, চীন থেকে আমরা ঋণ নিয়েছি মাত্র ৪০০ কোটি ডলার। এটি আমাদের জিডিপির এক শতাংশ। তবে ফলাও করে কিছু পন্ডিত বলেন যে বাংলাদেশ চীনের লেজুড় হয়ে গেছে।
জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে বৈঠক মাঝপথে থেমে গিয়েছিল বলে একটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যারা লিখছে থেমে গিয়েছিল তারা আহাম্মকের স্বর্গে আছে, বানোয়াটের স্বর্গে আছে। আলোচনাটা খুব সুন্দর হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের মিশনে গিয়েছিলেন সব সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে সম্মান জানানো- সেইসব কারণে। তখন ওখানে যুক্তরাষ্ট্রের খুব গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা দলবল নিয়ে আসেন এবং আমরা তাকে স্বাগত জানাই।’
মার্কিন ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার ঢাকা সফর করবেন। এর আগে এ সপ্তাহে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আফরিন আক্তারের আলাপ হয়।
মার্কিন কর্মকর্তা কেন ঢাকা আসছে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মূলত দুটি বিষয়ে আলাপ করার জন্য আসবেন তিনি। একটি হচ্ছে রোহিঙ্গা এবং অপরটি হচ্ছে নির্বাচন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের নির্বাচন নিয়ে আলাপ করবেন। এখানে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে তারা কথা বলবেন। আমরা তাদের বলেছি আমরা কী কী করেছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, নির্বাচন সংঘাতমুক্ত হবে কিনা সেটির কোনও নিশ্চয়তা সরকার দিতে পারে না। সংঘাতমুক্ত করতে হলে দল, মত সবার ঐকান্তিক ইচ্ছা ও প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে। তা নাহলে সংঘাতমুক্ত সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, তারা জানতে চেয়েছে যে লোকজন ভোট দেবে কিনা। আমরা বলেছি অবশ্যই ভোট দেবে। আফরিন আক্তার এগুলো জানতে চাইবেন এবং লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।