প্রশান্তি ডেক্স ॥ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘শেষ বার্তার’ পাল্টা শেষ বার্তা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনি শেষ বার্তা দিচ্ছেন! আজ আমি শেষ বার্তা দিচ্ছি শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান থাকবেন। আরও বার্তা দিচ্ছি, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে শেখ হাসিনা আবারও প্রধানমন্ত্রী হবেন।
গত বুধবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল পাঁচ তারকা হোটেলে নাস্তা করে অনশন করেন ৩ ঘণ্টা। আড়াই ঘণ্টা পর বিদেশি জুস খেয়ে অনশন বন্ধ করে দেন। এই আন্দোলন তারা করছেন। আমাদের বার্তা দিচ্ছে, দিনক্ষণ বলে দিচ্ছে কবে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে। আমি জিজ্ঞেস করি, কার কাছে ক্ষমতা দেবে? আপনার কাছে? নাকি দন্ডিত যুবরাজের কাছে? বাংলাদেশের ম্যাজিক লিডার শেখ হাসিনা। আপনি কে বার্তা দেওয়ার শেখ হাসিনা কার কাছে ক্ষমতা দেবে? শেখ হাসিনা পদত্যাগ করবেন কিনা?
‘খেলা হবে’ মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খেলা হবে বিএনপির বিরুদ্ধে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, লুটপাটের বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। বিএনপি হলো খুনির দল, এদের হাতে রক্ত। খেলা হবে। এই খেলায় জিততে হবে। তারা নাকি রাস্তায় নামবে। দাঁড়াতেই দেবো না।
পশ্চিমাদের সঙ্গে যোগাযোগের ইঙ্গিত দিয়ে কাদের বলেন, উৎসাহিত হচ্ছেন, কারণ পশ্চিমারা নাকি উৎসাহ দিচ্ছে। ফখরুল সাহেব, দুনিয়ার অবস্থা ভালো না। তাদের নিজেদের ঘর সামলানোই কঠিন। তারা ঘর সামলাবে নাকি আপনাকে উৎসাহ দেবে? আপনাদের সামলাবে কখন? উৎসাহ দেওয়ার দিন শেষ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুলের পকেট গরম, মালপানি ভালো আসছে, ওনার কথাও গরম। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। আমাদেরকে ধমক দেয়, ভয় দেখায়। তিনি বলেন, বিএনপি হল খুনির দল, এদের হাতে রক্তের দাগ। এদের হাতে ১৫ আগস্টের রক্ত, শিশু রাসেলের রক্ত, বঙ্গবন্ধুর রক্ত, বেগম মুজিবের রক্ত, জাতীয় চার নেতার রক্ত। এরা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকেও হত্যা করতে চেয়েছিল, যেখানে আইভী রহমানসহ ২৩ জনের রক্ত। এরা বাংলার শতসহস্র মায়ের বুক খালি করেছে। এ অপশক্তির হাতে বাংলাদেশের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে পারি না।
কাদের বলেন, তত্ত্বাবধায়ক মরে গেছে। আজিমপুর গোরস্থানে চিরনিদ্রায় শুয়ে আছে। বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক আজিমপুরে শুয়ে আছে। ওইটা আর ফিরে আসবে না। ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক আর আসবে না। ওয়ান ইলেভেনের দুঃস্বপ্ন কী সফল হবে?
বিএনপি অবরোধ করলে পাল্টা অবরোধ করতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা বলেছেন শান্তিপূর্ণ নিরপেক্ষ, অবাধ নির্বাচন করতে হবে। বাধা যারা দেবে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা। আমরা তো নির্বাচন চাই, আমরা কেন বাধা দেবো? অবরোধ যারা করবে, ঢাকা অচল যারা করবে, তারাই বাধা দিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে বন্ধুরা কী ব্যবস্থা নেয় আমরা তা দেখবো।
তিনি বলেন, নৌকা ছাড়া উপায় নাই। বাংলাদেশের শান্তি চাইলে নৌকা, সুখ চাইলে নৌকা, উন্নয়ন চাইলে নৌকা, মুক্তিযুদ্ধ চাইলে নৌকা, স্বাধীনতা চাইলে নৌকা। নৌকা ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র থাকবে না। গণতন্ত্র চাইলে নৌকায় ভোট দিতে হবে। সারা দেশে উন্নয়ন চাইলে শেখ হাসিনার নৌকায় ভোট দিতে হবে।
সুদিন আসছে এমন আশা প্রকাশ করে কাদের বলেন, শেখ হাসিনা থাকলে গণতন্ত্র থাকবে, মুক্তিযুদ্ধ থাকবে, শান্তি আসবে, বাংলাদেশের মানুষ অন্তত সারা বাংলায় বিদ্যুতের আলো পাবে। আগে খাম্বা ছিল, বিদ্যুৎ ছিল না। এখন শতভাগ বিদ্যুৎ।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফির সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, শাহজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, মির্জা আজমসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা।