প্রশান্তি ডেক্স ॥ বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ৬৮১ মিলিয়ন ডলার ছাড়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে। আইএমএফ প্রতিনিধি দলের প্রথম রিভিউ মিশন শেষে গত বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ও আইএমএফ কর্মীরা একটি স্টাফ লেভেল সমঝোতায় পৌঁছেছেন।
বাংলাদেশে আইএমএফের রিভিউ মিশনের নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির এশীয় ও প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দ। ৪-১৯ অক্টোবর মিশনটি ঢাকায় কাজ করে। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের শেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিবৃতিতে অনুসারে, আইএমএফ বলেছে প্রথম রিভিউয়ের পূর্ণাঙ্গ সমাপ্তি শেষে বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটির এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফেসিলিটি (ইসিএফ) এবং এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফেসিলিটি (ইএফএফ)-এর আওতায় ৪৬২ মিলিয়ন ডলার এবং রেসিলিয়েন্স অ্যান্ড সাস্টেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ)-এর আওতায় ২১৯ মিলিয়ন ডলার অর্থ ছাড় দেওয়া হবে।
রাহুল আনন্দ বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশ আইএমএফ সমর্থিত প্রকল্পের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোগত সংস্কার সাধন করেছে। কিন্তু এখনও চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
বিবৃতিতে আইএমএফ কর্মীরা সংস্কার বাস্তবায়নের অগ্রগতিকে স্বাগত জানিয়েছে। একটি চ্যালেঞ্জিং পরিবেশের মধ্যেও সিদ্ধান্তমূলক নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের অব্যাহত প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেছিলেন, ৪৭০ কোটি ডলার (৪.৭ বিলিয়ন) ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ৬৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার আগামী ডিসেম্বরে পাওয়ার প্রত্যাশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামী ডিসেম্বরে আইএমএফ তাদের বোর্ড মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ আগামী ১১ ডিসেম্বর অনুমোদন পেতে পারে বলে আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রসঙ্গত, আইএমএফ বেশকিছু বিষয়ে নির্দিষ্ট শর্ত দিয়ে বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে চলতি বছরের জানুয়ারিতে। এই ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার গত ফেব্রুয়ারিতে পায় বাংলাদেশ।
জানা গেছে, বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি ফরেক্স রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৬.৭ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে-২০২৪ সালের জুন নাগাদ ২০.১৯ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ গঠনের নতুন লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেবে।
এর আগে গত ৪ অক্টোবর ঢাকায় আসেন আইএমএফের ঋণ পর্যালোচনা মিশনের সদস্যরা। এরপর তারা বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-সহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করছেন।
ঋণ কর্মসূচির একটি শর্ত হিসেবে, প্রাথমিকভাবে চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২৪) ৪ লাখ ১০ হাজার ৪০০ কোটি টাকার কর রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিল আইএমএফ।কিন্তু আইএমএফ মিশন সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনি বছরে এই টার্গেট অর্জন কঠিন হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এরপর আইএমএফ এই লক্ষ্য কমিয়ে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।