বাআ ॥ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই মাটিতে সবার সমান অধিকার রয়েছে। নিজ নিজ অধিকার নিয়ে বসবাস করবেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে সবাই এক হয়ে যুদ্ধ করেছেন। কাজেই এখানে সবার সমান অধিকার রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বাংলাদেশের মানুষ সাধারণত খুব উদার মনের। তারা সব সময় অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করে। যে কারণেই আমাদের আজকের ে¯্লাগান ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গত রোববার দুপুরে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সবাই আমরা ঠিক এভাবে উৎসব পালন করে যাচ্ছি। আজকে সারা বাংলাদেশে ৩২ হাজারের উপর পূজামন্ডপ। পূজা এত সুন্দরভাবে করা হচ্ছে সব জায়গায়, শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ আমাদের। যখন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন- যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করো, তখন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই যার যা কিছু ছিল তাই নিয়ে, অস্ত্র তুলে নিয়েই আমাদের এ দেশ স্বাধীন করেছে।
তিনি বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে আমরা হারিয়েছি। একইসঙ্গে হারিয়েছি আমার মা এবং ভাইদের। আমার তো হারাবার কিছু নেই! আমি এসেছি বাংলার মানুষের ভাগ্য গড়তে। আর এই বাংলাদেশ পঁচাত্তর সালের পর; যে বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল, যে বাংলাদেশে আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অকথ্য অত্যাচার নির্যাতন হয়েছে। এ বাংলাদেশে আমরা দেখেছি ১৯৯২ সালের কথা, ২০০১ এরপর বা তার আগেও বারবার আঘাত এসেছে কিন্তু আমরা-আওয়ামী লীগ সব সময় আপনাদের পাশে ছিলাম, পাশে আছি।
আমি এটুকু বলব, আমাদের যতটুকু করার আমরা করেছি। আপনাদের অনেকগুলো দাবি ছিল। আমি কিছু দিন আগেই আপনাদের সঙ্গে বসেছি, অনেক কিছু বিস্তারিত বক্তব্য দিয়েছি। আজকে যেহেতু একটা উৎসবের দিন কাজেই কী দিলাম বা কী করলাম, কী পেলাম, কী পেলাম না সে কথায় আমি যাব না।
তিনি আরও বলেন, আজকে আমরা এটুকু চাইব, আপনারাও আশীর্বাদ করেন বাংলাদেশের জন্য; আজকে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা- এখন ঘরে ঘরে খাবার আছে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ আছে, চিকিৎসা সেবা মানুষের কাছে আমরা দিয়ে দিচ্ছি, সারা বাংলাদেশে যে উন্নয়নের ছোঁয়া, এটা মানুষের কল্যাণেই আমাদের কাজ। আর মানুষের কল্যাণ করাটাই আমরা মনে করি একমাত্র দায়িত্ব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ এর নির্বাচনে বলেছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ করব, সেটা আমরা করে দিয়েছি। এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ। ইনশাআল্লাহ, আমরা সেটাও করতে পারব। আমরা সব সময় বিশ্বাস করি, সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে।
এমনকি আমাদের ইসলাম ধর্ম; সুরা কাফেরুনে বলা আছে স্পষ্ট, লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন। অর্থাৎ যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। কাজেই কেউ কারও ওপর হস্তক্ষেপ করবে না। শান্তিপূর্ণভাবে পূজা সম্পন্ন হোক- সেটাই আমরা চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আছি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে আমাদের সংগঠনের সব নেতাকর্মী প্রত্যেকেই পাশে থাকবে। কোনোরকম ঘটনা যাতে না ঘটতে পারে সেদিকে আমরা সতর্ক থাকব।