প্রশান্তি ডেক্স ॥ অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছেই কমছে। গত এক সপ্তাহে আইএমএফের বিপিএম-৬ ম্যাথোডের ভিত্তিতে রিজার্ভ কমেছে ৮ কোটি ডলার। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী রিজার্ভ কমেছে ১০ কোটি ডলার।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, গত ২২ নভেম্বর আইএমএফের বিপিএম-৬ ম্যাথোডের ভিত্তিতে গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৫২ কোটি (১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন) ডলার। এক সপ্তাহ আগে অর্থাৎ ১৫ নভেম্বর রিজার্ভ ছিল এক হাজার ৯৬০ কোটি (১৯ দশমিক ৬০ বিলিয়ন) ডলার।
অবশ্য গত ১ নভেম্বর রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২০ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার। আর বর্তমানে নেট রিজার্ভ এক হাজার ৬০০ কোটি ডলারের নিচে বলে জানা গেছে। প্রকৃত রিজার্ভের এ তথ্য কেবল আইএমএফ-কে জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী, ২২ নভেম্বর রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৬১৬ কোটি (২৬ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার)। এক সপ্তাহ আগে ১৫ নভেম্বর এটি ছিল ২৫ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ৭ দিনের ব্যবধানে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ১০ কোটি ডলার।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৩ জুলাই থেকে বিপিএম-৬ নিয়মে রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন বিপিএম-৬ অনুযায়ী, দেশে রিজার্ভ ছিল ২৩ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন (২ হাজার ৩৫৬ কোটি) ডলার।
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর দেশের গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৪২৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে গত এক বছরে রিজার্ভ কমেছে ৮ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘চাহিদা ও জোগান মিলিয়ে বর্তমানে দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৫ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার।’ তিনি আরও বলেন, ‘অর্থনীতি শক্তিশালী করতে যে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেগুলো ইতিবাচক দিকে যাওয়া শুরু করেছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, আর্থিক সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় ফিরছে।
এদিকে গত বুধবার (২২ নভেম্বর) প্রবাসী আয় এবং রফতানি আয় নগদায়নে ডলারের দাম ৫০ পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)। তাদের এই সিদ্ধান্ত ইতিবাচক বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রেমিট্যান্সপ্রবাহ ধীরে ধীরে ভালো অবস্থানে যাচ্ছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক জানান, ডলারের দাম কমলেও রেমিট্যান্সে প্রভাব পড়বে না। তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলো ভালো অবস্থানে আছে। তা ছাড়া মার্কেট ভালো হচ্ছে।’ এখনও দেশের রিজার্ভে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো নিয়ে কোনও শঙ্কা নেই বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র।
প্রসঙ্গত, সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়।