কম্পিউটার কাউন্সিল আইএসপি লাইসেন্স পেল

প্রশান্তি ডেক্স ॥ সরকারের আইসিটি বিভাগের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হলেও সম্প্রতি সংস্থাটি ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের (আইএসপি) লাইসেন্স নিয়েছে। সাধারণত ইন্টারনেটের বাণিজ্যিক সেবাদানের জন্য আইএসপি লাইসেন্স প্রয়োজন হয়। বিসিসির লাইসেন্সের আবেদন ও লাইসেন্স পাওয়ায় এ খাতে নানা আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, বিসিসি চলতি বছরের জুলাই মাসে আইএসপি লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে। এরপর অক্টোবরে অনুষ্ঠিত কমিশন বৈঠকে লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় বিটিআরসি। প্রথমবার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে বিসিসির লাইসেন্সের বিষয়ে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়।

লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে বিটিআরসির মন্তব্য ‘আবেদন মূল্যায়ন কমিটি বিসিসির সব কাগজপত্র যাচাই করে এবং সরেজমিনে অফিস পরিদর্শন করে লাইসেন্স দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে।’

বিসিসি হলো সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের অধীন একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে দেশের প্রযুক্তি খাতে বিশেষ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এই সংস্থা। বিসিসি বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে জাতীয় তথ্য ও প্রযুক্তি পরিকল্পনা, কৌশল এবং নীতি তৈরি করে। এছাড়া দেশের তথ্য ও প্রযুক্তির স্ট্যান্ডার্ড ও স্পেসিফিকেশন নির্ধারণ, অবকাঠামো তৈরি, তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত নিরাপত্তা-বিষয়ক পরামর্শ প্রদান করে। প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা, সাইবার অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যা শনাক্ত করা, তদন্ত, প্রতিকার, প্রতিরোধ এবং প্রতিরোধের পাশাপাশি আইসিটি অডিট পরিচালনা করে থাকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি’র সভাপতি এমদাদুল হক বলেন, ‘বিসিসির এই লাইসেন্স দরকার ছিল না।  আমরা মনে করি, এটা বিসিসির জন্য অপ্রয়োজনীয় একটি লাইসেন্স। প্রাইভেট সেক্টরই (আইএসপি) বিসিসিকে সেবা দিতে পারতো।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিসিসি চাইলে তো বিটিসিএল (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড) থেকেই সেবা নিতে পারতো।’ সরকারি প্রতিষ্ঠান যদি ব্যবসা করে, তাহলে কীভাবে চলবে, প্রশ্ন করেন তিনি।

কেন আইএসপি লাইসেন্স দরকার হলো বিসিসির : ন্যাশনওয়াইড আইএসপি লাইসেন্স পেতে চলতি বছরের ২৩ জুলাই আবেদনে বিসিসি জানিয়েছে— জাতীয় ডেটা সেন্টারের (টায়ার-৩) মাধ্যমে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ই-সেবা দেওয়া হচ্ছে এবং তথ্য ও যোগাযোগে তারা ‘ইনফো সরকার-২’ প্রকল্পের মাধ্যমে সারা দেশে ১৮ হাজার ১৩০ সরকারি দফতরে ই-সেবা দিচ্ছে। বিটিআরসি’র সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল দিয়ে ৬১৭ ইউনিয়নে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজ এখনও চলমান। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও কনফারেন্সিং পরিচালনা করে আসছে। এসব কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তাদের ন্যাশনওয়াইড আইএসপি লাইসেন্স প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, বিসিসির একটি প্রকল্পের (বিসিসির ডেভেলমেন্ট অব ইনফ্রাসট্রাকচার ফর আইটি অ্যাপ্লিকেশনস) নামে আগে একটি আইএসপি লাইসেন্স থাকলেও সেটির মেয়াদ এখন আর নেই। লাইসেন্স নবায়ন না করায় সেটির মেয়াদ ফুরিয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটি আবারও লাইসেন্সের আবেদন করে। তবে এবারই প্রথমবার তারা বিসিসির নামে আবেদন করে। এর আগে ‘ডেভেলমেন্ট অব ইনফ্রাসট্রাকচার ফর আইটি অ্যাপ্লিকেশনস’ প্রকল্পের নামে বিসিসির যে সেন্ট্রাল জোন আইএসপি লাইসেন্স ছিল, সেটির মেয়াদ ছিল ২০১৩ সাল পর্যন্ত। মেয়াদ শেষ হলেও বিসিসি সেটি আর নবায়ন করেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.