ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ প্রতি বছরের মত এবছরও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় এসেছে অতিথি পাখি। এসময় অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে উপজেলার বিভিন্ন খাল-বিল, জলাশয় ও নদীর অববাহিকা। নিরব নিথর গ্রামের নির্জনতা ভেঙ্গে দেয় পাখির কিচিরমিচির আর জলে ডানা ঝাপটানোর শব্দ। তাছাড়া সোনালী আভার সাথে মায়াবী সন্ধ্যায় এসব অতিথি পাখির বিচরণ উপজেলার গজারিয়া বড়বিল বিলের নৈসর্গিক রূপ আরও বাড়িয়ে তোলে। এমন মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা। অথচ বিষটোপ-ফাঁদ পেতে অতিথি পাখি শিকার করায় হুমকির মুখে পড়েছে এসব স্থানের জীববৈচিত্র ও নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য।

জানা যায়, পৃথিবীতে প্রায় পাঁচ হাজার প্রজাতির পাখির মধ্যে অনেক প্রজাতির পাখি নির্দিষ্ট সময়ে শীতপ্রধান দেশ থেকে ছুটে আসে এই দেশে। একটু উষ্ণতা, আশ্রয় ও খাবারের জন্য পাড়ি দেয় হাজার মাইল পথ।
শোনা যায়- বালি হাঁস, সারস পাখি, ডুবুরী পাখিসহ নানা অতিথি পাখির সাথে দেশীয় পাখির কলকাকলি। এসব পাখির ঘুম ভাঙ্গানি কলরবে ভোরের কম্বল জড়ানো ঘুম ভাঙ্গে ঘোপ গজারিয়া ও বড়বিল বিলের বাসিন্দাদের। নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে শিশু, নারী- পুরুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ইতিমধ্যে আসতে শুরু করেছেন। এসব এলাকা ঘুরে জানা যায় এক শ্রেণির পাখি শিকারীরা আইনের প্রতি বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে এসব পাখি শিকার করছেন।
সাবেক কৃষি ব্যাংকের ম্যানেজার (অবসরপ্রাপ্ত) মানিক চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের দেশে যেসকল অতিথি পাখি আসে সেগুলো আমাদের পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অথচ কিছু অসাধু চক্র বিষটোপ, ফাঁদ পেতে এদেরকে হত্যা করে। আমাদের এই উপজেলায়ও অতিথি পাখি শিকার হচ্ছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। এসব পাখি বীজের বিস্তরণ ও পরাগায়ন ঘটিয়ে আমাদের ফসলেরও উৎপাদনে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। পাখি কিন্তু আমাদের চিত্তবিনোদনের একটি অন্যতম উপাদান
আনোয়ার হোসেন নামে এক দর্শনার্থী জানান, শীতের শুরুতেই অতিথি পাখির দেখা পাওয়া যায়। অতিথি পাখির ঝাঁক বেধে বিচিত্র স্বরে ডাকতে ডাকতে উড়ে চলা আমাদের মুগ্ধ করে তোলে। আমি এসময় বাড়ি আসলে পাখিমেলার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করি।
কসবা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা তারেক মাহমুদ বলেন, পাখি শিকার জীব-বৈচিত্রের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি। পাখি শিকার রোধে অভিযান চালানো হয়েছে। তাছাড়া কোথাও পাখি শিকার করা হলে তাৎক্ষণিক অভিযান চালানো হবে।