সবজির দাম কমতির দিকে, নিত্যপণ্য অপরিবর্তিত

প্রশান্তি ডেক্স ॥ বাজারে সব ধরনের সবজির দামই কিছুটা কমতে শুরু করেছে। মূলত শীতের সবজি বাজারে আসায় কমছে এ দাম। এতে করে কিছুটা স্বস্তি এসেছে ক্রেতাদের মধ্যে। বিক্রেতারা বলছেন, শীত আরও বাড়লে দাম আরও কমবে।

শুধু সবজির দাম না, কমতে শুরু করেছে মুরগির দামও। তবে সবজি আর মুরগির দাম কমলেও সব ধরনের পেঁয়াজের দাম এখনও নামেনি ১০০ টাকার নিচে। এ নিয়ে বিক্রেতারা বলছেন, নতুন পেঁয়াজ উঠলে দাম কমবে তবে পুরনো পেঁয়াজের দাম কমার কোনও সম্ভাবনা নেই।

গত শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বরের কাঁচা বাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা জানা গেছে বাজারের এ পরিস্থিতি।

শীত আসতে শুরু করতেই কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। শুরুর দিকে দাম চড়া থাকলেও এখন অনেকটাই আসতে শুরু করেছে নাগালের মধ্যে।  কিন্তু এখনও যেসব সবজি নতুন আসছে সেগুলো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে।

আজকের বাজারে শিম ৬০ টাকা, মৌ শিম ৬০ টাকা, শালগম ৬০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৮০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, পেঁয়াজ পাতা ৯০-১২০ টাকা, মূলা ৪০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, লম্বা বেগুন ৫০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৬০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৮০ টাকা, শসা ৫০-৮০ টাকা, উচ্ছে ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, পটল ৬০ টাকা,  মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা , ঢেঁড়স ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা,  কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা, ধনেপাতা ১২০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিটি লাউ ৬০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা ও চাল কুমড়া ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে।

সবজি বিক্রেতা মো. হায়দার বলেন, দেশি পাকা টমেটো আর  নতুন আলুটা মাত্র আসতে শুরু করেছে তাই এগুলোর দামটা বেশি। তবে কমে যাবে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই। এছাড়া অন্যান্য সব সবজির দামই কমেছে। দাম বাড়ে নাই কোনটারই।

হরতাল-অবরোধের প্রভাবে কোনও কিছুর দাম বেড়েছে কিনা বা প্রভাব পড়েছে কিনা জানতে চাইলে সবজি বিক্রেতা মো. সাদ্দাম বলেন, হরতাল-অবরোধের কোনও প্রভাব বাজারে পড়ে নাই। প্রথম দিকে (শুরুর দিকের অবরোধ) সবজি আনতে ভাড়া বেশি লাগতো। কারণ কেউ আসতে চাইতো না। এখন আর সেরকম কিছু হয় না।

বাজার করতে আসা নেহাল হুসাইন বলেন, সবজির দাম অনেকটা কমে আসছে। কিছুটা স্বস্তি হয়তো পাওয়া যাবে। আরেক ক্রেতা শাহরিয়ার বলেন, সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। কিন্তু যখন সব সবজির দাম ৫০ টাকার নিচে নেমে আসবে তখন বলবো দাম কমেছে।

সবজির দাম কমলেও পেঁয়াজের দাম এখনও ১০০ টাকার নিচে নামেনি।  আজকের বাজারে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ ১১৫-১২০ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজ ১১০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আলুর দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। গত সপ্তাহের মতো আজও  লাল ও সাদা আলু ৫০ টাকা দরেই বিক্রি করতে দেখা যায়।

আলু-পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. কাজল মিয়া বলেন, পেঁয়াজের দাম কমার আর কোনও সম্ভাবনা দেখি না। বাজারে নতুন পেঁয়াজ উঠলে সেগুলোর দাম কমবে, কিন্তু এই পেঁয়াজের দাম আর কমবে না।

এছাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে আদা রসুনের দাম। আজকেও ভারতীয় আদা ২০০-২২০ টাকা, দেশি রসুন ২০০ টাকা, চায়না রসুন ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া আজকে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী—  ১৩০০- ২২০০ টাকা, রুই মাছ ৩৮০-৬৫০ টাকা,  কাতল মাছ ৪০০-৬৫০ টাকা, কালিবাউশ ৩৫০- ৭০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৭০০ -১০০০ টাকা, কাচকি মাছ  ৫০০-৬০০ টাকা, কৈ মাছ ৩৫০-৫০০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০-৭০০ টাকা, শিং মাছ ৩০০-৪০০ টাকা, বেলে মাছ ৬০০-১০০০ টাকা, টেংরা মাছ ৮০০ টাকা, কাজলি মাছ ১০০০ টাকা, বোয়াল মাছ ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ব্রয়লার মুরগি ১৫৮-১৭২ টাকা, কক মুরগি ২৪৫-২৫০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০-৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি ডজন লাল ডিম ১২০ টাকা, সাদা ডিম ১১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায় ব্রয়লার মুরগি ও কক মুরগির দাম কমে এসেছে।

মুরগি বিক্রেতা মো. হারুন বলেন, মুরগির দাম আসলে প্রতিদিনই উঠা-নামা করে। তবে এখন দাম কমের দিকেই আছে বলা যায়। এছাড়া গত সপ্তাহের মতো অপরিবর্তিত দামেই বিক্রি হচ্ছে মুদি দোকানের পণ্য। আজকে ছোট মুসরের ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মুসরের ডাল ১১৫ টাকা, মুগ ডাল ১৪৫ টাকা, খেসারি ডাল ৯৫ টাকা, বুটের ডাল ৯৫ টাকা, ছোলা ৯০ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৯ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, খোলা চিনি ১৪২, টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১২০ টাকা খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.