প্রশান্তি ডেক্স ॥ কুড়িগ্রামের উলিপুরের পান্ডুল ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) খাল খনন প্রকল্পের দুই ধারে রাখা মাটি লুট করে নিয়ে যাচ্ছে একটি চক্র। খালের দুই ধারে রোপণ করা বৃক্ষের সারি নষ্ট করে প্রতিদিন প্রকাশ্যে মাটি লুটের ঘটনা ঘটছে। এতে করে খাল খনন প্রকল্পের সুফল পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি খালের দুই ধারে রোপণ করা হাজারো বৃক্ষের চারা নষ্ট হওয়ার উপক্রমের পর্যায়ে।
পাউবো বলছে, ৬৪ জেলার অভ্যন্তরস্থ নদী-খাল ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে প্রায় পৌনে চার কোটি টাকা ব্যয়ে পান্ডুল ইউনিয়নের চন্ডিযান এলাকায় ওই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রকল্পের দুই ধারে প্রায় ১২০০ গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। কিন্তু প্রকল্প এলাকার দুইধার থেকে মাটি চুরি করে নিচ্ছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারি এই প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিন পান্ডুলের চন্ডিযান এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি প্রকল্প এলাকায় এক্সেভেটর দিয়ে খালের দুই ধারের মাটি তুলে তা ট্রাক্টর যোগে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। এই চক্রের মূলহোতা তালেব ওরফে টিয়া নামে এক ব্যক্তি। তিনি ওই খাল খনন প্রকল্পে ঠিকাদারের কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় যুবক আতাউর বলেন, ‘প্রতিদিন ট্রাক্টরে করে খালের দুই ধারের মাটি চুরি করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। স্থানীয়রা বাধা দিলেও লুটকারীরা তা শুনছেন না। দুই ধারের মাটি তুলে নিয়ে যাওয়ায় দুই ধারে লাগানো গাছের চারাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও মাটি সরিয়ে নেওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে খালের দুই ধারের আবাদি জমি ভেঙ্গে যেতে পারে। এতে খাল খননের সুফলের পরিবর্তে উল্টো স্থানীয়দের ভোগান্তি বাড়বে। এভাবে মাটি লুট করা বন্ধ করার দাবি জানাই।’
তবে অভিযুক্ত তালেব ওরফে টিয়ার দাবি, ‘আমি মাটি সরিয়ে নেওয়ার সঙ্গে জড়িত নই। স্থানীয় একটি মসজিদে কিছু মাটি নিয়ে যাওয়ার কথা শুনেছি।’
যদিও টিয়ার এমন দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেশিন দিয়ে মাটি লুটের মূলহোতা টিয়া নিজে। তার প্রত্যক্ষ মদতে মাটি লুট করা হচ্ছে।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘প্রকল্পের দুই ধারের মাটি চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। আমরা থানায় অভিযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এদিকে মাটি লুটের ঘটনার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে প্রকল্প এলাকায় যান উলিপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী মাহমুদুর রহমান। তিনি মাটি লুটের ঘটনায় জড়িত দুটি ট্রাক্টর হাতেনাতে আটক করেন।
সহকারী কমিশনার কাজী মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘মাটি লুটের মূলহোতাদের পাওয়া যায়নি। আমরা মাটি পরিবহনের দুটি ট্রাক্টর জব্দ করে নিয়ে এসেছি। জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজের পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’