ইউক্রেনে আরও দুই বছর যুদ্ধ করতে সক্ষম রাশিয়া: গোপন প্রতিবেদন

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ ইউক্রেনে আরও দুই বছর যুদ্ধ করার সক্ষমতা রয়েছে রাশিয়ার। গত বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) লিথুয়ানিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার একটি গোপন প্রতিবেদনে থেকে এই তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনটি প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, তেলের উচ্চ মূল্য, নিষেধাজ্ঞা ফাঁকি এবং রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগের কারণে ইউক্রেনে অন্তত আরও দুই বছর লড়াই চালিয়ে যেতে পারবে রাশিয়া।

২০২৩ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে তার যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সেনাবাহিনীকে সংস্কার ও আরও শক্তিশালী করেছে। এবার ফিনল্যান্ডসহ ন্যাটোর সীমান্তে তার সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর পথে রয়েছে দেশটি। ফিনল্যান্ড গত বছর পশ্চিমা এই সামরিক জোটে যোগ দিয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে রাশিয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘আগের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে যুদ্ধের নিজেদের কার্যকারিতা আরও উন্নত করতে পারবে মস্কো।’

এর আগে, গত মঙ্গলবার রাশিয়ার উত্তর এবং পশ্চিমে সীমান্তে রুশ সামরিক বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার কথা জানিয়েছিলেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ওই এলাকায় ন্যাটো বাহিনীর তৎপরতার প্রতিক্রিয়ায় এমন পদক্ষেপ নিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।

জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে যৌথ এই প্রতিবেদনটি তৈরী করেছেন কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স স্টেট সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট এবং মিলিটারির ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি সার্ভিস। তবে গত বৃহস্পতিবার সকালের ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তারা। এতদসত্ত্বেও এটি ফাঁস হয়ে যায়। তবে প্রতিবেদনটি কোন সূত্রের কাছ থেকে বা কীভাবে রয়টার্স সংগ্রহ করেছে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

রাশিয়া এবং তার মিত্র বেলারুশ উভয়ের প্রতিবেশী দেশ লিথুয়ানিয়া। একসময় রাশিয়ার অধীনে ছিল দেশটি। তবে বর্তমানে এটি ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য।

সংস্থাগুলোর মতে, ইউক্রেনে আক্রমণ করার পর দেশটির প্রতিরক্ষা শিল্পের উপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো এড়ানোর চেষ্টা করছেন রুশ গোয়েন্দারা।

ওই প্রতিবেদন থেকে আরও জানা গেছে, রাশিয়াকে প্রকাশ্যে শুধু ইরান এবং উত্তর কোরিয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ক্রমেই দেশটির মাইক্রোচিপগুলোর বৃহত্তম সরবরাহকারী দেশ হয়ে উঠেছে চীন। একইসঙ্গে ইউয়ান রাশিয়ার আন্তর্জাতিক লেনদেনের প্রধান মুদ্রা হয়ে উঠেছে।

লিথুয়ানিয়ার সংস্থাগুলো বলেছে, ২০২৩ সালে বেলারুশে সামরিক ওয়ারহেড মোতায়েনের পর থেকে সেখানে অবিচ্ছিন্নভাবে অবকাঠামো তৈরি করছে রাশিয়া।

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, সীমান্ত অতিক্রমকারী লিথুয়ানিয়ানদের নিয়োগের প্রচেষ্টা বাড়িয়েছে রুশ এবং বেলারুশীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এছাড়া, নগদ টাকার বিনিময়ে বেলারুশ গোয়েন্দাদের ডেটা সরবরাহ করার অভিযোগে ২০২৩ সালে বেশ কয়েকজন লিথুয়ানিয়ান নাগরিককে আটক করেছে লিথুয়ানিয়া কর্তৃপক্ষ।

চীনের বিষয়ে সংস্থাগুলোর পর্যবেক্ষণ বলছে, ২০২৩ সালে লিথুয়ানিয়ায় গুপ্তচরবৃত্তির প্রচেষ্টা বাড়িয়েছে দেশটি। ২০২১ সালে লিথুয়ানিয়া তাইওয়ানকে তার মাটিতে একটি ডি ফ্যাক্টো দূতাবাস খোলার অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এরপরই দেশটিতে গুপ্তচরবৃত্তির প্রচেষ্টা বাড়ায় চীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.