ধৈয্য ও পরীক্ষা শব্দ দুটি আলাদা হলেও প্রকারান্তরে দুটি শব্ধের অর্থ কিন্তু একটিই হয়। এই ধৈয্য সর্ব ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয় এবং পরীক্ষার মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে। পরীক্ষা দিতে হয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে তবে এই পরীক্ষার আবার স্তরবিণ্যাস রয়েছে। এইক্ষেত্রে বহুপাক্ষিক স্তরবিণ্যাস থেকে বাছাই করে দুটিকেই প্রধানতম হিসেবে বেছে নেয়া যায় এবং নেয়া হয়েছেও বটে। তবে এই ক্ষেত্রে একটি হলো দুনিয়াবি পরীক্ষা এবং আরেকটি হলো আখেরাতের বা খোদায়ী পরীক্ষা। এই দুই পরীক্ষায়ই উত্তীর্ণ হতে হয়। কোনটিকে বাদ দিয়ে কোনটিই নয়; যেন এই দুইটি পরীক্ষাই জমজ ভাইয়ের মত। খোদায়ী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে দুনিয়াবী পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হতে হয়।
ধৈয্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে। দুনিয়ার পরীক্ষা এমনকি আখেরাতের পরীক্ষা এই দুইয়ের জন্যই ধৈর্য্য সম গুরুত্বপূর্ণ। এইক্ষেত্রে কোনটিকে বাদ দিয়ে কোনটিকে বেছে নেয়া যায় এই ধরণের কোন সুযোগ নেই। বরং ধৈয্য ধারনের মাধ্যমেই শান্তি, স্থিতিশিলতা এবং নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তার মজুদ বৃদ্ধি করা যায়। পাশাপাশি এই ধৈয্যই মানুষকে আখেরাতের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সাহায্য করে। আখেরাত এবং দুনিয়ার এই দুই পরীক্ষার ক্ষেত্রে সমভাবে উত্তীর্ণ হওয়াই মহা সাফল্য এবং এই সাফল্যই জীবনকে আনন্দদায়ক করে শান্তি ও স্থিতিশীলতার মাধ্যমে আখেরী জীবন লাভের নিশ্চয়তার বিধান করে। তবে শুধু যে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মাধ্যমেই সব সফলতা আসে তা কিন্ত নয় বরং পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়ার মাধ্যমেও সফলতা আসে। এই ক্ষেত্রে ধৈয্য এবং সৃষ্টিকর্তার উপর ঈমান ও বিশ্বাস এবং এর যৌথ আমল বা প্রয়োগের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ্য ও পরোক্ষ করানো যায়।
জীবনের পরীক্ষা বিভিন্ন রকমের হয় তাই এই জীবনের শুধু পরীক্ষা দিয়ে যাও এবং পরীক্ষার ফলাফল দেখে পরবর্তী করনীয় ঠিক করতে ধৈয্যকে সঙ্গে নিয়ে সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস ও নির্ভরতায় অগ্রসর হওয়ার মাধ্যমে সফলতার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়া যায়। তবে ধৈয্য এবং পরীক্ষাবিহিন নেতিবাচক সফলতাও প্রত্যক্ষ করা যায় যা জীবনকে ক্ষনস্থায়ী আনন্দ দেয় এবং আখেরী জীবনের নিশ্চয়তা থেকে বঞ্চিত করে। তাই সকল নেতিবাচকতাকে পরিহার করে ইতিবাচকতায় নিয়োজিত হওন। এই প্রসঙ্গে মহান সৃষ্টিকর্তার একটি বানি উচ্চারণ করি “তোমাদের জন্য আমার পরিকল্পনার কথা আমিই জানি; সেই পরিকল্পনা তোমাদের মঙ্গলের জন্য, অপকারের জন্য নয় বরং সেই পরিকল্পনার মধ্যে দিয়েই তোমাদের ভবিষ্যতের আশা পূর্ণ হবে।” হ্যা তাই যেন হয়। সর্বক্ষণ পরীক্ষায় ধৈয্য ধারন করে সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায় বুঝে এবং তাঁর ইচ্ছানুযায়ী অগ্রসর হয়ে ভবিষ্যতের সকল ইতিবাচক আশা পূর্ণ করি এবং আখেরাতের নিশ্চয়তা বিধান সুনিশ্চিত করি।
বর্তমানে আমাদের করনীয় আগামীর তরে একটিই আর তা হলো পরিপূর্ণ সফলতা। আর এই সফলতায় পৃথিবীর সকল মানুষের কল্যাণের তরে। শুধু ব্যক্তিকল্যাণের জন্য নয়। বরং সকল সৃষ্টির কল্যাণের তরে। যেমনি করে মহান মহিয়সীরা বলে গেছেন “সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে”। হ্যা এই বাণির আলোকে সাজিয়ে তুলি আমাদের জীবন ও কর্ম এবং চিন্তা আর পরিকল্পনা। তাহলেই স্বার্থকতা পরিলক্ষিত হবে যা সার্বজনিন কল্যাণে নিবেদিত ও নিয়োজিত। আসুন সকল কিছু ভেবে সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভের নিমিত্তে এই মহা জগতের কল্যাণে নিজেদেরকে নিয়োজীত করি। স্ব স্ব দেশের কল্যাণে ও স্ব স্ব দেশের সেবার দায়িত্বে নিয়োজিতরা মনোনিবেশ করি এবং বিশ্ব নের্তৃত্বের অবস্থানে অধিষ্ঠিতরা যেন সৃষ্টির কল্যাণের কথা চিন্তা করে সেবার মনোভাব বৃদ্ধিতে মনযোগ দিয়ে কর্ম সম্পাদন করেন। কোন অযুহাতে যেন অকল্যাণের উদ্দেশ্যে ধ্বংশ বা বিনাশে মনযোগ না দেন। নিজ স্বার্থ্য হাসিলের প্রয়োজনে যেন কোন পদক্ষেপ না নেন এই আহবান চিরায়ত এবং সেই চিরায়ত আহবানে সঙ্গে আমি সুর মিলিয়ে বিনিত আরজি বা মিনতি জানাচ্ছি এই বলে ফিরে আসুন সৃষ্টিকর্তার অতি উত্তম অবস্থানে। ফিরে আসুন চমৎকার জিবনে। পৃথিবীর সকল কিছু সৃষ্টি করে সৃষ্টিকর্তা ভালকরে দেখে একটি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন যা ছিল চমৎকার বা অতি উত্তম। হ্যা আজ আমরা হারিয়েছি সেই চমৎকারিত্ব এবং অতি উত্তম অবস্থান। তাই বিচলিত না হয়ে বরং ধৈয্য ও পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে সেই হারিয়ে যাওয়া চমৎকারিত্ব ও অতি উত্তম অবস্থান ফিরিয়ে আনি। সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো মানুষের কল্যাণে সেবাব্রত শতভাগ পালন করা। কারণ এই সেবাব্রত শতভাগ পালন করার ক্ষেত্রেই যত বাধা এবং বিপত্তি। সেই ক্ষেত্রে ধৈয্য ও পরীক্ষার বেড়াজাল পলকে পলকে। তাই আগামীর কল্যাণে এবং সৃষ্টিকর্তার অভীপ্রায়ের নিমিত্ত্বে শতভাগ সেবাব্রত পালন এখন কঠিণ প্রতিবন্ধকতার সম্মুক্ষিন। তাই সরকারকে তার জনগণের মৌলিক ও মানবিক অধিকারগুলো সুরক্ষায় এবং পর্যাপ্ত উপকরণে জনসন্তুষ্টি নিয়ে আসা জরুরী। দৃশ্যমান বাস্তবতায় করনীয় কি তা সরকার জানে এবং কিভাবে উৎরে সামনে অগ্রসর হতে হবে তাও খুজে বের করতে হবে। এইক্ষেত্রে সকলের সহযোগীতা ঐকান্তিক। কিন্তু গ্রহনে বা বর্জনে ঐ শতভাগ সফলতার ব্রত বাধাগ্রস্থ হয়ে থাকে। একার পক্ষে যা সম্ভব নয় তা দশের পক্ষে সম্ভব আর এই কারণেই মহামনিষিরা বলে গেছেন “ দশের লাঠি একার বোঝা”। “দশে মিলে করি কাজ হারি যেতে নাহি লাজ”। তাই আরো বলতে চাই যে, সৃষ্টিকর্তা বলেছেন এবং করেছেন। বহুবংশ; এই বহুবংশ সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা ও অভিপ্রায় এবং আমাদেরকে দিয়েছেন এই সৃষ্টির অধিকার। কারণ একার পক্ষে পৃথিবীর দেখাশুনা সম্ভব নয় তাই বহুবংশ বহুসংখ্যা জনসংখ্যাধিক্য সৃষ্টিকর্তার পরিকল্পনার ফসল। তাই একজন আরেক জনের পরিপূরক হয়ে কাজ করতে হবে এবং একজন আরেকজনের কাছ থেকে জ্ঞান ও বুদ্ধি বিবেচনা এবং সু পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই শতভাগ সেবাব্রত পালন সফল হবে। এই ক্ষেত্রে ধৈয্য ও পরীক্ষা সমান্তরালে কাজ করবে এবং ধৈয্যকে প্রাধান্য দিয়ে পরীক্ষাকে মোকাবিলা করে সামনে অগ্রসর হতে হবে। তাহলেই সরকার ও দেশ এবং জনগণ সেবাব্রত’র শতভাগ সুফল ভোগ করে আগামীর দৃষ্টান্ত হিসেবে অগ্রসর হবে। আসুণ আমারা সকলেই সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে পাওয়া সেবাব্রত এবং দায়িত্বগুলোকে ধৈয্য ও পরীক্ষার মানদন্ডে ব্যবহার করি এবং সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়ের আলোকে কায্যে পরিণত করি।