প্রশান্তি ডেক্স ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল বা অংশ যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সঙ্গে উৎপ্রোতভাবে জড়িত। কসবায় জন্মগ্রহণ করেছেন বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ যারা কসবাকে করেছেন গৌরবান্বিত ও প্রশংসিত। যাদের প্রচেষ্টায় আজ আমরা ধন্য এবং গর্ব করে বলতে পারি আমরা কসবার তথা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার। স্বাধীনতা এবং সংবিধান ও বিভিন্ন অঙ্গে সংযুক্ত থেকে কসবার কৃতি সন্তানরা কসবাকে করেছেন ধন্য। সেই স্বাধীনতা পূর্ব থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত একই ভুমিকা পালন করে যাচ্ছেন কসবার মেধাবী কৃতি সন্তানগণ।
কসবার রাজনীতি ছিল বহুল আলোচিত এবং শৃঙ্খলিত এবং দলীয়ভাবে বিভিন্ন সংগঠনগুলো ছিল মজবুত ও ঐক্যবদ্ধ। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এমনকি বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পরও দলীয়ভাবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে একে অন্যের পরিপুরক হয়ে কাজ করেছে। আজও অব্দি সেই দলীয় ঐক্য রয়েছে কিন্তু নের্তৃত্বের ক্ষেত্রে বিভক্তির চিহ্ন ফুটে উঠেছে বারবার। এই চিত্র কিন্তু একক ও একচ্ছত্র অধিপত্যের কারণে। দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের মূল্যায়ন না করা এমনকি মুরুব্বী ও সম্মানীতদের সম্মান না দেয়ার রেয়াজ যেন এখন ভদ্রতার চর্চায় পর্যবসীত হয়েছে। একে অন্যকে ক্ষেয় করার জন্য বাক্যযুদ্ধে অবিতীর্ণ হয়েছে। তবে একটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের এই বিভক্তির চিত্র ভালোভাবে ফুটে উঠেছে এবং আপন ও পর এমনকি দলের নি:স্বার্থ, নি:লোভ কর্মীদের চিনার সুযোগ হয়েছে। কাদের জন্য; কার জন্য এই বিভক্তি তাও সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, দলের প্রয়োজনে ঐ বিভক্তি ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ ছিল। কিন্তু এখন সুযোগ পেয়ে সেই বিভক্তির ফাটল প্রকাশ্যে এসেছে।
মাননীয় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী একজন অমায়িক মানুষ এবং তাঁর বাবার পরিচয়, বংশ এবং আন্তরিকতা ও বন্ধুসুলভতা এই মানুষটিকে হৃদয়ের টানে এবং মাটির টানে আপন করে রেখেছে কসবা-আখাউড়াবাসী। কোন কিছুর আশায় নয় বরং প্রয়োজনে পাশে থাকার মানষিক ও স্বক্রীয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে বার বার। এই মানুষগুলো শুধু প্রয়োজনেই পাশে উপস্থিত হয় এবং প্রয়োজন শেষে নিজ নিজ কাজে নিয়োজিত থাকে কিন্তু সকল খোজ খবর রাখে এবং প্রয়োজনীয় সময় গিয়ে আবারো হাজির হয়। তবে মন্ত্রীমহোদয়ের হৃদয়ের কাছের বা আপনজন মন্ত্রীমহোদয়ের নিকট কোন উপকারের আশায় খুব কমই মুখোমুখি হয়। তাই আজকে বলার সুযোগ এসেছে ঐ মানুষগুলোকে স্বেচ্ছায় সম্মানীত করার এবং মৌখিক ভালবাসাটুকু প্রকাশ করার।
আমি সেই সিরাজুল হক সাহেবের নির্বাচন থেকে অদ্যাবদি পর্যন্ত নিজের ইচ্ছায় এবং আগ্রহে আর অর্থায়নে নির্বাচন করে আসছি এবং সেই পরিবারের সঙ্গে আত্মার বন্ধনে আবদ্ধ থেকেছি। মরহুম সিরাজুল হক সাহেব আমার খুবই প্রীয় এবং আস্থাভাজন অত্যান্ত কাছের মানুষ ছিলেন। তিনি সবসময়ই আমার খোজ খবর রাখতেন। হক সাহেবের নির্বাচনে প্রচারণার সময় একদিন সৈয়দাবাদ বাসষ্ট্যান্ডে এক উদ্মাদ পাগল (খায়ের সাহেব) যিনি মদ খেয়ে হক সাহেবের গাড়ি থামিয়ে মাতলামী করছিলেন। এই খবর সৈয়দাবাদ কলেজ পর্যন্ত পৌছালে আমি দৌঁড়ে এসে সেই মাতালকে ধরে দুরে নিয়ে যায় এবং গাড়িটি পুনরায় যাত্রা করে প্রচারণা চালিয়েছে। পরেরদিন আমি পানিয়ারূপ পৌছালে প্রথমে নানার বাড়িতে যায় এবং কিছুক্ষণ পর জনাব সিরাজুল হক সাহেবের বাড়িতে গিয়ে দেখা করি এবং তিনি আমাকে বুকে জড়িয়ে বলে এই কারণেই তোকে আমি ভালবাসি। মরহুম মুক্তিযোদ্ধা জাহানারা হক আমাকে মাথায় হাত বুলিয়ে বলে তুই অনেক বড় হবি। তোর জন্য দোয়া করি আর যেকোন সময় আমাদেরকে তোর কাজে কাছে পাবি। কতো চমৎকার সম্পর্ক ছিল এবং আজো আছে কিন্তু আমার প্রীয় মানুষগুলো বাস্তবে নেই। আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করুন।
পরবর্তীতে একটি ঘটনা যা আমাকে সারাজীবন সম্মানিত করে কৃতজ্ঞতাপাশে থাকতে বাধ্য করে যাচ্ছে। ঘটনাটি হলো আমাদের মসজিদের মোয়াজ্জিন সাহেবের বোন জামাই এবং এদের পরিবারের বাকী ৫জনসহ মোট ৬ জনের একটি মামলায় যাবৎজ্জীবন সাজা হয়েছিল। মোয়াজ্জ্বিন আমাকে দু:খ করে এই ঘটনাটি বলে এবং তারা ছিল হুবই দরিদ্র। তখন আমি পরামর্শ ও একটি চিঠি দিয়ে পাঠাই মরহুম এডভোকেট সিরাজুল হক সাহেবের কাছে। ক্ষুদ্র আমার সেই চিটির মূল্যায়নে আমার আত্মার আত্মীয় জনাব সিরাজুল হক সাহেব ঐ মামলাটি নিলেন আর মামলা শেষ করার জন্য মোট খরচ ৫০ হাজার টাকা নিলেন এবং ঐ ৬ জনকে মামলার সাজা থেকে মুক্ত করে দিলেন। এই সম্মানটুকু আমি মৃতুর পরও মনে রাখব। তবে মুক্ত হওয়া ৬ জনের মুখ থেকে বিশেষ করে এনামুলের মুখ থেকে শুনে আমি বিস্মিত হয়েছি। তিনি বলেন চিঠি পড়ে স্মৃত হেসে বলেন ঠিক আছে আমি মামলাটি নিব এবং মোট খরচ হবে ৫০০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা। দিতে পারবেন? তারা বলল কষ্ট হলেও দিব। আর পঞ্চাশ হাজার টাকা নেয়ার সময় বর্তমান আমার অভিভাবক বলেছিলেন এত কম টাকায় কি মামলা নেয়া যায় এবং তখন মরহুম সিরাজুল হক সাহেব বলেছিলেন নিতে হবে এবং শেষও করতে হবে।
আরেকটি স্মৃতি মনে আছে পানিয়ারূপের সবাই আমার আত্মীয় কারণ আমার নানার বাড়ি পানিয়ারূপ। প্রথম বছর মন্ত্রীমহোদয় দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেন এবং অনেক দিন আগ থেকেই পানিয়ারূপ গ্রামের কাসেম সাহেব যাকে আমি কাসেম মামা বলেই ডাকি। সেই কাসেম মামার পরিবারকে সম্পূর্ণরূপে দায়িত্ব নিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসেনে বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহানারা হক এবং সিরাজুল হক সাহেব। সেই থেকেই তারা মানুষ হয়েছে সম্পূর্ণ হক পরিবারের অর্থায়নে ও আশ্রয়ে। একজনকে বিদেশও পাঠিয়েছেন। রাসেলকে ডিপ্লোমা পাস করিয়ে মরহুমা জাহানারা হক আমাকে বলেছিলেন তোর অফিসে তাকে একটি চাকুরি দিয়ে দে আমি তোর জন্য দোয়া করব এবং আমি চিন্তামুক্ত হব। আমি চেষ্টা করেছি কিন্তু পরক্ষণে আমার আপনার সকলের অভিভাবক তাকে সরকারী চাকুরী দিয়ে দিয়েছেন। সবাই জানেন যে জনাব হক সাহেবের পরিবার এইভাবেই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। জনাব আনিছুল হক সাহেবের পরিবারের সকল কিছুর সঙ্গেই আমার যোগাযোগ সম্বন্ধ ছিল এবং আছে ও থাকবে কিন্তু কোন কিছু পাওয়ার আশায় নয় বরং নি:স্বার্থভাবে পাশে থাকার জন্য আর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য।
জনাব হক সাহেবের সকল নির্বাচনেই অংশ নিয়েছি, পাশে থেকেছি বিজয় ছিনিয়ে এনেছি আর ভবিষ্যতেও থাকব। তবে এইবারের নির্বাচনে বিজয়ের রাতে বিষম অসুস্থ্য হয়ে ঢাকায় ফিরেছি। ধীরে ধীরে সুস্থ্য হয়ে এখন জীবনের গতিময়তা ফিরে পেয়েছি। নির্বাচন শুরু থেকে- যখন নমিনেশন জমা দেওয়া ও দলীয় নমিনেশন পাওয়া পর্যন্ত কাছ থেকে জনাব আনিছুল হক সাহেবকে সময় দিয়েছি। হৃদয়ের কাছের মানুষ হিসেবে। এইবারের নির্বাচন মনোনয়ন চুড়ান্তের দিন দুপুর বেলায় জনাব হক সাহেব আমাদেও সাথে আমরা ৮/৯ জনের সঙ্গে) একান্ড আলাপচারিতায় অনেক কথা বলার ফাকে তিনি একটি কথা বলেন যে, আমি আমার আপনজনকে ভালবাসি এবং শান্তিও দেয়। ঐ কথাটি আমার খুব ভাল লেগেছে। কারণ শাসন করা তাঁরই সাজে সোহাগ করে যে। হ্যা তিনি তাই। সকলের অভিভাবক। আমরাও বিশ্বাস করি এবং মনে প্রাণে ওনার কথা পালন করি আর জীবনের শেষঅব্দি করব। ওনার জন্য যা যা করার প্রয়োজন তাই করব এবং ওনাকে স্বমহিমায় সুনামের সঙ্গে সামনে এগিয়ে যাওয়ায় পাশে থাকবে। রনিভাইসহ ঐ পরিবারের সকলের সঙ্গে জড়িত অনেক স্মৃতিই মাঝে মাঝে আপ্লুত করে আর তখন স্মৃতির জানালা খুলে সবই দেখি।
আজ একটি কথাই বলব কেউ আপনার কাছের নয় বরং সবাই আপনার কাছের এই ভেবে নিয়ে সকলকেই আলিঙ্গনে আবদ্দ রাখবেন। সকলের কথাই শুনে সকলকেই যার যার প্রাপ্যস্থানে অবস্থান করাবেন। কাউকে বেশী এবং কাউকে কম নয় এমনকি কারো কথায় কাউকেই দুরে ঠেলে দিবেন না। এটা আমার অনুরোধ ও চাওয়া। বর্তমান কসবা উপজেলা নির্বাচন আপনাকে অকেন কিছুই দৃশ্যমানভাবে বুঝতে ও জানতে সহায়তা করবে এবং কাছের ও দুরের এমনকি নি:স্বার্থ পরিজনদের বুঝতে সাহায্য করবে। তাই দৃষ্টি রাখুন এই নির্বাচন ঘিরে সকল কর্মকান্ডে এবং একটি স্বার্থক নির্বাচনের মাধ্যমে আপনি আবারো জনতার চাওয়াকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করুন। যেমনি করেছিলেন গত ইউপি নির্বাচনে। এবারও সেই প্রত্যাশা করি। আমার কোন চাওয়া-পাওয়া নেই বরং আপনার সঙ্গে যুক্ত থেকে এগিয়ে যাওয়ার আশাটুকু কর্মের মাধ্যমে জীবিত রাখব ইনশাআল্লাহ। শুরুতে ছিলাম এখনও আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব এই নিশ্চয়তা শতভাগ রেখে বিদায়— ভাল থাকেন সবাই এবং সুস্থ্য থাকেন এমনকি সকলকে সুস্থ্য রাখেন।