ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ কসবার কুটি ইউনিয়ন দক্ষিণখার গ্রামের প্রান্ত্রিক চাষী মুছা মিয়া হত্যার ঘটনায় ২০ জনকে আসামী করে কসবা থানায় মামলা করেছেন তার স্ত্রী নাজমা আক্তার। গত শনিবার রাতে পুলিশ নিহত মুছার লাশ হস্তান্তর করেলে রাতেই তাকে দক্ষিণখার পারিবারিক গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
নাজমা আক্তারের দায়ের করা অভিযোগ ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মুছা মিয়ার সঙ্গে গ্রামের বাচ্চু মেম্বারসহ কিছু লোকের পূর্ব শত্রুতা ছিল। একই গ্রামে ৮ বছর পূর্বে শিশু শাহপরান হত্যার এক নম্বর স্বাক্ষী ছিলেন মুছা মিয়া । মামলাটি ব্রাক্ষণবাড়িয়া আদালতে বিচরিাধীন এবং গত রবিবার এই মামলার স্বাক্ষ্য হওয়ার কথা। মামলায় মুছা মিয়া ছিলো প্রধান স্বাক্ষী। প্রধান স্বাক্ষীকে ম্যানেজ করতে না পেরে হত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলে দাবী মুছার স্ত্রীর। তিনি জানান, হত্যা কান্ডের একদিন পূর্বে ২৮ মার্চ রাতে একই গ্রামের বাচ্চু মেম্বার, সেন্টু মেম্বার, রুহুল আমিনসহ আসামীরা গোপন সভা করে মুছাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করে।
দক্ষিণখার গ্রামের জিলানী মিয়া, স্বপন মিয়া, আলমগীর মিয়া, সোহেল মিয়াসহ আরো অনেকেই বলেন, শিশূ শাহপরান হত্যাকান্ড ছাড়াও অতীতে আরো দুটি যথাক্রমে হেলন মিয়া ও সেলু মিয়াকে খুন করা হয়েছিলো। সেন্টু মেম্বার ও বাচ্চু মেম্বার এ সমস্ত হত্যাকান্ডের নেপথ্যের নায়ক। এরা বলেন গ্রামে কোন্দল তৈরি করে খুন-খারাপি ঘটিয়ে নিজেরা চাদাঁবাজি করে প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে এবং নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে এই চক্রটি।
গ্রামের এ সমস্ত লোকেরা আরও বলেন যে, পত্তনের জমির প্রকৃত মালিক হলেন মৃত তৌহিদ মিয়ার পুত্র আবু হানিফ। রুহুল আমিন ওই জমির কেউ নয়। তাকে সাবেক ইউপি সদস্য সেন্টু মিয়া ও বর্তমান ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়াসহ অন্যান্যরা মুছা মিয়াকে হত্যা করার জন্য প্রলুব্দ করেছে। জানা যায়, রুহুল আমিন নিজে নেশাগ্রস্ত। সে জমির পত্তনের টাকা গ্রহন করার কেউ নয়।
জনু মিয়া বলেন, দুহাজার টাকা জমির মালিককে দেয়া হয়েছে। বাকী একহাজার টাকার জন্য খুন করা হয়েছে বিষয়টি রহস্যাবৃত। এটা কোনো ক্রমেই আমরা গ্রামবাসী মানতে পারছি না। গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য সেন্টু মিয়া ও বর্তমান ইউপি সদস্য বাড়িতে নেই। মুঠো ফোনে (০১৮৫৫ ৩৬৭১৪১) কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন আমি বাচ্চু মেম্বার না। এর পর ফোনটি কেটে দেন।
এ সমস্ত বিষয়ে কুটি ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান স্বপন বলেন, সবাই আমার লোক। পুলিশের দায়িত্ব কারা ঘটনায় দোষী এটা বের করা। আমি এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।
কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজু আহমেদ বলেন, নিহত মুছা মিয়ার স্ত্রী নাজমা আক্তার বাদী হয়ে ২০ জনকে আসমী করে থানায় মামলা দায়ের করেছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলেছে।