প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ বাংলাদেশে গত প্রায় মাস তিনেক ধরে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে যে কথিত ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারণা চলছে, ভারত সরকার গত বৃহস্পতিবার তা পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছে যে তারা সেটিকে বিন্দুমাত্র আমল দিতেও রাজি নয়।
গত বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিকালে দিল্লিতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকে এই ‘ইন্ডিয়া আউট’ ক্যাম্পেইন নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সটান জানিয়ে দেন, দুদেশের সম্পর্ক যেমন চলছে, তেমনই চলতে থাকবে। অর্থাৎ কিনা, তিনি বোঝাতে চেয়েছেন এই জাতীয় প্রচারণার কোনও প্রভাব দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আদৌ পড়বে না।
দিল্লিতে এদিনের সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্নোত্তর পর্বটি যেমন ছিল, তা নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো:
সাংবাদিকের প্রশ্ন: ‘বাংলাদেশে গত বেশ কিছু দিন ধরে তথাকথিত ‘ইন্ডিয়া আউট’ নামে একটি ক্যাম্পেইন চলছে, যাতে মূলত ভারতের পণ্য বয়কট করার ডাক দেওয়া হচ্ছে। সে দেশের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন বিরোধী নেতাও সেটাতে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন। আপনি কি এই আন্দোলন নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইবেন? আর দ্বিতীয়ত, এর ফলে বাংলাদেশে ভারতের রফতানির পরিমাণে কি কোনও প্রভাব পড়ছে?’
মুখপাত্রের (রণধীর জয়সওয়াল) জবাব: ‘দেখুন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক আসলে খুব শক্তিশালী ও গভীর একটি সম্পর্ক। আমাদের দুই দেশের মধ্যে আসলে একটি কম্প্রিহেনসিভ পার্টনারশিপ (সর্বাত্মক অংশীদারি) আছে, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত।’
‘অর্থনীতি থেকে শুরু করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ থেকে শুরু করে উন্নয়ন সহযোগিতা, কানেক্টিভিটি থেকে শুরু করে পিপল-টু-পিপল কনট্যাক্টু মানবজীবনের যেকোনও ক্ষেত্রে আপনি যেকোনও একটা বিষয়ের নাম করুন, দেখবেন সেটা কিন্তু ভারত-বাংলাদেশের সামগ্রিক সম্পর্কের অংশ।’
‘আমাদের দুই দেশের অংশীদারিত্ব ঠিক এতটাই প্রাণবন্ত। আর এই ধারা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে।’ তবে ওই প্রচারণার কোনও প্রভাব বাংলাদেশে ভারতের রফতানি বাণিজ্যে পড়ছে কিনা, সেই নির্দিষ্ট কোনও প্রশ্নের জবাব তিনি দেননি।
প্রকাশ্যে এই মন্তব্যটুকুর মধ্যে নিজেদের প্রতিক্রিয়া সীমাবদ্ধ রাখলেও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সূত্রে আরও বলা হচ্ছে, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্যরা যেভাবে ‘ইন্ডিয়া আউটের’ দফারফা করে ছেড়েছেন, তাতে ভারতের আলাদা করে আর কিছু বলার দরকারই নেই! ‘প্রধানমন্ত্রী হাসিনা যেভাবে প্রকাশ্যে বলেছেন বিএনপি নেতারা আগে নিজের স্ত্রীদের ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে দেখান (তাহলে বিশ্বাস করবো), তাতেই বোঝা যাচ্ছে এই প্রচারণা কতটা ভুয়া বা অন্তঃসারশূন্য! আর এরকম বলিষ্ঠ ভঙ্গিতে এটাকে নস্যাৎ করতে বোধহয় শুধু তিনিই পারেন। এরপর আর আমাদের নতুন করে আর কিছু বলার দরকারও নেই’ বলছিলেন দিল্লিতে ভারতের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা।