প্রশান্তি ডেক্স ॥ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির নামে নকল ভ্যাকসিন তৈরি করে ফার্মেসিতে বিক্রি করে আসছিল একটি প্রতারক চক্র। রাজধানীর কেরানীগঞ্জে এ সব ভ্যাকসিন তৈরি করা হতো। গত সোমবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে মিন্টু রোডে ডিবির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও মহানগর গয়েন্দাপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।
এর আগে, গত রবিবার (৭ এপ্রিল) ঢাকার কোতোয়ালি ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন মো. আনোয়ার হোসেন (৪৪), অসিম ঘোষ (৪৬), মো. মশিউর রহমান ওরফে মিঠু (৩৮) ও নূরনবী। এ সময় চার লাখ ভেজাল ভ্যাকসিন উদ্ধার করা হয়।
জব্দ ওষুধ: মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, ‘সম্প্রতি ডিবি পুলিশের অভিযানে প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের নকল ওষুধসহ একটি বড় চক্র গ্রেফতার হয়। তারা কুমিল্লা ও সাভারে বসে নকল ওষুধ বানিয়ে সারা দেশে সাপ্লাই দিতো। এরইমধ্যে আমাদের কাছে খবর আসে তাদের সহযোগীরা মিটফোর্ড থেকে ওষুধের কাঁচামাল সংগ্রহ করে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ইনজেকশন তৈরি করে বাজারজাত করছিল।’
তিনি বলেন, ‘পরে অভিযান চালিয়ে ভ্যাকসিন তৈরি চক্রের চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। চক্রটি টিটেনাস দিয়ে হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন বানাতো, ভিটামিন বি৩ বানাচ্ছিল অ্যাট্রোপিন দিয়ে এবং ক্লোপিকজল বানাচ্ছিল ইন্ডিয়ান ডায়াজিপাম অ্যাম্পুল দিয়ে।
তিনি বলেন, ‘এসব নকল ওষুধ অধিক লাভে বিক্রি করতো তারা। ১০ টাকা দিয়ে টিটেনাস কিনে হেপাবিগ বানিয়ে ৪ হাজার ৬০০ টাকায়, পাঁচ টাকায় ক্লোপিকজল বানিয়ে ডেনমার্কের ওষুধ বলে বিক্রি করতো ৪৫০ টাকা। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের প্রয়োগ করা রোসোগাম পি ১০ টাকার অ্যাট্রপিন দিয়ে তৈরি করা হতো। প্রতিটি রোসোগাম বাজারে সাড়ে চার হাজার টাকায় বিক্রি করতো। এভাবে বিভিন্ন ওষুধ নকল করে বাজারে ছড়িয়ে দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল চক্রটি।’ ডিএমপির গোয়েন্দাপ্রধান বলেন, ‘এসব নকল ওষুধের কার্যকারিতা না থাকায় সাধারণ মানুষ কোনও সেবা পেতো না বরং নানাভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতো। তারা এমনভাবে এসব ওষুধ মোড়কজাত করতো, সাধারণ মানুষের চেনার উপায় নেই কোনটা আসল আর কোনটা নকল।