প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ পশ্চিমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাইলে চীনকে অবশ্যই ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সমর্থন করা বন্ধ করতে হবে। গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ এই কথা বলেছেন। এসময় চীনের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, একইসঙ্গে উভয় পক্ষের সুবিধা ভোগ করতে পারে না চীন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
বার্লিন পরিদর্শনের সময় ন্যাটো মহাসচিব বলেন, সেমিকন্ডাক্টরের মতো হাই-এন্ড প্রযুক্তি সরবরাহের মাধ্যমে রাশিয়ার যুদ্ধকালীন অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রেখেছে চীন।
এ বিষয়ে স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘গত বছর চীন থেকে ৯০ শতাংশ মাইক্রো-ইলেক্ট্রনিকস উপাদান কিনেছে রাশিয়া। এগুলো ব্যবহার করে ক্ষেপণাস্ত্র, ট্যাংক এবং বিমান তৈরি করেছে দেশটি। এছাড়া, রাশিয়াকে উপগ্রহ সক্ষমতা এবং ছবি সরবরাহের বিষয়েও কাজ করছে চীন।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, চীন বললো পশ্চিমের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় তারা। একইসঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় সশস্ত্র সংঘাতের আগুনে ঘি ঢালছে দেশটি। তারা দুই নৌকায় পা দিয়ে চলতে পারে না।’
রাশিয়ার মতো চীনে ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমাতে পশ্চিমা মিত্রদের সতর্ক করেছেন স্টলটেনবার্গ। তিনি বলেন, ‘অতীতে রাশিয়ার গ্যাস এবং তেলের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার মতো ভুল আমরা করেছি। চীনের ক্ষেত্রেও একই ভুল করা আমাদের উচিত হবে না। দেশটির অর্থ, কাচামাল, প্রযুক্তি…এসবের ওপর নির্ভরশীলতা আমাদের দুর্বল করে দেয়।’
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা চীন এবং রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। বিশেষ করে ইউক্রেনে যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার ওপর একাধিকবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশগুলো। তখন নিজেদের মধ্যকার বাণিজ্য ও সামরিক সম্পর্ক আরও মজবুত করে ফেলে রাশিয়া ও চীন।
চীনা কাস্টমস ডেটা অনুসারে, ২০২৩ সালে ২৪ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি রেকর্ড বাণিজ্য করে চীন ও রাশিয়া। এই সংখ্যা এক বছর আগের তুলনায় ২৬.৩ শতাংশেরও বেশি। ২০২৩ সালে রাশিয়ায় চীনা চালান এক লাফে বেড়ে ৪৬.৯ শতাংশ হয়েছে। এসময় দেশটিতে রাশিয়া থেকে আমদানি বেড়েছে ১৩ শতাংশ।
গত মাসে রয়টার্স জানিয়েছিল, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করতে মে মাসে চীন সফরে যাবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এমনটি হলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নতুন মেয়াদে এটি ই হবে তার প্রথম বিদেশ সফর।