প্রশান্তি ডেক্স ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ হত্যার জবাব চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সেই দেশে মানবাধিকার কতটুকু আছে সেটাই প্রশ্ন? কথা বলার স্বাধীনতা কতটুকু আছে সেটাই প্রশ্ন? অন্যায়ের প্রতিবাদ করার অধিকার কতটুকু আছে সেটাই প্রশ্ন? বাংলাদেশের ওপর মানবাধিকারের রিপোর্ট লেখে, নিজেদের আয়নায় চেহারা দেখে না, এটাই প্রশ্ন?
গত মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলবিরোধী আন্দোলনে পুলিশি হামলার ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা যেভাবে আচরণ করে, সেভাবে আমাদের পুলিশ তো করেনি। ধৈর্যের পরিচয় দিতে গিয়ে উল্টো বিএনপির হাতে মার খেয়েছে। আজকে আমেরিকার কোনও পুলিশের ওপর কোনও দলের লোক যদি হাত দিতো, তখন তারা কী করতো? প্রতিনিয়ত আমাকে হত্যা করবে, আমাদের ক্ষমতা থেকে হটাবে, আবার ১৫ আগস্ট ঘটাবে। তা আমরা অনবরত শুনেই আসছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বাঙ্গালি মারা গেছে। সেদিনও দুজন মারা গেলো। আমি প্রতিবাদ জানাই। তারা জীবন-জীবিকার জন্য গেছে। কিন্তু তাদের এভাবে হত্যা করবে কেন? তারা তো কোনও অপরাধ করেনি। বাচ্চা ছেলেও তাদের হাত থেকে রেহাই পায় না। প্রেসিডেন্টকে কী বলেছে, এ জন্য ঘরে ঢুকে তাকে হত্যা করেছে। কী জবাব দেবে? যারা এখন মানবাধিকারের গীত গায় এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার খুঁজে বেড়ায়, তারা কী জবাব দেবে, আমি সেই জবাব চাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানবাধিকার সংস্থা, বিচার বিভাগ যারা আমাদের নিষেধাজ্ঞা দেয়, আমাদের ওপর খবরদারি করে, তাদের কাছে জবাব চাই। সেখানে আমার বাঙ্গালি কেন মারা যাবে? ওই রকম ছোট্ট একটা শিশুকে মায়ের কোল থেকে নিয়ে হত্যা করা, শিক্ষকদের ওপর নির্যাতন করা, এর জবাব আমরা চাই। এটা তো সম্পূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘন করা।’
বাংলাদেশের পুলিশ ধৈর্যের পরিচয় দেয় বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২০১৩-১৪ সালে পুলিশের ওপর হামলা সবাই দেখেছে। বেশি দূর যেতে হবে না গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে ঘটনা ঘটালো, মানুষ হত্যা, রেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারা। সেগুলো তো তারা করেছে। বেচারা পুলিশদের দোষটা কই? তাদের ওপর লাঠিসোঁটা দিয়ে হামলা তো কল্পনা করা যায় না। অ্যাম্বুলেন্স, পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন, হাসপাতালে আক্রমণ। ইহুদিরা যেভাবে ফিলিস্তিনে ঘটিয়েছে, ঠিক তেমনই বিএনপি বাংলাদেশে ঘটিয়েছে। এটা ভোলা ঠিক না।’
দাবদাহে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি বৃষ্টি হবে।’
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে শুরু হওয়া সভায় সভাপতিত্ব করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন।