প্রশান্তি ডেক্স ॥ চার বছর আগে এক শিশুকে মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার আশ্রমে দেয়া হয়। সম্প্রতি সেই শিশুকে পাওয়া যাচ্ছে না এমন অভিযোগে আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা করা হয়। সেই মামলায় মিল্টন সমাদ্দারের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ডে পেয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) চার দিনের রিমান্ড শেষে মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর জোনাল টিমের সাব-ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ কামাল হোসেন। আবেদনে তিনি বলেন, রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার স্বীকার করে, ওই শিশুকে মিরপুর এলাকার জসিম বাবুর্চি নামক এক ব্যক্তিকে দান করেছেন। তবে তিনি বিধি মোতাবেক আদালতের অনুমতি না নিয়ে, মামলার বাদীকে অবহিত না করে বাচ্চাটিকে দান করেছেন। তার প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জসিম বাবুর্চির ভাড়া বাসা মিরপুরের কল্যাণপুরে গেলে কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
এরপর যে শিশুকে ডিবি পুলিশ খুঁজে পায়নি, পালিত বাবা-মায়ের সঙ্গে আদালতে হাজির হয় ৬ বছরের শিশু ফুয়াদ। তাকে আদালতের সামনে উপস্থাপন করেন মিল্টন সমাদ্দারের আইনজীবী। বাবার কোলে চড়ে ৬ বছরের শিশুকে কাঠগড়ায় দাঁড়ান বাবুর্চি জসিম। বাবার গলা দু’হাত দিয়ে ধরে কোলেই ছিলো শিশু। বাবার ঠোঁটে চুম্বনও করেন। বাবার সঙ্গে কিছুটা ভালোবাসার খুনসুঁটিতে মেতে ওঠে। এসময় তার পালিত মা সুমি বেগমও কাঠগড়ায় ছিলেন। মায়ের কোলেও যায় ফুয়াদ।
মিল্টন সমাদ্দারের পক্ষে আব্দুস ছালাম শিকদার জামিন চেয়ে বলেন, বাবুর্চি জসিম এবং তার স্ত্রী সুমি বেগম নি:সন্তান। ১১ বছরেও তাদের বাচ্চা হয়নি। তারা বাচ্চাটিকে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। বাচ্চাকে নেয়া অঙ্গীকারনামায় আদালতের সীলও রয়েছে। (যা তারা আদালতে জমা দেন)। শিশুটিকে তারা মাতৃস্নেহে বড় করছে। কি অন্যায় করলো তারা। মামলা করলো মানবপাচার আইনের ১০ (২) ধারায়।
শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে মিল্টন সমাদ্দারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে, গত ১ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ডিবি পুলিশের একটি দল ঢাকার মিরপুর থেকে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে। ওইদিন রাতে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মিরপুর মডেল থানায় মামলাটি করেন ধানমন্ডির বাসিন্দা এম রাকিব (৩৫)। এছাড়া মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে জাল ডেথ সার্টিফিকেট তৈরিসহ প্রতারণার আরো দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জাল ডেথ সার্টিফিকেট তৈরির মামলায় তাকে ৩ দিনের রিমান্ডেও নেয়া হয়েছে।