প্রশান্তি ডেক্স॥ প্রবাসীরা সরকারের দেওয়া স্বল্প সুদে ঋণ ও অন্যান্য সুবিধাদি যেন সঠিকভাবে পায়, সেজন্য প্রচারণা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। এছাড়া আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে অ-আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা করা যায় কিনা, তা নিয়েও আলোচনা করে কমিটি।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সংসদ ভবনে কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সূত্র জানায়, বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ একটি প্রতিবেদন দেয়। তাতে বলা হয়, প্রবাসী আয় বাড়ানোর জন্য রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের অ-আর্থিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। প্রবাসী আয় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গত প্রায় তিন দশক ধরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বর্তমান সরকারের ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত সময়ের উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ সময়ে গড়ে প্রতি বছর বাংলাদেশের আমদানি হয়েছে ৪৬.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং একই সময়ে গড়ে প্রতি বছর প্রবাসী আয় এসেছে ১৫.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ এ সময়ে প্রতি বছর গড় আমদানি মূল্যের ৩৪.৩ শতাংশের সমপরিমাণ অংশই প্রবাসী আয় দিয়ে মেটানো হয়েছে।
রেমিট্যান্স আনার ক্ষেত্রে সরকারের নীতি-সহায়তার ফলে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি সরকারের এ ধরনের নীতি-সহায়তার কার্যকারিতার প্রমাণ। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা ধীর হয়ে যাওয়া প্রবাসী আয়ের গতি বৃদ্ধি করতে নতুন নীতি-সহায়তা প্রদান করলে তা ফলপ্রসূ হতে পারে। এ প্রেক্ষিতে বিদ্যমান আর্থিক সুবিধার পাশাপাশি কিছু অ-আর্থিক বা নন- ফাইন্যান্সিয়াল সুবিধা প্রদান করলে, তা রেমিট্যান্স প্রেরণকারী এবং তার পরিবারের সদস্যদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। যা ভবিষ্যতে তাদের অধিক হারে রেমিট্যান্স পাঠানোকে উৎসাহিত করতে পারে।
প্রবাসীদের কিছু অ-আর্থিক সুবিধা দেওয়া যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তার মধ্যে আছে রেমিট্যান্স প্রেরণকারী স্থায়ীভাবে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করলে দেশে তার কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সংশ্লিষ্ট সব সরকারি সেবা প্রদানকারী অফিসে অগ্রাধিকার দেওয়া। দেশে অবতরণকালে সব বিমানবন্দরে রেমিট্যান্স প্রেরণকারীর যথাযথ অভ্যর্থনা নিশ্চিত করা এবং ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বিশেষ ডেস্ক স্থাপন। রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য বিশেষ স্মার্ট কার্ড প্রদানের মাধ্যমে বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা। রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য বাংলাদেশের যেকোনও সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তিতে বিশেষ অগ্রাধিকার প্রদান। রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সব সরকারি কার্যালয়ে সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদান। এ ছাড়া আরও কিছু সুবিধা দেওয়া যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। যেমন, রেমিটার স্মার্ট কার্ড দেওয়া যেতে পারে, রেমিটারদের সন্তানদের জন্য সরকারি, বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা ব্যবস্থা প্রচলন করা যেতে পারে। রেমিট্যান্স প্রেরণকারী বাংলাদেশিদের ওয়ার্ক পারমিট নবায়নের ফি হ্রাস করা যেতে পারে। পাসপোর্টসহ দূতাবাসে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে রেমিটার কার্ডধারীদের অগ্রাধিকার প্রদান। প্রবাসীদের জন্য সরকারের সেবাগুলোর প্রচার।