প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ পাঁচদিনের সফরে কিউবায় পৌঁছেছে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ অ্যাডমিরাল গোরশকভ এবং পারমাণবিক শক্তি সম্পন্ন সাবমেরিন কাজানসহ চারটি নৌযান। গত বুধবার (১২ জুন) হাভানার মালেকন সমুদ্র তীরবর্তী বুলেভার্ড বন্দরে পৌঁছায় বহরটি। সেখানে ২১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বহরটিকে স্বাগত জানায় রাশিয়ার দীর্ঘদিনের মিত্র কিউবা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র জিরকন, ক্রুজ মিসাইল ও অ্যান্টিশিপ মিসাইলসহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক অস্ত্র সজ্জিত রাশিয়ার ওই চারটি নৌযান কিউবা যাওয়ার সময় আটলান্টিক মহাসাগরে উচ্চ পর্যায়ের নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র অস্ত্রের প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেছে।
ফ্লোরিডার দক্ষিণাঞ্চলীয় মার্কিন নৌ বিমান স্টেশন থেকে হাভানার দূরত্ব মাত্র ১৬০ কিলোমিটার। যুক্তরাষ্ট্রের এতো কাছে রুশ নৌবাহিনীর এই অস্বাভাবিক মোতায়েনকে মস্কোর শক্তি প্রদর্শনের প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে, উত্তর-পূর্ব খারকিভে নতুন করে রাশিয়ার আক্রমণের পর, মস্কোর অভ্যন্তরে হামলা চালাতে নিজেদের অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেয় ওয়াশিংটন ও পশ্চিমা দেশগুলো। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়ার চলমান উত্তেজনার মধ্যেই হাভানায় যুদ্ধ জাহাজ পাঠালো মস্কো।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে পশ্চিমাদের জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে ওয়াশিংটন ডিসি-ভিত্তিক উইলসন সেন্টার থিংক ট্যাংকের ল্যাটিন আমেরিকা প্রোগ্রামের পরিচালক বেঞ্জামিন গেডান জানিয়েছে, যুদ্ধজাহাজগুলো ওয়াশিংটনের জন্য একটি সতর্কবার্তা।
হাভানা বে’তে পাঁচদিন অবস্থানের পর রুশ এই যুদ্ধজাহাজগুলো ভেনিজুয়েলায় যেতে পারে।
বেঞ্জামিন গেডান আরও বলেন, এই মহড়া মার্কিন বিরোধী কিউবা ও ভেনিজুয়েলাসহ এই অঞ্চলে রাশিয়ার মিত্রদেরও এই বার্তা দেয় যে, মস্কো তাদের পাশে রয়েছে।
অবশ্য গত সপ্তাহে কিউবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এটি কেবলই এক অনুশীলন। জাহাজগুলো পারমাণবিক অস্ত্র বহন করছে না।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, তাঁরা নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তবে তারাও কিউবায় রুশ যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছেন, এ ধরনের মহড়া নিয়মিত। রাশিয়ার কিউবায় কোনও ক্ষেপণাস্ত্র হস্তান্তরের প্রমাণ নেই। তারপরও যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।