প্রশান্তি ডেক্স ॥ যাত্রাপথে লঞ্চে শিশুকে রেখেই খাবার ও পানি কিনতে মুন্সীগঞ্জ ঘাটে নামেন বাবা বোরহান উদ্দীন। এ সময় হঠাৎ লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জ ঘাট থেকে ছেড়ে যায়। শিশুটির বাবা চিৎকার করেও লঞ্চটি থামাতে পারেননি। দিশেহারা হয়ে জাতীয় জরুরি সেবার-৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। পরে শিশুটিকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করে ৯৯৯ কর্তৃপক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ৯৯৯-এর পুলিশ পরিদর্শক (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ কর্মকর্তা) আনোয়ার সাত্তার এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাট থেকে বোরহানউদ্দীন নামে একজন জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জানান, সকাল ৯টায় তিনি তার মাদ্রাসা পড়ুয়া ১১ বছরের ছেলে ইমাম হোসেনকে নিয়ে সদরঘাট থেকে আবে-জমজম লঞ্চে চাঁদপুরের উদ্দেশে রওনা হন। ঈদের ছুটিতে মাদ্রাসা বন্ধ হওয়ায় ছেলেকে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। যাত্রাপথে ছেলেকে লঞ্চে রেখেই মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে নামলে আর উঠতে পারেননি। কিন্তু ছেলেটি লঞ্চেই থেকে যায়। পরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সহায়তা চান।
কলটি রিসিভ করেছিলেন কনস্টেবল নাসিমা আক্তার। দ্রুত নাসিমা এবং টিম মেন্টর কনস্টেবল হাসি আক্তার বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেন। তারা ভুক্তভোগী বোরহানউদ্দীনকে আশ্বস্ত করেন এবং তাকে পরবর্তী লঞ্চে চাঁদপুরে রওনা দিতে বলেন। তারা জানান ছেলেটি উদ্ধারের জন্য ৯৯৯ কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা করবে।
পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার বলেন, ৯৯৯ কর্তৃপক্ষ প্রথমে সদরঘাট নৌ-পুলিশ থানার সহায়তায় আবে-জমজম লঞ্চটির সুপারভাইজারের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে এবং তাকে ফোন করে ছেলেটির বর্ণনা দিয়ে খুঁজে বের করতে বলা হয়। সুপারভাইজার তখন জানান, ঈদযাত্রীতে পরিপূর্ণ লঞ্চে অত্যধিক যাত্রীর চাপ, তারপরও তিনি সাধ্যমতো চেষ্টা করবেন। এরই মধ্যে চাঁদপুর নৌ-পুলিশ থানায় বিষয়টি জানানো হয়। তাদের একটি টিম প্রস্তুত থাকে লঞ্চটি চাঁদপুর পৌঁছালে লঞ্চে অনুসন্ধান চালানোর জন্য। প্রায় ২০ মিনিট পর লঞ্চের সুপারভাইজার জানান, ছেলেটি খুঁজে পেয়েছেন। ৯৯৯ টিম শিশুটি তার হেফাজতে রাখতে বলে এবং চাঁদপুর পৌঁছে নৌ-পুলিশের টিমের কাছে হস্তান্তর করতে বলা হয়। সংশ্লিষ্ট নৌ-পুলিশ টিম, কলার ও লঞ্চ সুপারভাইজারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছিলেন ৯৯৯ ডিসপাচার এএসআই মোশাররফ হোসেন।
দুপুর ১টার দিকে লঞ্চটি চাঁদপুর পৌঁছালে চাঁদপুর নৌ-পুলিশ থানার টিম শিশুটি তাদের হেফাজতে নেয়। এরপর পৌনে ২টার দিকে শিশুটির বাবা চাঁদপুর পৌঁছালে তার কাছে ছেলেকে হস্তান্তর করা হয়।