সার্বজনীন ঈদ

ঈদানন্দ সার্বজনীন ভাবে উপভোগ করে স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে ফিরে এসেছে এবং আসছেন মানুষজন। এই ঈদানন্দ কিন্তু শুধু মুসলিমের মধ্যে সিমাবদ্ধ নয় বরং মুসলমান ধর্ম কেন্দ্রীক উদযাপন দিবটি হলেও হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খৃষ্ট্রান সম্প্রদায়সহ সকল ধর্মের মানুষই এই ছুটি এবং ঈদানন্দ উপভোগ করেছেন। যা ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষি হয়ে থাকবে এবং ছিল। এটা খুবই সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন যে, দিবসের ছুটি এবং আনন্দটুকু সবাই উপভোগ করেন।

তবে সবাই কোরবানীর সঙ্গে যুক্ত নন বরং কোরবানীর মাহত্বের সঙ্গে যুক্ত হন। সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব এবং সৌহার্দ্যের সম্মিলনের বন্ধন। এক নির্মল মহামিলন মেলা। ধনী-গরীব, উঁচু-নীচু এবং সব ধর্মের মানুষ এক নির্মল ও নিরহংকার আনন্দ উদযাপন। যা সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা। যার যার অবস্থান অনুযায়ী স্ব স্ব নীড়ে ফিরে আসছে। রাস্তার দুই পাশে বাসের অপেক্ষায় সকল ধর্মের মানুষজনকেই দেখা যাচ্ছে। কেউ বাসের অপেক্ষায়, কেউ ট্রেনের অপেক্ষায়, কেউ লঞ্চের অপেক্ষায়, কেউ আবার বিমান পথে বিমানের অপেক্ষায়। অপেক্ষার শেষ নেই।

যাত্রাপথ নিদারুন আনন্দের তবে বিলম্ব এবং কথিত জ্যাম এই দুইটি শব্দ বিশাল স্বার্থপর। কারণ তাদের স্বার্থপরতায় নিদারুন আনন্দে ব্যাঘাত ঘটে এবং ঘটে যাচ্ছে। তবে জ্যামের কারণ অটো এবং সিএনজি। এই দুই শ্রেণীর যান চলাচলা বন্ধ করা জরুরী। পাশাপাশি বড় বড় লড়ি বা ট্রাক চলাচল অন্ত্যত ঈদের আগে ও পড়ে কয়েকটাদিন শিথীল করা জরুরী। নয়তো সম্মিলীত ঈদানন্দে ঘাটতির সৃষ্টি হয়। হতাশায় ঘ্রাস করে শীকড়ের টানে ছুটে আসাদের আর জীবিকার সন্ধানে নীড়ে ফিরা মানুষদের। এই বিষয়টি যথোপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। তবে কোনরকম বড়শড় দু:সংবাদ এখনও চোখে পড়েনি বরং না যেন পড়ে সেই দোয়াসহ কামনাই করি।

নিদারুন ঈদানন্দে একটি বিষয় মনের কোণে ঘোরপাক খাচ্ছে যে; চামড়ার নিম্ন দাম। আমার শৈসবে দেখেছি যে, চামড়া ২০০০/২৫০০টাকা (ছোট ও বড় বলতে কিছু নেই)। কিন্তু এখন দেখছি স্থান-কাল ও পাত্র ভেদে ৩৭০ থেকে ১২০০টাকা পর্যন্ত। এটা কেন? সবকিছুরই মাননোন্নয়ন হয়েছে কিন্তু চামড়ার কেন হয়নি? আর চামড়া বিক্রির টাকাটা যায় এতিম ও দরিদ্রের এমনকি মসজিদ ও মাদ্রাসায়। তাইলে দরিদ্র এবং এতিমের হক মারার কৌশল কি সবসময়ই থাকবে? বরং চামড়ার দর বেশী হওয়ার কথা ছিল ছওয়াবের কথা ভেবে।

চামড়া ও চামড়া জাত পন্যের দাম কিন্তু আকাশ চুম্বি। অর্থচ অকাশচুম্বি দামের উৎপত্তিস্থলেই হতাশ এবং দু:খজনক কারসাজি। একজোড়া জুতার দাম সর্বনিম্ন ২০০০টাকা এবং সর্বোচ্চ ২৫০০০টাকা। এখন কথা হলো একটি গরুতে মোট কয়জোড়া জুতা হবে। ধরুন ২০ জোড়া তাহলে চামড়ার দামের এত নিম্নগামিতা কেন? আরো আছে ব্যাগ, ভেল্টসহ নানান সামগ্রী। আমি সকলের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখি এই চামড়া সিন্ডিকেট বা বাণিজ্যকে জনমুখী করুন এবং জনগণ এমনকি এতিম ও গরীব আত্মীয়-স্বজন-প্রতিবেশীসহ মসজিদ মাদ্রাসায় দানের সওয়াব বহুত বেশীর আশায় নিজেদেরকে পরিবর্তন করুন। বদলিয়ে ফেলুন পাপ স্বভাব এবং চর্চা শুরু করুন সার্বজনীন ঈদানন্দ এবং সাম্য- ভাতৃত্ব ও সৌহাদ্য এবং সম্প্রীতির মহামিলন মেলার।

সামান্য বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিন এবং নিজের সঙ্গে সময়ের এবং চাহিদার আর প্রকৃতির ও সৃষ্টিকর্তার মহামিলন ঘটান। দুনিয়াবী লাভ ও লোভ পরিহার করুন। ঈদ -উল-আযহা বা ঈদের তাৎপর্যকে সার্থকতায় পৌঁছে দিতে সহায়তা করুন। ভাবনায় রাখুন সৃষ্টিকর্তার দৃষ্টিসিমায় আমি এবং আপনি আর সৃষ্টিকর্তার কাছে আমরা সকলেই ফিরে যাব। তার কাছেই আমাদের প্রত্যাবর্তন। আর তিনি কোন ধর্মের আদলে আমাকে ও আপনাকে চিনেন না। তিনি তাঁর সৃষ্টি এবং সিফতে সৃষ্টি; সৃষ্টির সেরা জীব আসরাফুল মাখলুকাত হিসেবেই চিনেন এবং জানেন। সবাই আমরা আদম ও হাওয়ার সন্তান। তাই আদম ও হাওয়ার সকল সন্তানদেরকে সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদ প্রাপ্তিতে নিজেকে নিয়োজিত করি এবং বার্তাবাহক ও পরিবেশনকারী এমনকি পরিচর্যাকারী হিসেবে নিয়োজিত থাকি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.