ট্রাম্প ও বাইডেনের বিতর্কের বিষয় পর্ন তারকা

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের টেলিভিশন বিতর্কে একে অপরকে লক্ষ্য করে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণ করেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসময় পর্ন তারকাকে ঘুষ দেওয়া নিয়ে ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছেন বাইডেন। জবাবে বাইডেনের ছেলের বন্দুক কেনা এবং মাদক ব্যবহারে মিথ্যা বলা নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করেন ট্রাম্প। আগামী ৫ নভেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) প্রেসিডেন্ট বিতর্কের আয়োজন করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। চার বছরের মধ্যে এই প্রথম একে অন্যের মুখোমুখি হলেন তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

বিতর্কে পররাষ্ট্র নীতি, ইউক্রেন ও গাজার যুদ্ধ, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন ট্রাম্প ও বাইডেন। এসময় একে অন্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলার অভিযোগ আনেন এবং পরস্পরকে তীব্র বাক্যবাণে ঘায়েল করার চেষ্টা করেন তারা।

প্রথম আধঘণ্টা তেমন সুবিধা করতে না পারলেও বিতর্কের দ্বিতীয় ধাপে কিছুটা ভালো পারফরম্যান্স করেন বাইডেন। তখন তিনি পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে নিয়ে ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার জন্য ট্রাম্পকে আক্রমণ করেন তিনি। এসময় সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে ‘অপরাধী’ বলেও অভিহিত করেছিলেন বাইডেন।

এই আক্রমণের জবাবে ছেলে হান্টার বাইডেনের বন্দুক কেনা এবং মাদকের ব্যবহার নিয়ে মিথ্যা বলার জন্য দোষী সাব্যস্ত হওয়ার জন্য বাইডেনকে পাল্টা আক্রমণ করেন ট্রাম্প।

এরপরই বাইডেন বলেন, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সসহ ট্রাম্পের সাবেক মন্ত্রিসভার প্রায় সব সদস্যই ট্রাম্পের প্রচারণাকে সমর্থন করেননি। তিনি বলেন, ‘তারা তাকে ভাল করে জানেন। তারা তার সঙ্গে কাজ করেছেন। তাহলে তারা তাকে সমর্থন করছেন না কেন?’

ইতোমধ্যেই ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন কিছু মন্তব্য করেন যার অধিকাংশই সত্য নয় এবং দীর্ঘকাল তিনি সেগুলোর পুনরাবৃত্তি করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো, অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে অপরাধের ঢেউ তুলেছে, ডেমোক্র্যাটরা শিশুহত্যাকে সমর্থন করে এবং ২০২০ সালের নির্বাচনে তিনিই জিতেছিলেন।

বিতর্কে উভয় প্রার্থী পরবর্তী মেয়াদের জন্য নিজেদের যোগ্যতা প্রদর্শন নিয়ে চাপের মুখে ছিলেন। বাইডেনকে তার বয়স এবং তীক্ষণতা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। আর ট্রাম্পের দুর্বলতা ছিল তার উস্কানিমূলক বক্তৃতা ও বিস্তৃত আইনি সমস্যাগুলো।

বিতর্কে কথা বলার সময় বাইডেনের কণ্ঠ খসখসে শোনাচ্ছিল। এ সময় বাইডেনের মিত্ররা চেহারায় আত্মবিশ্বাস ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছিলেন। হোয়াইট হাউজের দুই কর্মকর্তা বলেছিলেন, বাইডেনের সর্দি ছিল। তাই কণ্ঠ এমন শোনাচ্ছিল। তবে প্রেসিডেন্টের পক্ষে সাফাই দিলেও বিতর্কে বাইডেনের দুর্বল পারফরম্যান্স ডেমোক্র্যাটদের বিচলিত করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ভোটাররা ৮১ বছর বয়সী এই প্রেসিডেন্টকে আরও ৪ বছর মেয়াদে কাজ করার জন্য বয়স্ক মনে করবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাইডেনের শীর্ষস্থানীয় এক দাতা প্রেসিডেন্টের কর্মক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে তাকে ‘অযোগ্য’ বলে অভিহিত করেছেন।

বিতর্কের পরে সিএনএন-এ উপস্থিত হন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। বাইডেনের শুরুটা ভালো ছিল না বলে স্বীকার করেন তিনি। তবে তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন, ভোটারদের উচিত বাইডেন ও ট্রাম্পকে ক্ষমতায় থাকাকালীন তাদের কাজ দিয়ে বিচার করা।

সিএনএন হোস্ট অ্যান্ডারসন কুপারকে কমলা হ্যারিস বলেছিলেন, ‘আমি আপনার সঙ্গে বিগত ৯০ মিনিট নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি না। যেহেতু আমি গত সাড়ে তিন বছর ধরে তার পারফরম্যান্স দেখছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.