ভালমানুষ একজনও নেই

কখন যে কে আপন হয় আর কেবা পর হয় তা বুঝা যায় সময়ের প্রয়োজনীয়তায়। সময়ই বলে দেবে কখন কে আপন আর কে পর। তবে এই রিতি ও নীতির জন্য জীবন এবং সমাজ এমনকি রাজননৈতিক দল ও গোষ্ঠিগুলোর উপর মানুষের আস্থা হারাচ্ছে এমনকি জনশুন্য আবস্থার দিকে এগুচ্ছে। আমাদের সমাজের দৃশ্যমানতায় ইদুর বিড়াল খেলা চলছে কিন্তু এই খেলার রক্ষাকর্তারা বা পাহাদাররা বেমালুম ভুলে যাচ্ছে সচেতন স্বনির্ভর ও স্বচ্ছ দায়িত্বটুকু। এখন দেখা যাচ্ছে কখনো কখনো ইদুর বিড়ালের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে ক্ষমতা দেখাচ্ছে আর বিড়াল ইদুরে পরিণত হয়ে নি:শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে ইদুর বিড়াল খেলার যে সুত্র তা বাস্তবায়ন করা এখন জরুরী হয়ে পড়েছে।

পবিত্র কালামে আছে একজনও ভালমানুষ নেই। ভালমানুষ বলতে যা বুঝায় তা স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা নিজেই। তাই তিনি খারাপ মানুষদের ভাল করার জন্য যুগে যুগে সতর্ককারী পাঠিয়েছেন এবং ভাল করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। যা আজও ধারাবাহিকভাবে দৃশ্যমান। তাই আমাদেরকে ভাল করার জন্য এবং যারা ভাল আছে তাদেরকে ভাল রাখার জন্য সৃষ্টিকর্তা সদা জাগ্রত। মানবতার কল্যাণে এমনকি সৃষ্টির সেরাজীব মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। আর মানুষকে ব্যবহার করে সৃষ্টির সেবা করে যাচ্ছেন। এই সেবার দায়িত্ব আজ বর্তিয়েছে পৃথিবীর মাঝে বসবাসরত মানুষজনের উপর।

সেই ধারাবাহিকতায় যারা যারা দায়িত্ব পেয়েছেন এবং দায়িত্ব পালন করছেন তারা সবাই মনে করবেন এই দায়িত্ব সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত। আপনারা যার যার দায়িত্ব পালনে সচেতন হউন এবং এই দায়িত্বের মাধ্যম সৃষ্টিকর্তার ক্ষমা ও ভালবাসামিশ্রিত বহি:প্রকাশ ঘটান। তবে আমাদের সমাজে ঐসকল দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিভিন্ন বিষয় এখন মানব ঘৃণায় পর্যবসিত হয়ে দৃশ্যমান রয়েছে। যা দেখে শিক্ষা নেয়ার মত অনন্য দৃষ্টান্তও রয়েছে। ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয় এবং ক্ষমতাধর ব্যক্তির বা অর্থ ও বিত্তশালী ব্যক্তির বিচার হবে না এমনকি তারা সকল কিছুর উদ্ধে অথবা ধরাছোয়ার বাইরে তাও বলা যাবে না। তবে সৃষ্টিকর্তার নিরপেক্ষতা এবং ন্যায় বিচার প্রতিয়মান হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ পরিলক্ষিত হয়েছে।

আমরা দেখেছি অনেক শক্তিশালী মানুষ আজ ফাসির কাষ্টে ঝুলে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন এবং ইতিহাসে নেতিবাচকতায় নাম লিখিয়েছেন। আবার অনেক ক্ষমতা ও অর্থশালী মানুষ এখন পালিয়ে বেরিয়েছেন। এই যদি হয় নমুনা তাহলে কেন অল্পদিনের জিন্দেগীতে সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যের বাহিরে গিয়ে শয়তানাশ্রিত জীবন উপহার দেয়া! ? আমরা কি এখনও বুঝতে পারিনি যে, জীবনটা অস্থায়ী এবং স্থায়ী জীবনে ফিরে যাওয়ার মাধ্যম হলো মৃত্যু এবং এই মৃত্যুর পরের জীবনই হলো প্রকৃত জীবন যা বাবা আদাম ও মা হাওয়া শুরু করেছিলেন।

পৃথীবির ইতিহাস এবং বিচারালয়ের দৃষ্টান্ত এমনকি জ্ঞান ও শিক্ষার বহিপ্রকাশ আর সৃষ্টিকর্তার দেয়া ক্ষমার মাহত্বকে আমরা এখনো বুঝতে পারিনি বা আলিঙ্গনে আবদ্ধ করতে পারিনি। তাই আমাদের আজকের এই দৃশ্যমান অবস্থান। আমরা সবাই এখন আমার চমৎকারিত্ব বা অতি উত্তম অবস্থানের অস্তিত্ব হারিয়ে নতুন কালিমাযুক্ত অস্তিত্বে বিলিন হচ্ছি। আর তা সময়ে সময়ে হাস্যকর ও লজ্জ্বার আদলে আগামীর প্রজন্মকে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে।

পুলিশ, এনবিআর, পাসপোর্ট / ভিসা অফিসই যে শুধু অন্যায়ের সঙ্গে যুক্ত তা কিন্তু নয় বরং এই দৃশ্যমানতাগুলো আমাদেরকে সচেতন করতে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। আমরা যেন পরিবর্তন হয় এবং মন ফিরাই। কিন্তু আসলে কি আমরা পরিবর্তন হচ্ছি বা মন ফিরাচ্ছি? না অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় না বরং আমরা কৌশলী হচ্ছি। তবে জনাব বেনজির এবং মতিউর গংরা আমাদেরকে চেতনা দিচ্ছে যেন আমরা সকলেই ঐ অবস্থান এবং অবস্থার স্বীকার থেকে রক্ষা পাই। তবে রক্ষা নেই এটা সত্য। প্রকৃত রক্ষা পেতে হলে সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য এবং ক্ষমা লাভ দরকার। যদি আমরা সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য এবং ক্ষমা লাভে অভ্যস্ত হয় তাহলে আমাদের আগামীর জীবন হবে নিষ্কলুষ এবং সৃষ্টির কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ। একটি উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি সৃষ্টিকর্তা হলো পৃথিবীর রাজা (রাজাদের রাজা) এবং আমরা যারা সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে যুক্ত তারা সকলেই হলাম তাঁর রাজত্বের এক একজন মন্ত্রী বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি অথবা কর্তকর্তা। সেই হিসেবে আমরা সবাই সৃষ্টিকর্তার দেয়া সকল উপহার সঠিকভাবে বন্টনে মনযোগী হই এবং আমাদের কাজ-কর্ম এমনকি চিন্তা-চেতনায় আর জীবনাচরণে সৃষ্টিকর্তাকে প্রকাশ করি। যেন মানুষ এবং পৃথিবীর সমস্ত সৃষ্টি সৃষ্টিকর্তায় নিমঘ্ন থাকে আর জীবনের প্রকৃত অবস্থান ও শান্তি এবং স্থৃতিশীলতা ফিরে পায়।

আমরা কাউকে ক্ষেয়পতিপন্ন না করি বরং ভূল শুধরিয়ে নিতে প্রাণপন চেষ্টা করি ও সুযোগ দিই। ভুল থেকে তুলে এনে সঠিক জীবনে ফিরিয়ে দিতে সদা জাগ্রত থাকি। সেবকের আসনে বসাদেরকে অবশ্যই সেবার মানষিকতায় এবং নম্র ও বিনয়ী হয়ে কাজে মনোনিবেশ করতে হবে। অহৎকার এবং ক্ষমতা আর লোভ এমনকি অর্থ-বিত্ত্বের সন্ধানে নিমঘ্ন না থেকে সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে থেকে কাজ সম্পন্ন করতে হবে। দুনিয়ার শাস্তিই কিন্তু শেষ নয় বরং প্রকৃত বিচারালয় হয়ে শেষ বিচারের দিন যেদিন সৃষ্টিকর্তা স্বয়ং উপস্থিত থেকে আমাদের সকলের বিচার করবেন। তাই সাবধান হউন এবং নিজের এবং অন্যের জীবনে খোদায়ী আশির্বাদ বিলিয়ে দিয়ে আগামীর কল্যাণের তরে যার যার দায়িত্ব পালনে নিয়েজিত থেকে ক্ষমা ও ভালবাসার নি:শর্ত বন্ধনে আবদ্ধ হউন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.