প্রশান্তি ডেক্স ॥ কোথাও হাতের টানে, কোথাও পায়ের আঙ্গুলের টানে উঠে যাচ্ছে সড়কের পিচ। কোথাও আবার পায়ের চাপে দেবে যাচ্ছে। সড়কটিতে ২৫ মিলিমিটার পুরো পিচ ঢালাই দেওয়ার কথা থাকলেও অনেক স্থানেই দেওয়া হয়েছে ১৫ থেকে ২০ মিলিমিটার। পটুয়াখালীর মহিপুরে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার মাত্র ১০ দিন পরই এমন দুরবস্থা হয়েছে সাগর সিনেমা হল থেকে নিজামপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত ৩.৩ কিলোমিটার সড়কের। কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডি অফিসের উদাসীনতা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে সড়কের এমন বেহাল দশা হয়েছে। এতে ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে এলাকাবাসী।
কলাপাড়া এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্পের আওতায় এ সড়কের পুননির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে এলজিইডি। ৩.৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যেও সড়কটির প্রস্থ ৩ মিটার। ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ের এ সড়কের নির্মাণ কাজ পায় শহীদুল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ১০ দিন আগে শেষ হয়েছে এ সড়কের পিচ ঢালাইয়ের কাজ। ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় ৯০ লাখ টাকা। তবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় হস্তান্তরের আগেই বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে সড়কটি।
নিজামপুর এলাকার বাসিন্দা নাসির মিয়া জানান, এত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণ এর আগে আমি আর কখনও কোথাও দেখিনি। যেকোনও স্থান থেকে হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যাচ্ছে পিচ। সড়ক নির্মাণে দুর্নীতি করায় এ প্রকল্পের কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
একই এলাকার অপর বাসিন্দা সোলেমান মুন্সী জানান, এখনই পিচ উঠে যাচ্ছে। নিচে কোনও ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়নি। অনেক স্থানে শুধু মাটির উপর পিচ দেওয়া হয়েছে। আমরা সড়কটি আবার নতুন করে নির্মাণের দাবি জানাই।
তবে শহিদুল এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মো. শহীদ জানান, এখানে আমরা কোনও অনিয়ম দুর্নীতি করিনি। আমি এ কাজটি সাব কন্টাক দিয়েছি। তাকেও সম্পূর্ণ বিল দেওয়া হয়নি। বৃষ্টির কারণে সমস্যা হয়েছে। আমরা আবার ঠিক করে দেবো।
কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব তালুকদার জানান, আমি ভিডিও দেখেছি। এ সড়কটিতে অত্যন্ত নিম্নমানের কাজ হয়েছে। তদারকি কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর সুপারিশের পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন করে নির্মাণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, নিম্নমানের কাজ হওয়ায় ইতোমধ্যে এলজিইডি কর্মকর্তাদের সঠিক তদারকির মাধ্যমে নতুন করে সড়কটি মেরামত করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাদেকুর রহমান সাদেক। তবে সড়কটি পুননির্মাণ না করা পর্যন্ত বাকি বিল আটকে রাখা হবে বলে জানান তিনি।