হালদায় মাছ-ডলফিনের মৃত্যু: কারণ জানতে মাছের ময়না তদন্ত চলছে

প্রশান্তি ডেক্স ॥ হালদা নদীতে গত ১২ দিনে ছয়টি ব্রুড মাছ (একটি রুই এবং পাঁচটি কাতলা) এবং দুটি ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে। এসব মাছ এবং ডলফিনের মৃত্যুর কারণ জানতে মারা যাওয়া ১২ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের কাতলা ব্রুড মাছটির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে এ মাছের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।

কাতলা ব্রুড মাছটি গত ২৮ জুন হাটহাজারী উপজেলার উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নের কুমারখালী এলাকা থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ওই সময় ১০ কেজি ওজন এবং ৫৮ সেন্টিমিটার লম্বা আরও একটি কাতলা ব্রুড মাছ উদ্ধার করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে হালদা নদীতে ছয়টি ব্রুড মাছ এবং দুটি ডলফিন মারা গেছে। এসব মাছ এবং ডলফিনের মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে ১২ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের কাতলা ব্রুড মাছটির পোস্টমর্টেম করা হয়। পোস্টমর্টেম কাজে অংশগ্রহণ করেন চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অধিদফতর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, বিসিএসআরআই এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরি। আরও উন্নততর পরীক্ষার জন্য মাছটির নমুনা বাংলাদেশের বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়।’

ড. মনজুরুল কিবরিয়া আরও বলেন, ‘গত ১২ দিনে হালদা নদীতে ছয়টি ব্রুড মাছ (একটি রুই এবং পাঁচটি কাতলা) এবং দুটি ডলফিনের মৃত্যু হালদার পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্যের জন্য একটি অশনিসংকেত। আরও একটি হতাশাজনক বিষয়, ২০১৬ সালের পর হালদা নদীতে এ বছর সবচেয়ে কম পরিমাণ ডিম দিয়েছে, যা পরিমাণে নমুনা ডিমের চেয়ে একটু বেশি। ইতোমধ্যে প্রজনন মৌসুমের ছয়টি জো শেষ হওয়ার মাধ্যমে ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে গেছে। জুলাই মাসে মাছ ডিম ছাড়ার কোনও রেকর্ড নেই। হালদার ডিম সংগ্রহকারীদের এত হতাশার মধ্যে ছয়টি ব্রুড মাছ এবং দুটি ডলফিনের মৃত্যু হালদা নদীর পরিবেশগত বিপর্যয়ের ইঙ্গিত বহন করে।

‘এই ব্রুড মাছের মৃত্যুর জন্য প্রাথমিকভাবে শাখা খালগুলোর দূষণ এবং বিষ প্রয়োগে মাছ মারার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া অন্যতম কারণ বলে মনে করি। হালদা নদী তথা বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ রক্ষার জন্য বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দ্রুত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কারণ উদঘাটনের জোর দাবি জানাচ্ছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.