আসুন, তরুণদের হাত শক্তিশালী করি: খালেদা জিয়া

প্রশান্তি ডেক্স ॥ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘এই বিজয় আমাদের নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। দীর্ঘদিনের নজিরবিহীন দুর্নীতি, গণতন্ত্রের ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে আমাদের নির্মাণ করতে হবে এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। বীর সন্তানরা মরণপণ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। শত শত শহীদকে জানাই শ্রদ্ধা।’

গত বুধবার (৭ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। রেকর্ডকৃত ভিডিও প্রচারে তিনি তার বক্তব্য রাখেন। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তার বক্তব্যটি রেকর্ড করা হয়।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেন, ‘ছাত্র-তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। তরুণরা যে স্বপ্ন নিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে মেধা, যোগ্যতা ও জ্ঞানভিত্তিক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। মানবাধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার ও সাম্যের ভিত্তিতে নির্মাণ করতে হবে শোষণহীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।’

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আদালতের আদেশে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদন্ড হয়। সেদিনই তাকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে রাখা হয়। সেখান থেকে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে বাসায় আসেন। এরপর থেকে তিনি টানা হাসপাতাল আর বাসায় আসা-যাওয়ার মধ্যে রয়েছেন।

গত সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে মুক্তির সিদ্ধান্ত নেন। পরদিন মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) তিনি মুক্ত হন।

বিএনপির সমাবেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর আপনাদের সামনে কথা বলতে পারার জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। আমার কারাবন্দি অবস্থায়, আপনারা আমার কারামুক্তি ও রোগমুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন, দোয়া করেছেন। সে জন্য আমি আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

‘দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা ফ্যাসিবাদী অবৈধ সরকারের কাছ থেকে মুক্তি পেয়েছি। আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের বীর সন্তানদের, যারা মরণপণ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। শত শত শহীদকে জানাই শ্রদ্ধা’, উল্ল্লেখ করেন বেগম জিয়া।

বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘সকল ধর্মের, গোত্রের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। শান্তি, প্রগতি আর সাম্যের ভিত্তিতে আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণে আসুন আমরা তরুণদের হাত শক্তিশালী করি। ধ্বংস নয়, প্রতিশোধ নয়, প্রতিহিংসা নয়, ভালোবাসা, শান্তি ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলি।’

সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির নেতারা বক্তব্য রাখেন।

দলের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বেগম জিয়া প্রথম গ্রেফতার হয়েছেন ১৯৭১ সালের ২ জুলাই পাক বাহিনীর হাতে, ঢাকা সিদ্ধেশ্বরীতে এক আত্মীয়ের বাসা থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.