প্রশান্তি ডেক্স॥ সেদিন ছিল ভয়াল ২১ আগস্ট। ২০০৪ সালের এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সমাবেশ করতে গিয়ে নিজেরাই সন্ত্রাসের শিকার হয়েছিল। সেদিনের হামলার মূল লক্ষ্য দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও জীবন দিতে হয়েছিল নারীনেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ নেতা-কর্মীকে।
২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বিকাল ৫টা ২২ মিনিটে শেখ হাসিনার বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে উপর্যুপরি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে থাকে একের পর এক গ্রেনেড।
বিস্ফোরণের বীভৎসতায় মুহূর্তেই মানুষের রক্ত-মাংসের স্তূপে পরিণত হয় সমাবেশস্থল। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে। স্পিন্টারের আঘাতে মানুষের হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ছিন্নভিন্ন হয়ে চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে। চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায় রক্তাক্ত নিথর দেহ।
লাশ আর রক্তে ভেসে যায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর সামনের পিচঢালা পথ। নিহত-আহতদের জুতা-স্যান্ডেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। ভেসে আসে আহত ও মৃত্যুপ্রায় মানুষের গগনবিদারী আর্তচিৎকার।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় নেওয়ার পরে গ্রেনেড হামলা নিহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন এবং আহতদের চিকিৎসার পাশাপাশি ফ্ল্যাটসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। অনেকেই বিদেশেও চিকিৎসা করা হয়। যার অধিকাংশ ব্যয় বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ও সরকারিভাবে।
গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবসে মর্যাদার সঙ্গে শোক পালন করে আসছিল। কিন্তু গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পরে বিপর্যয়ে পড়েছেন দলটির নেতা কর্মীরা।
গত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস তেমন পালন করতে পারেনি দলটি। গ্রেনেড হামলা দিবসেও দলটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনও কর্মসূচি দেওয়া হয়নি। দিনটি পালন নিয়ে নেতাকর্মীদের কোনও ধরনের নির্দেশনাও দেওয়া হয়নি।