প্রশান্তি ডেক্স॥ উজানের দেশ ভারতে বন্যা পরিস্থিতি হলে সেটির প্রভাব পড়ে ভাটির দেশ বাংলাদেশে। এ ধরনের দুর্যোগপূর্ণ বন্যা পরিস্থিতিতে উভয় দেশ যেন দ্রুততম সময়ে একসঙ্গে কাজ করতে পারে-এমন ব্যবস্থা চাইছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গত বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকালে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শহিফুল ইসলাম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান যে বৈঠকে ত্রিপুরায় বৃষ্টি হয়েছে, সেটির কথা এসেছে। ত্রিপুরার বাধের কথা এসেছে এবং এটি থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি রিলিজ (নিষ্কাশন) হয়েছে। পানির উচ্চতা বেশি থাকায় বাধ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি রিলিজ হয়েছে।
প্রেস সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের বিজিবি ও বিএসএফ-এর মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিং হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এ ধরনের কোনও সহযোগিতা করা যায় কিনা যখন বন্যা পরিস্থিতি হবে তখন বৈঠক করা যায়। আমরা এবং ভারত একই ক্যাচমেন্ট অঞ্চলে আছি এবং আমাদের অববাহিকা একে অপরের মধ্যে পড়ে যায়। এছাড়া আমরা একই পানি ব্যবহার করি। সেজন্য তিনি বলেছেন, দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে এ ধরনের একটি ব্যবস্থায় কাজ করা যায় কিনা।’
পানি বণ্টন : প্রধান উপদেষ্টা দুই দেশের মধ্যে পানি বণ্টনের বিষয়টি তুলেছেন। পানি বণ্টনের বিষয়টি আলোচনা হয়েছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা চাইছেন পানি বণ্টন নিয়ে যেসব ইস্যু আছে সেটি যেন যৌথভাবে কাজ করে নিষ্পত্তি করতে পারি।‘
ভারত ও পাকিস্থানের মধ্যে ইন্দাস পানি বণ্টন চুক্তির কথা প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, এটি অনেক বছর ধরে কাজ করছে। যৌথ নদীর বিষয়টি অনেক দেশকে প্রভাবিত করে। প্রধান উপদেষ্টা চাইছেন ভারতের সঙ্গে পানি বণ্টন নিয়ে সুন্দরভাবে কাজ করতে জানান শফিকুল ইসলাম।
ভারতের উদ্বেগ : ভারতীয় দূতাবাস এবং তাদের স্থাপনার নিরাপত্তা নিয়ে রাষ্ট্রদূত তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। প্রেস সচিব বলেন, ‘ভারতের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন যে দূতাবাস এবং বাংলাদেশে ভারতের অন্যান্য স্থাপনা নিয়ে তারা খুব উদ্বিগ্ন। সামাজিক গণমাধ্যমে কিছু পোস্ট দেওয়া হচ্ছে যেটি দুঃখজনক। যারা এটি করছেন, এটি খুব দুঃখজনক।’
সংখ্যালঘু নিয়ে আলোচনা: বৈঠকে সংখ্যালঘু নিয়ে কথা উঠেছে, কিন্তু এটি খুব সংক্ষিপ্ত ছিল বলে জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে ভারতের নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোন আলাপে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন যে সংখ্যালঘু নিয়ে কিছু সংবাদের অনেকগুলো অতিরঞ্জিত।’
এটির জন্য তিনি ভারতের সাংবাদিকদের আহ্বান করেছেন বাংলাদেশ সফরের জন্য এবং তারা যেন নিজের মতো করে ঘুরে দেখেন কোথায় কী হয়েছে। সামাজিক গণমাধ্যমের ওপর নির্ভর না করে তারা নিজেরা যেন দেখে এটি বলে জানান শফিকুল ইসলাম। মানুষে-মানুষে যোগাযোগ নিয়ে কথা হয়েছে। রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন যে গত বছর ১৬ লাখ লোক ভারতে গিয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব।