দেড় মাসে শেখ হাসিনার নামে ১৫০ মামলা

প্রশান্তি ডেক্স ॥ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। এরপর গত ১৫ বছর ধরে খুন, গুম ও গণহত্যা নিয়ে একের পর এক অভিযোগ উঠতে থাকে। শেখ হাসিনা পদত্যাগের পরপরই তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ নানা অভিযোগে মামলা হতে থাকে। গত দেড় মাসে তার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতেই ১৫০টি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪০টিই হত্যা মামলা। বাকি ১০টা হত্যার চেষ্টা, হুমকি, লাঞ্ছিত ও মারধরের অভিযোগ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে গুলি করে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক হারুন অর রশিদ এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণসহ স্থানীয় নেতা-কর্মীরাও এসব মামলায় আসামি হচ্ছেন।

গত ১৩ আগস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে প্রথম হত্যা মামলা করা হয়। রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় কোটা আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে পুলিশের গুলিতে মুদি দোকানি আবু সায়েদকে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদেরসহ ৭ জনকে আসামি করা হয়। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকার আমলি আদালতগুলোতে ৩১টি থানায় ১৫০টি মামলা করা হয়েছে।

থানাগুলোর মধ্যে রয়েছে যাত্রাবাড়ীতে ৪২, মিরপুরে ২৪, উত্তরা-পূর্বে ১৪, সাভারে ১০, বাড্ডায় ৯, মোহাম্মদপুরে ৫, কদমতলীতে ৫, রামপুরায় ৪; তেজগাঁও, নিউমার্কেট, আদাবর, সূত্রাপুর, খিলগাঁও ও হাতিরঝিল থানায় তিনটি করে; পল্লবী, বংশাল, শেরেবাংলা নগর, বনানী, পল্টন, মুগদা, ভাটারা থানায় দুটি করে এবং আশুলিয়া, কাফরুল, মতিঝিল, চকবাজার, লালবাগ, গুলশান, বিমানবন্দর, শাহবাগ, ধানমন্ডি, কোতোয়ালি থানার একটি করে মামলা করা হয়েছে। এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে আরও ৬টা হত্যা মামলা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এসব মামলা হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ তিথির আদালতে শেখ আজিজুর রহমান বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ১৪৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পরে আদালত সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজার আদালতে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের এবং আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। পরে আদালত যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুর রহমানের আদালতে শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। পরে আদালত বাড্ডা থানা পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুদ্দিন হোসাইনের আদালতে শেখ হাসিনাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। পরে আদালত কদমতলী থানা পুলিশকে মামলাটির অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসেনের আদালতে শেখ হাসিনাসহ ৫৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। পরে আদালত রামপুরা থানা পুলিশকে মামলাটির অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।

আরেক ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরফাতুল রাকিবের আদালতে শেখ হাসিনাসিহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। পরে আদালত হাতিরঝিল থানা পুলিশকে মামলাটির অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.