রাজনীতি ও সরকার এবং সংস্কার

বর্তমানের রাজনীতি, সরকার, ও সংস্কার এই তিনের দ্বন্ধ প্রতিয়মান হচ্ছে। সরকার চাচ্ছে সংস্কার এবং সুশৃঙ্খল ও স্থিতিশীলতা বিরাজমান রাখতে। সকল কিছুর পরই নির্বাচন নিয়ে ভাবতে। তাই সরকারকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে রাজনীতি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ এবং সংস্কার বিরোধীরা। মনে রাখতে হবে; তবে জনগণ সবসময় হুজুগে মেতে উঠে তাই জনগণের উপর ভরসা করে পদক্ষেপ নেয়া সরকারের ঠিক হবে না। বরং প্রশাসন এবং ছাত্রদের উপর ভরসা করেই এগিয়ে যেতে হবে।

রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক জনগণের উপর ভরসা করার কোন সুযেগ নেই। কারণ সবাই সবার স্বার্থকে রক্ষায় নিয়োজিত। যথ খারাপই হোক না কেন রাজনৈতিক স্বার্থ্য হাসিলই প্রাধান্য পাবে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে। তাই এই সময়ের রাজনীতিকে বিরাজনীতিও করা যাবেনা এমনকি সংস্কারও করা যাবে না। তবে যদি রাজনৈতিক রিতি-নীতির সংস্কার করা যায় তাহলে সর্বোত্তম। সেই লক্ষ্যে বর্তমান সরকার সকল বৈষম্যের সংস্কারলগ্নে রাজনৈতিক সংস্কারও জরুরী। আর এই রাজনৈতিক সংস্কার প্রাধান্য দিয়ে অগ্রসর হলেই আগামীর সুফল সুনিশ্চিত হবে।

রসুনের কোয়া আলাদা হলেও পাছাটা বা সংযুক্তিটা কিন্তু এক। আর এই একের মধ্যেই নিহীত রয়েছে আমাদের আন্তদেশীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি। যদিও দলগুলো আলাদা আলাদা কিন্তু রসুনের কোয়ার সংযুক্তির মত এক হতেও সময় লাগবে না। তাই সরকারকে এই বিষয়টি মাথায় রেখেই এগুতে হবে। রাজনৈতিক সংস্কার বা দলগুলোতে সংস্কার আনয়ন জরুরী। তাই এই বিষয়টি গুরুত্বের সহিত বিবেচনায় নিয়ে অগ্রাধীকার দিয়ে এগুতে হবে।

সংস্কার কমিটি ও পরামর্শক কমিটি হচ্ছে তবে এর মধ্যে যারা ফ্যাসিষ্ট সরকারের প্রেতাত্মা হিসেবে ঘাপটি মেরে রয়েছে সেই দুমুখো সাপগুলোকে বিতারিত না করলে এই সরকারের কর্মযজ্ঞে বিঘ্ন সৃষ্টিহতে বেশী সময় লাগবে না। তাই কথিত এবং চিহ্নিত দুমুখো সাপদেরকে সরকারের সকল কর্মাকান্ডের সুতিকাঘর থেকে বিচ্ছিন্ন করুন।

ছাত্রদের অভিপ্রায়কে গুরুত্ব দিয়ে অভিজ্ঞদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিল রেখে চিন্তা ও পরিকল্পনা এবং সমন্বয়ের সঙ্গে যুক্ত করে কার্য্যে পরিণত করুন। কথায় আছে ঠেকলে তিন মাথার নিকট যাইতে। তাই আজকের সরকার সেই তিন মাথার সমতুল্য। তাই আমরা তাদের অভিজ্ঞতা এবং কর্মময় জিবনের সফলতা আর নতুন প্রজন্মের চেতনা ও অভিপ্রায় বাস্তবায়নে অতিত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত সংমিশ্রনে অগ্রসর হই। পরাভুত সরকারের লোভী এবং নেতিবাচক মনোভাবাপন্নদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনুন; পাশাপাশি অনান্য যে সকল রাজনৈতিক দল রয়েছে তাদের থেকেও গ্রেফতার করুন এবং পরিশুদ্ধ করণে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করুন। ইতিমধ্যে যারা বিভিন্ন অনৈতিক দুষকর্ম এবং বিভিন্ন নেতিবাচকতার সঙ্গে জড়িয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আশু ব্যবস্থা নিন।

পক্ষান্তরে পরাজিত সরকার এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে যারা স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিতার আওতায় রয়েছে এবং মানবতার কল্যাণে নিয়োজিত রয়েছে তাদেরকে জনসম্মুক্ষ্যে নিয়ে আসুন। তাদেরকে সুযোগ দিন এবং দেশ গঠনে ব্যবহার করুন। জনতা উৎসাহিত হয়ে আগামীতে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতায় মনোনিবেশ করবে।

চিন্তা চেতনায় ও মননে পুরোনো ধ্যান ধারনার সহিত নতুনকে আলিঙ্গন করে আগামীর কল্যাণে ঝুকি মোকাবিলায় জাতিকে প্রস্তুত করতে নতুন-পুরাতন সমন্বয়ে সকল কাজ সাধন করুন। পুরোনে চাল ভাতে বাড়ে এবং নতুনের শক্তি ও মেধাকে কাজে লাগিয়ে মেধাশক্তি ও শ্রমশক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হউন এবং প্রস্তুতি নিন। অতিত থেকে শিক্ষা নিন এবং বর্তমান থেকে আগামীর শিক্ষার সিলেবাস প্রস্তুত করুন। সরকার সকল প্রকার সংস্কার সাধনে রাজনীতি; রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি এবং সাধারণ গণ মানুষের অংশগ্রহন শতভাগ নিশ্চিত করুন। ছাত্র জনতার আন্দোলনের সফলতা এবং ফসল ঘরে তুলে সতেজতায় ধরে রাখতে স্ব স্ব ভুমিকায় নিয়োজিত থাকুন। জনবিমুখ এমনকি জনতার বিরুদ্ধে না দাঁড়িয়ে বরং পাশে দাঁড়িয়ে সকল দায়িত্ব সম্পন্ন করুন। নতুবা জনতা সাবেকের মত বর্তমানকেও একদিন প্রত্যাখ্যান করবে। কোনভাবে আমিত্বকে প্রাধান্য দিবেন না এমনকি আমরা থেকে আমিতে ফিরে যাবেন না। স্বয়ং সৃষ্টিকর্তাও এই আমিত্বকে অঘ্রায্য করেছেন এবং বার বার ইতিহাসের দ্বারা আমাদের সামনে দৃষ্টান্ত রেখেছেন। তাই ঐ দৃ্‌ষ্টান্তে আর কেউ যাউক তা কামনা করি না বরং নতুন ইতিবাচক এবং কল্যাণকর জনবান্ধব দৃষ্টান্তে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখুন। রাজনীতি, সরকার এবং সংস্কারকে জনবান্ধব করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.