করনীয়তে মনোনিবেশ

৫ আগষ্টের পর টালমাটাল দেশে এখনও পর্যাপ্ত অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে করনীয় ঠিক করে অগ্রাধীকার দিয়ে সেই করনীয়তে মনোনিবেশ করায়। যেগুলো আশু করনীয় সেইগুলোতে মনযোগ দিন এবং কর্মব্যস্ততায় সেই করনীয়কে সফলতায় পর্যবসীত করুন। জনআকাঙ্খা পূরণে সচেষ্ট হওয়ার সময় এখনই। তবে অতীত এবং বর্তমান মিলে যে ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে সেই ইতিহাসকে গুরুত্ব দিয়ে সামনে অগ্রসর হউন। কারণ ইতিহাস শুধু সৃষ্টিই হয়। ইতিহাসের পর ইতিহাস সৃষ্টি হবে এটাই নিয়ম। আর এই নিয়মের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে অগ্রসর হওয়ায় সফলকাম মানুষের নির্ভরযোগ্যতা।

পৃথিবীতে কেউ কোন ইতিহাস মুছতে পারেনি এবং পারবেও না বরং ইতিহাস সৃষ্টি করতে সক্ষম। ইতিবাচক এবং নেতিবাচক এই দুই প্রকারের ইতিহাসই সৃষ্টি হচ্ছে এবং চর্চারত অবস্থায় বিরাজমান রয়েছে। কোন কোন ইতিহাস জনআকাঙ্খার ফসল আর সেই জনআকাঙ্খা ইতিহাসের পাতায়ই শুধু লিপিবদ্ধ নয় বরং মানুষের মননে এবং কৃতকর্মের সঙ্গে উৎপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। তাই আমাদের আগামীর প্রচেষ্টা হউক নতুন নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে ইতিহাসকে সম্বৃদ্ধ করা আর সেই ইতিহাসের পাঠ্যসূচীকে পৃথিবীময় শিক্ষার আলোয় চমৎকৃত করা।

বাংলাদেশে ইতিহাস রচিত হয়েছে এবং হবে। এই মাধ্যমেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। তবে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি এবং জনআকাঙ্খাকে গুরুত্ব দিয়ে সেই জনআকাঙ্খার প্রতিফলন পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র’র সর্বময় বিরাজমান রাখাই এখন সময়ের ও যুগের দাবি। কাউকে কোন কিছুই জোড়পূর্বক চাপিয়ে দেয়া যায় না। তবে সাময়িকভাবে যদিও চাপিয়ে দেয়া যায় কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী কর্মকান্ডে এর সফলতার চেয়ে বিমুখতাই বেশী। সেইজন্য প্রত্যাশা এবং চাহিদার অতিরিক্ত কিছু করা নিস্ফল। তা ইতিহাসেই প্রমানিত। বিগত দেশত্যাগকরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টান্তও কিন্তু ঐ একই। তাই আমাদের সাবধান হওয়া জরুরী। যেন ইতিহাসের পূনরাবৃত্তি না ঘটে। সময় এবং স্রোত একাকার হয়ে ইতিহাসের টানে কঠোর প্রতিশোধ পরায়ন না হয় এবং আমরা এর স্বীকারে পরিণত না হয় সেইদিকে দৃষ্টিদেয়া জরুরী। তবে সাহস করে পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। কিন্তু পদক্ষেপ হতে হবে জনআকাঙ্খার। তরিগড়ি করে কোন কিছুই করা মঙ্গলজনক বা দীর্ঘস্থায়ী হয়না। এই সময় ও যুগের চাহিদায় আমাদেরকে এই শিক্ষায়ই দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হাতছানি দিচ্ছে।

বর্তমানে দাবি-দাওয়া পূরনের সময়, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি পূরনের সময়। নতুন যুগের সুচনাতেই যেন খোচট খেতে না হয়ে সেইদিকে মনোযোগ দেয়া জরুরী। দাবী-দাওয়া ও প্রত্যাশা এবং চাহিদা পুরণে বাধা দেয়া এমনকি জোড় জবরদস্তি করা বর্তমান স্রোতের বিপরীত। ছাত্র-জনতা-সৈনিক সংমিশ্রনে সকল বৈষম্যের অবসান কল্পে এখন প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির চাহিদায় নিমজ্জ্বিত জাতি। এই ক্রান্তিলগ্নে ত্রাতা হিসেবে আভির্ভূত হওয়ার উপযুক্ত সময়। তবে সঠিক যোগান ও চাহিদার ন্যায্যতা এবং সার্বজনীনতা অব্যাহত রাখা জরুরী। এই মৌলিক চাহিদায় কোন প্রকার বৈষম্য বা ভেদাভেদ সৃষ্টি করা যাবে না। মানুষ এখন নাকাল অর্থনীতি ও পেটনীতি এমনকি সমাজনীতির বেড়াজালে। তাই এই বৈষম্য ও অপর্যাপ্ততার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সময়ের উর্বর দাবি। এই পুরণে বর্তমানের করনীয়তে সর্বাধীক প্রাধান্য দিয়ে  এগিয়ো যাওয়া উচিত। নতুবা আরেকটি বৈষম্যের মধ্যে বৈষম্যমূলক ঝটিকাঘাত অত্যাশন্য।

স্কুল-কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল বৈষম্য দূরীকরণে মনযোগ দিন এবং শিক্ষায় ফিরিয়ে নিন সকল শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীদের কোন রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহার না করে বরং শিক্ষায় শিক্ষীত হয়ে উপযুক্ত রাষ্ট্র মেরামতের কারিঘর হিসেবে তৈরী করুন। তাদের সামনে অনেক পথ ও সময় এবং তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু পাওয়ার আছে রাষ্ট্রের। বিকশিত হওয়ার পথে কোন বাধার কারণ হবেন না।

দ্রব্যমূল্য এবং কর্মসংস্থানে স্বস্তি ফিরিয়ে আনুন। পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মূল্যবোধ সমুন্নত রাখুন। শ্রদ্ধা ও সম্মান এবং ক্ষমা ও ভালবাসা বজায় রাখতে স্ব স্ব অবস্থান থেকে কাজ করুন। এইক্ষেত্রে সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায় এবং ধর্মীয় শিক্ষাকে প্রাধান্য দিন। যেন মানুষ সৃষ্টির সেরাজীব হিসেবে নিজেদেরকে প্রমান করতে পারে। রাস্তায়, ঘাঠে, মাঠে, হাটে, স্কুল-কলেজে, মসজিদ, মাদ্রাসায় এমনকি সার্বজনীন সম্প্রীতিতে নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা বজায় রাখুন। সকল বৈষম্যের বেড়াজাল ভেঙ্গে আগামীর বাংলাদেশকে নিশ্চিত অভয়ারণ্যে পরিণত করুন।

কথায় আছে যে যায় লঙ্কায় সে ই হয় রাবন। এই কতিথ কথাকে অবাস্তবে এবং অকার্যকরণে পরিণত করুন। পুর্বের ভুলগুলো থেকে শিক্ষানিয়ে আগামীর করনীয় ঠিক করুন। ভেদাভেদ ও হানাহানি ভুলেগিয়ে ক্ষমা ও ভালবাসায় পরিপূর্ণ হয়ে সকলকে নিয়ে একসঙ্গে চলার মনোবৃত্তি কার্যকর করুন। পূর্বের সকলেই এই একটি ভুলই বার বার করেছে যে, সকলকে নিয়ে একসঙ্গে চলতে অনিহা আর বিভাজন সৃষ্টি করা। এই অনিহা এবং বিভাজন থেকে বের হয়ে এসে একসঙ্গে চলার মানুষিকতায় পরিপূর্ণ হয়ে অগ্রসর হউন এবং আরেকটি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করুন। সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। এই আশা ও বিশ্বাস রেখে করনীয় বাস্তবায়ন হওয়ায় বিশ্বাস রেখে খোদা তায়ালা (সৃষ্টিকর্তার) নিকট ফরিয়াদ করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.