প্রশান্তি ডেক্স ॥ সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ নিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সবদিক বিবেচনায় নিয়ে আমাদের মনে হয়েছে— বয়সসীমা ৩২-এর উপরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
গত বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের বিষয়ে অবহিত করতে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ করতে যে যুক্তিগুলো বলা হচ্ছে— যেমন করোনা, আন্দোলন, সেগুলো আসলে অস্থায়ী কারণ। এগুলো স্থায়ী কোনও কারণ না, যার জন্য আমাকে বড় কোনও পরিবর্তনে যেতে হবে। আমরা দেখেছি, যেহেতু বিসিএসের প্রতি অনেকের আগ্রহ থাকে, অনেক দূর বাড়িয়ে দিলে একজনই বারবার এখানে পরীক্ষা দেয়, অন্যদের জন্য সুযোগ সীমিত হয়ে যেতে পারে। এটার কিছু অর্থনৈতিক বিষয়ও আছে। এগুলো হচ্ছে স্থায়ী বিষয়। এগুলো চিন্তা করে বয়স ৩২ রাখাটা সমীচীন।
তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকরিতে অবসরে যাওয়ার বয়সসীমার বিষয়ে আমাদের মধ্যে কোনও আলোচনা হয়নি। এই মুহূর্তে দাবিটা হচ্ছে- চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা বৃদ্ধি নিয়ে।
বিসিএস পরীক্ষা তিনবার দিতে পারবে উল্লেখ করে সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, আগে যারা পরীক্ষা দিয়েছেন- তাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত, সেটি একটা আইনি বিষয়। যখন অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত হবে, তখন এই আইনি বিষয়গুলো স্পষ্ট করা হবে। আজকে খালি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যদি আন্দোলন হয় তখন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত আর পরিবর্তন করা হবে না। আন্দোলন তো হতেই পারে। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আলোচনাও হতে পারে। ৩৫-এর পক্ষে যেমন আন্দোলন আছে, এর বিপক্ষেও আন্দোলন আছে।
বয়সসীমা নিয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, যে কমিশন আমাদেরকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, তারা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেই আমাদেরকে সুপারিশ দিয়েছে। আমাদের কাছে এসেছে, তখন আমরা ইকোনোমিক ইমপ্লিলিকেশন ফর দ্যা গভর্মেন্ট বোঝার চেষ্টা করেছি। এটার বিপক্ষে যারা আন্দোলন করছে, তাদের কথাগুলো বোঝারও চেষ্টা করছি। সবটা বিবেচনা নিয়ে আমাদের মনে হয়েছে, বয়সমীমা ৩২-এর উপরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
বিসিএসসহ অন্যান্য সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে এই উপদেষ্টা আরও বলেন, বিসিএসের মতো (পিএসসির অধীনে) তিনবারের বেশি অংশগ্রহণ করতে পারবে না। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিজস্ব নিয়ম মেনে নিয়োগ দেবে। সিভিল সার্ভিসের বাইরে যত ক্যাডার সার্ভিস আছে সেগুলোর নিয়োগের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর বলে বিবেচিত হয়েছে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে এটার অধ্যাদেশ জারি হবে এবং গেজেট হবে। যাতে তিন-চারদিন সময় লাগতে পারে, তাতে আরও বিস্তারিত থাকবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, প্রেস সচিব শফিকুল আলম প্রমুখ।