সবসময় মানুষ পক্ষে এবং বিপক্ষে এই বিষয়টি নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। প্রত্যেকটি মানুষ তার পক্ষের দিকে সিদ্ধান্ত দিতে তৎপর হন এবং বিপক্ষের দিকে মুখ ফিরিয়ে নেন। আসলেই কি ঠিক করছেন নাকি আরো কিছু সময় নিয়ে ভেবে বিপক্ষের হলেও সিদ্ধান্ত নিয়ে অগ্রসর হবেন তা স্থির করুন। বৃহৎ স্বার্থের জন্য ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করুন এবং সিদ্ধান্ত নিতে সময় নিন অথবা সঠিক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে পক্ষের চেয়ে বিপক্ষের দিকে গুরুত্ব দিয়ে মনোযোগী হয়ে সিদ্ধান্ত নিন।
বর্তমান সময়ে পক্ষের মানুষই বেশী কিন্তু পক্ষের মানুষগুলোকে পক্ষে রাখতে গিয়ে সবসময়ই মুখ থুবড়ে পড়তে হয়েছে বা অনুর্ত্তীর্ণ হতে হচ্ছে। তাই পক্ষে ও বিপক্ষে এই যুক্তি তর্ক ছেড়ে নতুন ফর্মূলা আবিস্কার করা দরকার। পুরাতনগুলো নতুনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে যোগপোযোগী করে তোলাই এখন সময়ের চাহিদা ও যুগের দাবি।
একটি বিষয় স্পষ্ট যে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে পক্ষে বা বিপক্ষে এই বিষয়টি ভাবার সময় নেই বরং সিদ্ধান্তে স্থির থেকে আত্মা ও মননের সঙ্গে যুক্ত থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহন করুন। মনে রাখবেন প্রতিটি কাজই যেন হয় সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়ে। আর সেইদৃষ্টিতে সৃষ্টিকর্তার এই গাইডলাইনটি অনুসরণ করা যেতে পারে। আর তা সম্পূর্ণই আপনার এবং আমার ব্যক্তিগত। সৃষ্টিকর্তাও চাননি এইটি আমাদের উপর চাপিয়ে দিতে। “যা সত্য যা উপযুক্ত যা সৎ যা খাঁটি যা সুন্দর যা সম্মান পাবার যোগ্য, মোটকথা যা ভাল এবং প্রশংসার যোগ্য সেইদিকে তোমরা মন দাও।”
বর্তমানে পক্ষের জন্য সবাই ব্যাকুল। পক্ষ-বিপক্ষ ভুলে গিয়ে সকলেই মিলে এক পক্ষভুক্ত হওয়ার লক্ষ্যে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এই কাজটি সামাল দেয়া যেন বুদ্ধিমান বাধিল পাষাণে ঘর এই উক্তিটিরই সামিল। মনে রাখবেন সকলকে খুশি করার নিমির্ত্তে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না এবং সকলকে নিয়ে ঐক্যমত্যভাবে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। যতটুকু সম্ভব এবং ইতিবাচক এমনকি বহুলাংশে চাহিদা ও যোগানে মিল পাওয়া যায় আর সবচেয়ে বড় মানদন্ড হলো সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়ের শতভাগ পরিপূর্ণতা দেয়া যায় সেই সিদ্ধান্তটিই নিয়ে নিন এবং বাস্তবায়নে দৃঢ়চিত্তে অগ্রসর হউন। সফলতা শতভাগ নিশ্চিত।
আজকে যে আপনার / আমার পক্ষে আছে তা যে কালকে থাকবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। আজকে যে আপনার/আমার বিপক্ষে আছে কালকে যে সে আমার / আপনার পক্ষে আসবেনা তারও কোন নিশ্চয়তা নেই। তাই পক্ষে ও বিপক্ষের কথা ভেবে কোন কাজ করাই উচিত নয়। বরং সবচেয় সঠিক বিষয়টি হলো সৃষ্টিকর্তার পক্ষে কাজ করাই মূখ্য বিষয়। বর্তমানের অন্তবর্তী সরকারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ বিষয়টি হলো কারো পক্ষেই নয় বরং সকলের পক্ষেই কাজ করা উত্তম। সকলকে নিয়েই অগ্রসর হওয়া উত্তম। আর স্থিতিশীল ও দীর্ঘমেয়াদী স্থায়ীত্বের জন্য দরকার সকলের জন্য কাজ করা। অপরদিকে কারোর জন্যই নয় বরং সৃষ্টিকর্তার জন্য কাজ করা জরুরী বা ফরজে আইন হিসেবে বিবেচ্য।
হুটহাট করে পথ চলা ও কথা বলা এবং সেই কথানুযায়ী কাজ করার সময় এখন নয় বরং এখন পরিপক্কতার সময় এমনকি ফসল ঘরে তোলার সময়। এই ফসল সকলের জন্য এবং সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়েরই ফসল। জীবনের প্রতি মায়া এবং চাওয়া-পাওয়ার হিসেবে পরিপক্কতা এবং শেষ জীবনের শতভাগ নিশ্চয়তার বিধানেই এখন কাজ করা উচিত। কোনপ্রকার কার্পন্য বা জাগতিকতার সংমিশ্রণ বর্তমানের অন্তবর্তী সরকারের কোন সুযোগ নেই। প্রত্যেকেই কিন্তু প্রস্তুত স্থায়ী গন্তর্বে গমনের জন্য। আর যারা নতুন এবং তরুন তারাও পুরাতন থেকে শিক্ষা নিয়ে স্থায়ী গন্তর্ব্যের রাস্তা সুপ্রসস্থ্য করবে এই বিশ্বাস আমার আছে এবং থাকবে।
সাধারণ মানুষজনও ঐ একই পদ্ধতিতে অগ্রসর হবে। অনুসরণ ও অনুকরণ করবে। পক্ষপাতিত্বের উর্দ্ধে উঠে আগামীর সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করে পক্ষে-বিপক্ষের দোলনচলের সিদ্ধান্তকে পরিহার করবে। পক্ষে এবং বিপক্ষে আর সিদ্ধান্ত এই তিনটি বিষয় খুবই জটিল এবং অতিব গুরুত্বপূর্ণ। তাই পরিবার, সমাজ, সংস্কৃতি ও রাষ্ট্রযন্ত্রে এর ব্যবহার অত্যাবশ্যকীয় এবং এর গুরুত্বও অপরিসীম। তাই বক্তব্য একটিই আর তা হলো সৃষ্টিকর্তাতেই নির্ভর এবং নির্ভার হয়ে তারই জন্য কাজ অব্যাহত রেখে দিনাতিপাত করা। আমাদের সকলের কল্যাণ হউক এবং সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবাইকে সেই সহি ও নেক হায়াত এবং তৌফিক দান করুন। আমিন\