দেলোয়ার হোসেন ॥ বর্তমানে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে একটি বিলুপ্ত শিল্প তাঁত শিল্প। অল্প কিছুদিনের ব্যবধানে বাংলাদেশে তাঁতের ব্যবহার অনেক কমে গেছে। যেখানে আগে টাংলাইলে অনেক এলাকায় তাঁত বোনা হতো সেখানে বর্তমানে তাঁতির সংখ্যা নেই বললেই চলে। যাও দুই একজন আছে তারা ন্যায্য দামে কাপড় বিক্রি করতে পারে না।
টাংগাইল জেলার অনেক জায়গায় কিছুদিন আগেও তাঁতের খটখটানি আওয়াজ পাওয়া যেত। কালের বিবর্তনে এখন হারিয়ে যেতে বসেছে তাঁত কারিগরদের কর্মব্যস্ততা। ইলেক্ট্রনিক পাওয়ার লুমের কাছে পেরে উঠছে না হ্যান্ড লুম।
টাংগাইল জেলার বল্লা ইউনিয়নের আগে প্রায় হাজার টার বেশি জাপানি হ্যান্ডলুম মেশিন ছিল ক্রমাগত লোকসান খেতে খেতে এখন প্রায় এখন তা নেই বললেই চলে।
তাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে যেকোনো সময়। কারণ সুতাসহ তাঁত শিল্পের সব উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি। লাভ না থাকায় এ পেশায় নতুন করে আসতে চায়না এখন। এ কারণে তাঁত শিল্প বিলুপ্তির পথে। এক সময় শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে সঙ্গে টাংগাইল তাঁত শিল্পের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছিল।
এ শিল্পের উৎপাদিত শাড়ি, লুঙ্গি, গামছাসহ নানা পণ্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি সম্ভব। তবে এ শিল্পে সুতাসহ উপকরণের ক্রমাগত মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় উৎপাদিত পণ্য বাজারে লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে তাঁত শিল্প মালিকদের। এ কারণে জেলার অধিকাংশ তাঁত শিল্প বন্ধের দ্বারপ্রান্তে। উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় অনেক কারখানা মালিক এই শিল্পকে বন্ধ করে বিকল্প কোনো ব্যবসা বেছে নিচ্ছেন।
এখন তাঁতের কাপড়ের বাজারের যে অবস্থা তাঁতে মহাজনরা লোকসান দিয়ে বেচাকেনা করে শ্রমিক মজুরি দেয়। এভাবে কতোদিন লোকসান দেবে মহাজনরা? ঠিক মতো বেচাকেনা না থাকলে আমাদের মজুরি দিতে পারবে না। আর মজুরি না পাইলে শ্রমিকদের ছেলে-মেয়ে নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। বল্লা তাঁত মালিকরা জানান, সুতাসহ উপকরণের মূল্য নির্ধারণ করে এবং স্বল্প সুদে ঋণ দিলে এ শিল্প সচল করা সম্ভব হবে। তাই সরকারের কাছে জোর দাবি- সুতাসহ উৎপাদনের উপকরণের দাম নির্ধারণ করে আমাদের এ ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সহযোগিতা করুন, নতুবা একদিন আমাদের এই শিল্প বিলুপ্ত হয়ে যাবে।