প্রশান্তি ডেক্স ॥ গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৬টা) উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় এ অবরোধ চলছে।
গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় সড়কের উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে চালক ও যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। মালিকপক্ষের প্রতিনিধি, থানা পুলিশ ও শিল্পপুলিশ আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেও মহাসড়ক থেকে সরাতে পারেনি। বেতন না দিলে শ্রমিকরা মহাসড়ক ছাড়বেন না বলে জানান। যান চলাচল স্বাভাবিক করতে চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে শিল্পপুলিশ।
মাহমুদ জিন্স লিমিটেড নামে ওই কারখানার আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, তিন মাসের বকেয়া বেতন, সার্ভিস বেনিফিট পরিশোধের দাবিতে তারা মহাসড়ক অবরোধ করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রায় দুই মাস ধরে বকেয়া পাওনাদি পরিশোধের আশ্বাস দিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে।
শ্রমিকরা আরও জানান, তিন মাসের বেতন বকেয়া থাকায় তাদের বাসা ভাড়া, দোকানের বকেয়া টাকা দিতে পারছেন না। টাকা না দেওয়ায় এখন আর বাকিতে সওদা দিতে চায় না দোকানদার। ছেলেমেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন ও ফি না দিতে পারায় অনেকের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া সন্তানরা বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। এ জন্য ওই শিক্ষার্থীদের একটি বছর পিছিয়ে যেতে হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার কারখানা কর্তৃপক্ষ সব বকেয়া পাওনা পরিশোধ করার কথা দিয়েছিল। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনামতো শ্রমিকরা বিভিন্ন কারখানায় চাকরি নিয়ে নেয়। বেতন দেওয়ার তারিখ থাকায় শ্রমিকরা তাদের নতুন প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটি নিয়ে সকালে কারখানায় আসেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ টাকার ব্যবস্থা করতে না পারেনি এ জন্য তাদের বকেয়া বেতন দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। পরে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২-এর পরিদর্শক আজাদ রহমান বলেন, ‘সকাল থেকে মাহমুদ জিন্স কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে সড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।’
নাওজোর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিন বলেন, ‘মাহমুদ জিন্স লিমিটেড পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে রাখায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ এ ব্যাপারে জানতে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে কাউকে পাওয়া যায়নি।