প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ যুক্তরাজ্যের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল টনি রাডাকিন সতর্ক করেছেন যে বিশ্ব বর্তমানে ‘তৃতীয় পারমাণবিক যুগের’ দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে। গত বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটে দেওয়া এক বক্তৃতায় রাডাকিন বলেন, গত তিন দশক ধরে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান যুগ বেশি জটিল। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিরক্ষা কর্মীদের এই প্রধান আরও বলেছেন, আমরা তৃতীয় পারমাণবিক যুগের সূচনালগ্নে রয়েছি। আর এটি বহুমুখী ও সমসাময়িক সমস্যা।
এই যুগকে বহুমুখী ও সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ এবং সেইসব নিরাপত্তা ব্যবস্থা যা পূর্ববর্তী হুমকিগুলোকে প্রতিরোধ করেছিল, সেগুলোর দুর্বলতা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যকে অবশ্যই তার সম্মুখীন হুমকিগুলোর গুরুত্ব স্বীকার করতে হবে।যদিও রাশিয়া থেকে সরাসরি পারমাণবিক হামলার সম্ভাবনা বা ন্যাটো মিত্রদের ওপর আক্রমণের সম্ভাবনা খুবই কম।
পশ্চিমা দেশগুলো যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনে ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়ে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি, পারমাণবিক মজুদ বৃদ্ধির জন্য চীনের পদক্ষেপ, ইরানের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার সঙ্গে সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হওয়া এবং উত্তর কোরিয়ার অপ্রত্যাশিত আচরণ।
এর পাশাপাশি রয়েছে সাইবার হামলা, ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড এবং পশ্চিমা দেশগুলোকে অস্থিতিশীল করার জন্য চালানো অপপ্রচার।
রাডাকিন বলেন, উত্তর কোরিয়ার সেনাদের রুশ বাহিনীর সঙ্গে ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েন করা ছিল বছরের সবচেয়ে বিরল ঘটনা। তিনি সতর্ক করে বলেন, ভবিষ্যতে এমন আরও মোতায়েনের সম্ভাবনা রয়েছে।
রাডাকিন তার বক্তৃতায় ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর ধারাবাহিক সংস্কারের পক্ষে বক্তব্য দেন, যাতে পরিবর্তিত আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্য সাড়া দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্যের পারমাণবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা বজায় রাখা।
যুক্তরাজ্য সবসময় সমুদ্রে একটি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র সজ্জিত সাবমেরিন রাখে, যাতে পারমাণবিক হামলার ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া জানানো যায়।
বর্তমানে যুক্তরাজ্য সরকার একটি কৌশলগত প্রতিরক্ষা পর্যালোচনা পরিচালনা করছে, যার মাধ্যমে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে কীভাবে পরিচালিত ও সজ্জিত করা উচিত তা নির্ধারণ করা হবে।