ক্ষমতায় বসার আগেই বিশ্ব অর্থনীতিতে ট্রাম্পের প্রভাব শুরু

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স ॥ যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন শপথ নেওয়ার আগেই বিশ্ব অর্থনীতিতে এর প্রভাব শুরু হয়েছে। গত বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রত্যাশা অনুযায়ী সুদের হার কমিয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ। কানাডায় শুল্ক বাজেট নিয়ে পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির ওপর নজরদারি বেড়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

অবশ্য এই সপ্তাহেই মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কাটছাঁট করার ইঙ্গিত দিয়েছিল। বছরের শেষ দিকে ওটাওয়া, ফ্রাঙ্কফুর্ট, টোকিও এবং লন্ডনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈঠকগুলোতে ট্রাম্পের হোয়াইট হাউজে প্রবেশের আগে উচ্চতর অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত দিয়েছে।

ব্যাংকের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল জানিয়েছেন, ব্যাংকের কিছু সদস্য ট্রাম্পের পরিকল্পিত শুল্কনীতি, কর হ্রাস এবং অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ নীতির অর্থনৈতিক প্রভাব মূল্যায়ন করার চেষ্টা করছেন।

পাওয়েল বারবার অতিরিক্ত সুদের হার কমানোর বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। এর ফলে শেয়ারবাজারে পতন ঘটে এবং ভবিষ্যতের সুদের হার কমানোর পূর্বানুমানের পুনর্বিন্যাস ঘটে। এখন ২০২৫ সালের জন্য মাত্র একটি ফেড সুদের হার কমানোর পূর্বাভাস রয়েছে।

ইউরোপ ও এশিয়ার পরিস্থিতি : প্রত্যাশিতভাবে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড (বিওই) গত বৃহস্পতিবার তাদের প্রধান সুদের হার ৪.৭৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রেখেছে এবং জানিয়েছে যে তারা ধীরে ধীরে হার কমানোর বিদ্যমান পদ্ধতিতে অবিচল থাকবে।

এশিয়ায় জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (বিওজে)  ট্রাম্পের নীতির হুমকির কারণে রপ্তানি-নির্ভর অর্থনীতিতে ছায়া পড়ার আশঙ্কায় অতি-নিম্ন সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছে। বিওজে তাদের সিদ্ধান্ত ঘোষণার বিবৃতিতে বলেছে, জাপানের অর্থনীতি ও মূল্যস্ফীতিকে ঘিরে অনিশ্চয়তা উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।

রয়টার্সের এক জরিপে দেখা গেছে, জাপানি ব্যবসায়ীর প্রায় তিন-চতুর্থাংশই মনে করেন যে ট্রাম্প তাদের ব্যবসার পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবেন।

গত সপ্তাহে ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইসিবি) এবং কানাডার ব্যাংক সুদের হার কমিয়েছে এবং উভয়েরই ধারণা ২০২৫ সালে কিছু অতিরিক্ত ছাড় দেওয়া হবে, কারণ অর্থনৈতিক আউটলুক দুর্বল হয়ে পড়ছে।

প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে মার্কিন শুল্ক নিয়ে সম্ভাব্য ঝুঁকি কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা নিয়ে মতবিরোধের পর পদত্যাগ করেছেন কানাডার অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড।

গত মাসে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন যে কানাডা ও মেক্সিকো যদি অভিবাসী এবং ফেন্টানিলের প্রবাহ যুক্তরাষ্ট্রে সীমিত না করে, তাহলে যদি প্রতিবেশী এই দুই দেশ  থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। 

ট্রুডোকে লেখা এক চিঠিতে ফ্রিল্যান্ড লিখেছেন, এর অর্থ আজ আমাদের আর্থিক রিজার্ভ সঞ্চয় করে রাখা উচিত, যাতে শুল্কযুদ্ধের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সংস্থান পেতে পারি।

এদিকে ক্রিপ্টো সম্পর্কিত সম্পদগুলিতে ব্যাপক পতন ঘটেছে। এর মধ্যে বিটকয়েনের ৫ শতাংশ মূল্যহ্রাস ঘটেছে যা তিন মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.