অনিশ্চয়তা ক্রমশ উর্দ্ধগতিতে এগুচ্ছে…

জাতি এক কঠিক অনিশ্চয়তায় খাবুডুবু খাচ্ছে। পর্দার অন্তরালে কি ঘটছে তা যদিও প্রকাশ্য নহে তবে আন্দাজ করা যাচ্ছে যে অবস্থা বেগতিক। কোনক্রমেই অবস্থার উন্নতি সাধন করা যাচ্ছে না। সচল থেকে অচল হয়েছে এবং এই অচলায়তন থেকে আর উতরানো যাচ্ছে না। কেন এবং কিভাবে এই অবস্থা হয়েছে তা সবাই জানে কিন্তু কি কারণে উন্নতি হচ্ছে না তা কেউই জানে না বা জানতে চেষ্টাও করেনা।

প্রসাশন যন্ত্র ঠিকভাবে কাজ করছে না এমনকি করানোর শত চেষ্টাও কাজে লাগছে না। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার শত চেষ্টা করেও উন্নতি সাধনের চেষ্টাকে গতিশীল এবং কার্যকরী করতে পারছে না। সেনাবাহিনী দিয়ে রাষ্ট্র বেশীদিন চালানো যায়না তবে সেনাবাহিনীকে পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা দিয়ে তাদের মাধ্যমে রাষ্ট্র চালালে হয়তো বর্তমানের চেয়ে আরেকটু ভাল হতো বলে অবস্থা দৃষ্টে মনে হয়। যদিও অঘোষিতভাবে সেনাবাহিনীই রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। দিন দিন সেনাবাহিনীর প্রতিও মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়েছে এবং ভয় বিদুরীত হয়েছে। যা ভবিষ্যতের জন্য হুমকিস্বরূপ। দেশের শেষ আশ্রয়ের জায়গাটুকু প্রায় বিনষ্টের পথে।

সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে কাজের গতি এখন খরগোস ও কচ্ছপের গল্পের মত এগুচ্ছে তবে এইভাবে দেশ চলতে পারে না। যদিও চলমান উদ্ভুদ পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করে ইতিবাচক কল্যাণের তরে সামগ্রিক বৈষম্যহীনভাবে এগিয়ে যাওয়াই কাম্য। আর এই কাম্যে দরকার নাগরিক ঐক্য এবং সংঘবদ্ধ ইতিবাচক পথচলা। কাউকে বাদ দিয়ে নয় বরং সকলকে একসঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই এখন একমাত্র অবলম্বন।

তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সবাই যার যার ফায়দা বা লাভ হাসিলে মত্ত্ব। রাষ্ট্র এবং সরকার ও উন্নয়ন এবং অগ্রগতিকে নয় বরং মুখে মধু অন্তরে বিষ নিয়ে এগুচ্ছে। এই খেলায় দেশের জনগণ এখন বেতাল অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। এইভাবে কিন্তু চলতে দেয়া যায় না। যদি এইভাবে চলমান থাকে তাহলে ৫ আগষ্টের পুনরাবৃত্ত্বি ঘটতে বেশী সময় লাগবে না। বর্তমানের সরকারকে দেশের কেউ কার্যত সহযোগীতা করছে না বরং মুখে সবাই বলে সহযোগীতা করছে। এই অবস্থার উন্নতিকল্পে চলমান সরকারকে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

অপরাধি, চক্রান্তকারী এবং দু’মুখে সাপের দলদেরকে মুখোশ টেনে খুলে উপযুক্ত শাস্তি ও বিচারের আওতায় এনে জনমনে স্বস্তি দিতে হবে। যারা যারা বর্তমানে অবৈধ ও অনায্য ক্রিয়াকলাপে জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। বর্তমান সরকারের কঠোর ভুমিকাই পারে বর্তমানের অরাজক নৈরাজ্য থেকে মুক্তি দিতে। নমনিয়তা এবং মৌলিক অধিকার রক্ষায় নেয়া পদক্ষেপ কখনো কখনো কঠোরতার মাধ্যমে দমন করে বৃহত্তর কল্যাণ সাধন করতে হয়। আর এই লক্ষ্যে সরকারকে আশু পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার ফিরিয়ে দেয়া জরুরী। বর্তমানে যেভাবে সাংবাদিকদের অগ্রযাত্রায় একটি আদেশ বাধাস্বরুপ কাজ করছে তা প্রত্যাহার করা জরুরী। সাংবাদিকরাই এই সরকারের ভীত মজবুত করতে এমনকি কার্যকরিভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় অগ্রাধীকারের ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে অনুঘঠক হিসেবে কাজ করছে এবং করবে। কিছু সাংবাদিক প্রবেশাধিকারও একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন হিয়ে কাজ করছে। এই বৈশম্য থেকে অতিদ্রুত বের হয়ে আসা জরুরী।

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় সঠিক কথা বলায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা ও জেল এবং রিমান্ড সহ্য করে আজকের সরকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়েছে। কিন্তু এই মহান জনতাকে এখন একটি আদেশ দ্বারা পথরূদ্ধ করে কলঙ্কের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমি বিনীত অনুরোধ করছি অতি দ্রুত এই আদেশ প্রত্যাহার করুন এবং যারা আপনাদের ছায়া হিসেবে সহকারীর বা অনুঘঠকের ভুমিকায় অবতীর্ণ তাদেরকে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে সম্মানিত করুন নতুবা সকল প্রকাশনা বন্ধ করুন।

বর্তমানেও পাসবিহিন প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে এমনকি বিভিন্ন নাম ও পরিচয়ে বিনা পাশে সচিবালয়ে প্রবেশ করে যাচ্ছে যা অব্যাহতভাবে সরকারের আইনের বিপরিত। কথায় আছে একচোখে তেল আর একচোখে ঘী এর সামিল। কিন্তু পরিচয় নিয়েও সাংবাদিকরা প্রবেশ করতে পারছে না। বরং সরকারের আইনকে সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে যাচ্ছে। তাই এই সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনকে অব্যাহত রাখতে দ্রুতই প্রবেশাধিকার উন্মুক্ত করুন।

বাজার ব্যবস্থাকে টেনে তুলুন। কোন দল ও মতের প্রয়োজনীয়তা নেই বরং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের গর্তথেকে বের করে আইনের কঠোরতায় দমন করুন। অবরোধ বা রাস্তা ব্লকেড দিয়ে জন ভোগান্তি সৃষ্টিকারীদের নিষ্ক্রিয় করতে যা যা করনীয় তাই করুন। জনগণের যান-মাল এবং রাষ্ট্রের সম্পদ রক্ষা করা সরকারের অগ্রাধীকারের প্রাধান্যে। তাই নির্ধারিত দিন শুক্র ও শনিবারকে অবরোধ এবং ব্লকেড হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়ে বাকি দিনগুলো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রেখে নির্বাহি আদেশ জারি করুন। ৫ কর্মদিবসে কোন আন্দোলন বা ব্লকেড চলবে না এমনকি যারা করার জন্য প্রচেষ্টা চালাবে তাদেরকে কঠোর শাস্তির অধিনে নিয়ে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

উপদেষ্টা এবং প্রসাশন ও প্রশাসক একত্রিত হয়ে করনীয় ঠিক করে দ্রুত বাস্তবায়ন করুন। করনীয় হবে যুগোপযোগী এবং বাস্তমুখী। যা স্বল্পসময়েই ফলাফল দৃশ্যমান হবে। স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন করুন এবং এর বাস্তবায়নে বিদ্যুৎ গতিতে এগিয়ে যান। এখন আর পিছপা হবার সময় নয় বরং সামনে দ্রুতলয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময়। তাই এই সময়ের আর ক্ষেপন নয় বরং উপযুক্ত ব্যবহারই এই নৈরাজ্যের অবসানে কার্যকরী হবে। প্রয়োজনে আমাদের সঙ্গে বসুন এবং পরিকল্পনা বলুন আর প্রতিবন্ধকতাও বলুন। আমরাও আমাদের সহযোগীতা এবং মতামত আর এগিয়ে যাওয়ার মূলমত্র উন্মোচিত করে এগিয়ে নিতে যা যা করণীয় তাই করব। আগামীতে আরো বিশদ লিখার আশায় আজকের সম্পাদকীয়’র এখনেই সীমারেখা টানলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published.