সম্পাদক ও সম্পাদকীয়

সম্পাদক ও সম্পাদকীয় এখন বিষফোরে পরিণত হতে যাচ্ছে। কারণ সম্পাদক সম্পাদকীয়তে চলমান অসামঞ্জস্যতা এবং অন্যায়ের বিপক্ষে কথা বলেন ও তুলে ধরেন কঠিন ও রূঢ় বাস্তবতা আর পাশাপাশি সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনাও দিয়ে থাকেন। চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানো এবং কাঁধে কাঁধ রেখে পথ চলতে উৎসাহিত করেন। তবে এইসকল কর্মকান্ডের বাইরেও কিছু করেন যা সম্পাদক তার সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দ্বায়বন্ধতা থেকে করেন। অপরদিকে স্ব স্ব ধর্মের শিক্ষার আলোকে ব্যক্তিগত চর্চার দ্বারা করে থাকেন।

এইসকল দেখে শুনে ও বুঝে সরকার এবং রাষ্ট্রের দায়িত্বে দায়িত্বরতরা কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে সম্পাদক ও সম্পাদকীয়তে এই অপ্রীয় কাজগুলো অনুপস্থিত। তবে যা থাকছে তা কিন্তু জুমার খুৎবা ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে জুমার খুৎবার পরেও শিক্ষা থাকে এমনকি দিকনির্দেশনা থাকে। কিন্তু সম্পাদকীয়তে তা আর থাকছে না। এর কারণ কি আমার জানা নেই তা বলা যাবে না তবে প্রকাশ্যে আনার সাহস থাকলেও সামর্থ নেই। কারণ হলো বিগত সরকারের সময় আমাকে খেসারত দিতে হয়েছে (যেমন কারাগার, কোর্ট এবং এখনও মামলা চলমান)। তবে এই সরকার সেইরকম না হলেও অপ্রীয় কথা সহ্যকরার সহ্যগুণ তৈরীতে চর্চারত। তাই সকল সম্পাদকবৃন্ধের প্রতি সনিবন্দ নিবেদন এই যে, আপনারা আয়নায় সকল কিছুর প্রতিচ্ছবি দেখুন এবং এর ভাবার্থ ও করনীয় ঠিক করে কলমের মাধ্যমে জানান দিন। এতে যদি জেল জুলুমও হয় তা হতে দিন। কারণ সম্পাদক ও সম্পাদকীয় কিন্তু কারো বিরোধীতা নয় বরং সংশোধন ও সঠিক গন্তব্যে পৌঁছাতে সহায়ক মাত্র।

তারুন্যের জয়গান গাওয়া উচিত কারন তরুনাই পেরেছে, পেরেছিল এবং পারবে। আর বর্তমানে তরুনরাই করেও দেখিয়েছে। কিন্তু এই তরুনদেরকে নিয়েই না কত কল্পকাহিনী। তবে তরুনদেরকে গাইড করে সংকল্পে স্থির রেখে এগিয়ে নেওয়াই বাকী সকলের কাজ। তারুন্য ভরপুর যৌবনপ্রাপ্তদের এখন এগিয়ে নিন সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে। ধীক্কার নয় এমনকি সমালোচনা ও নেতিবাচকতা দিয়েও নয় বরং ইতিবাচকতা দিয়ে সেই বাক্যটি ব্যবহার করে (শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে) এগিয়ে নিয়ে যান বর্তমান ও ভবিষ্যতের কল্যাণে।

ছাত্রদের ত্যাগ ও পরিকল্পনার ফসল ছিল ৫ আগষ্টের ইতিহাস। আর সেই ইতিহাসকে এগিয়ে নিতে এখন সকলের প্রয়োজন। কারণ ইতিহাস কখনো পিছনে যায়নি বরং ইতিহাস সামনে এগিয়ে যায়। ইতিহাস কাউকেই ক্ষমা করেনি এবং করবেও না। তাই ইতিহাসের করুন শিক্ষাকে কাজে লাগানোর এখনই সময়। পরিবর্তন ও সংস্কার দরকার আর তা দরকার জাতির কল্যাণে ও রাষ্ট্রের প্রয়োজনে। সবকিছুকেই যুগোপযোগী করে তোলাই আমাদের সকলের দায়িত্ব। তাই সকলে মিলে এই দায়িত্বটুকু সম্পন্ন করুন। কাউকে বাদ দিয়ে নয় এবং কাউকে গুরুত্ব দিয়েও নয়। বরং এই কাজটুকু সম্পন্ন করুন সার্বজনীন ইতিবাচক কল্যাণের তরে সকল ঐক্যবদ্ধ করে ঐক্যের মেলবন্দনে।

আমাদের কথা কেউ শুনে না এমনকি মনেও রাখেনা আর প্রয়োজনে সমাধর কিন্তু প্রয়োজন ফুরালো জেল, ধিক্কার ও নির্যাতন। তবে বিগত সরকারগুলো যতদিন সম্পাদকীয়তে মনযোগ দিতেন ততদিনই নিরাপদে ক্ষমতা বা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব নিশ্চিন্তে সম্পাদন করতে পেরেছেন। এটা হলো ইতিহাসের স্বাক্ষী। আর যখনই সম্পাদকীয়কে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যে পরিণত করেছেন এবং সম্পাদক ও সম্পাদকের সৃজনশীলতার বিরুদ্দে বিভিন্ন নেতিবাচক ব্যবস্থা নিয়েছেন। সেই থেকেই দায়িত্ব নড়বড়ে হয়ে চুড়ান্তভাবে করুন পরিণতির দিকে এগুচ্ছে এবং শেষমেষ লজ্জাস্কর বিদায়ে বিতারিত হয়েছেন। তাই ইতিহাস এই শিক্ষা দেয় যে অতিতকে না ভুলে ইতিহাসকে ধারণ ও লালন করে সম্পাদকীয়তে মনযোগী হয়ে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব সুসম্পন্ন করুন।

তেলের মাথায় তেল দেয়ার যে চিরাচরিত স্বভাব বিরাজমান রয়েছে তার বিতারিত করুন। গুটিকতেক সম্পাদক নিয়েই কার্য সম্পাদন করবেন তা কিন্তু নয় বরং সকল দৈনিক ও সাপ্তাহিক এবং পাক্ষিক আর মাসিক পত্রিকাগুলোর সম্পাদকদের একত্রিত করুন এবং সবার মতামত শুনুন এবং সবাইকে নিয়েই কার্য সম্পাদক করুন। এদের কাউকে বাদ দিয়ে নয় বরং যুক্ত করেই কার্য সম্পাদক করুন। সফলতা শতভাগ নিশ্চিত। বর্তমানে প্রতি আহবান; আপনারা যেহেতু সকল বৈষম্য বিতাড়িতকরণের নিমিত্তে নিয়োজিত তাই ঐসকল কাজটুকুও (দৃষ্টিকটু আর চলমান বৈষম্য) করুন।

বিভিন্ন দিবসের ক্রোড়পত্র, বাণি এবং বিজ্ঞাপন দেয়ার ক্ষেত্রে শুধু জাতিয় দৈনিক পত্রিকাকে গুরুত্বারূপ করা বন্ধ করুন। সকল পত্রিকাকেই গুরুত্বারূপ করুন এবং ঐসকল ক্রোড়পত্র, বাণি এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে সহযোগীতা করুন। একচোখে তেল আর একচোখে ঘী দেখা বন্ধ করুন। সকল পত্রিকাগুলো সচল রাখতে কার্যকর ভুমিকা পালন করুন। সরকারের সহযোগী হিসেবে সম্পাদকদের অনুঘটকের ভুমিকা পালনে সহযোগীতা অব্যাহত রাখুন। কোন ক্রমেই বিগত সরকারের ন্যায় আচরণ করবেন না বরং নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন এবং মিডিয়াকে ব্যবহারে পারদর্শী হউন। সকলের কল্যাণ ও সাম্য এবং ভ্রাতৃত্বের বন্ধন মজবুত করনের তরে খোদায়ী মোনাজাত অব্যাহত। সকলের সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ূ ও নিরাপত্তা আর নিশ্চয়তা শতভাগ সুনিশ্চিত হউক এই কামনাই করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.